somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

:( সব ব্যাপারে যদি হাইকোর্টের নির্দেশনা লাগে তবে কি মানুষের বিবেকের প্রতি কোনই দায়বদ্ধতা নেই??/:)/:)

১২ ই জুলাই, ২০১০ রাত ৮:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি জাতীয় দৈনিকের প্রধান শিরোনাম এ দেখতে পেলাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতার স্মৃতি সংরক্ষনে বিভিন্ন স্থানে মনুমেন্ট নির্মানের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এদশের শাসক-পরিচালক নামধারীদের ক্ষেত্রে 'বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদে' বলে ইদানিং সব ব্যাপারে হাইকোর্টের রুল নেয়াটা কেন জানি মনে হয় একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে? মানুষের বিবেক বোধ এতটাই নিম্ন শ্রেনীতে চলে গিয়েছে, ন্যায়নীতি-ইনসাফ বোধের চেতনা এতটাই দৈন্যতায় ভুগছে, দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তি হতে শুরু করে সাধারন একজন মানুষ, শাসক শ্রেনী হতে জনগণ পর্যন্ত আজ এতটাই রোগাক্রান্ত যে নীতিকে বাস্তবায়ন করতে গিয়েও আজ সব ব্যাপারে হাইকোর্টকে অযাচিতভাবে নানা ধরনের নির্দেশনা দিয়ে করণীয় নির্ধারন করে দিতে হচ্ছে।
যেখানে সাধারন নীতিবোধই স্বাভাবিকভাবে তার করনীয় নির্ধারন করে দেয়, সেখানে যখন হাইকোর্ট নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত কাজ হয়না, তখন এ লজ্জার দায়ভার সত্যিই কি জাতি হিসাবে আমাদের সবার নয়?[/sb]

কিছু নমুনা দেখলেই বিষয়গুলো আরও পরিস্ফুট হবে.................

১.বিচারপতি মো. হামিদুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০০৩ সালে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড রোধে আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার লিভ টু আপিল করে। তবে আপিল বিভাগ এমন শর্তে লিভ মঞ্জুর করেন, যাতে ওই নির্দেশনাগুলো সচল থাকে। গত মাসেও হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ পুলিশকে ২০০৩ সালের নির্দেশনা মেনে চলতে বলেছেন।

২. ১৪ মে যৌন হয়রানি রোধে কয়েকটি দিকনির্দেশনা উল্লেখ করে একটি নীতিমালা করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংসদে আইন পাস না হওয়া পর্যন্ত এটি মেনে চলা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেছিলেন।

৩. বিচারপতি তারিক-উল-হাকিমের নেতৃত্বে দ্বৈত বেঞ্চ মাহমুদুর রহমানের রিমান্ড বাতিল আবেদনের শুনানি শেষে এ নির্দেশনা দেন যে আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আইনজীবীর উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। তাকে কোনো নির্যাতন করা যাবে না।

৪. অবিলম্বে অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণ শুরু করতে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন 'হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ' (এইচআরপিবি) আবেদনে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন ও বিচারপতি মো. দেলোয়ার হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণে সহযোগিতা করার জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ও ঢাকার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

৫.অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ হবে, নদী খেকোদের সরকার নিজ দায়িত্বে রাষ্ট্রীয়ভাবেই উচ্ছেদ করবে, এটাই তো স্বাভাবিক। সেটার জন্যও নির্দেশনা দিতে হয়েছে হাইকোর্টকে।

হায় সেলুকাস! মনে হয় কোর্টের নির্দেশনার আগে আমাদের রাস্ট্র পরিচালকরা জানতেনই যে অবৈধ দখল করা যাবেনা, শিক্ষক ছাত্রীকে যৌন হয়রানী করতে পারবেন না, রিমান্ডে নিয়ে কাউকে নির্যাতন করা যাবেনা, যেখানে সেখানে অবৈধ বিলবোর্ড লাগানো যাবেনা। তানাহলে এসব ব্যাপারে হাইকোর্টকে পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হবে কেন? তাহলে এদেশে সরকারের কাজটি কি? যারা বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন, তাদেরকে কেন জনগণের পয়সায় লালন পালন করা হবে?

বাস্তবতা হচ্ছে, হাইকোর্ট কর্তৃক চোখে অঙ্গুলী নির্দেশ করে নির্দেশনা দেবার পরও মানা হচ্ছেনা। সত্যি যদি আমরা সচেতন হতাম, দেশের জনগণ আর সরকার যদি সত্যি নিজের নূন্যতম দায়িত্বটুকু পালন করত, তাহলে এত ক্ষুদ্র ব্যাপারে নির্দেশনা দেবার কোন প্রয়োজনই ছিলনা। বিবেক সংরক্ষণের দায়ভার শুধূই কি হাইকোর্টের? করনীয় সাধারণ কাজগুলো করার জন্য যেখানে হাইকোর্টের নির্দেশনার অপেক্ষা করে করে আমরা নিজেদের অভ্যস্ত করে তুলছি, সেখানে আমার আশঙ্কা হয়, কবে থেকে না জানি এদেশের মানুষগুলো বিবেক বোধকে পূর্ণ জলাঞ্জলি দিয়ে ব্যক্তিগত, সামাজিক, পারিবারিক, ব্যবসায়িক, অফিসিয়াল সব ব্যাপারেই কোর্টের নির্দেশনার জন্য বসে থাকে?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১০ রাত ৮:১৮
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×