somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

B:-) B:-) B:-) তবে কি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র হতে যাচ্ছে? B:-) B:-)

২৪ শে মার্চ, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আলহাম্দুলিল্লাহ্। আমাদের কৃষিমন্ত্রী মহোদয়া ধর্মের দিকে যেভাবে সুদৃষ্টি প্রদান করেছেন, তাতে অচিরেই বাংলাদেশ পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে—এ বিষয়ে আর সন্দেহের অবকাশ নেই। ওহিপ্রাপ্ত হয়ে কিনা জানি না, তিনি যে ফতোয়া দিয়েছেন তার মধ্যে অন্যান্য দলের নেতা-কর্মীদের সম্পর্কে জারিকৃত অংশ সেসব দলের নেতা-কর্মীরা ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেবেন, না কি বাতুল উক্তি ভেবে কানেই তুলবেন না, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নিঃসন্দেহে তার বাণীকে অবশ্য পালনীয় বলে মনে করবেন। কারণ তিনি কেবল মন্ত্রী নন, আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেত্রীও বটে। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত নিজামীর উম্মত, বিএনপি জিয়ার উম্মত। আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, একমাত্র তারাই মহানবীর (সা.) প্রকৃত উম্মত’ ।

‘উম্মত’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ শিষ্য বা অনুচর হলেও ইসলামে ‘উম্মত’ শব্দের গুরুত্ব কতটা তা অবশ্যই তার মতো ধর্মজ্ঞানী ব্যক্তিত্বের অজানা নয়। আমরা জানি, এ দেশের প্রচুরসংখ্যক অমুসলিম আওয়ামী লীগ করেন। আওয়ামী লীগ সব সময়ই ‘সংখ্যালঘু’ সম্প্রদায়কে তাদের ভোট ব্যাংক হিসেবে মনে করে। সেসব হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান আওয়ামী লীগ করা মানুষেরাও আশা করি তাদের এ গুরুত্বপূর্ণ নেত্রীর বাণীকে বিশেষভাবে মূল্যায়িত করবেন এবং দলে দলে মহানবী (সা.)-এর উম্মতে পরিণত হওয়ার জন্য ইসলাম গ্রহণ করবেন। (এতে ধর্মনিরপেক্ষতার বিন্দু মাত্র কোন ক্ষতি হবেনা)।আবারও বলতে চাই আলহামদুলিল্লাহ্,সঙ্গে সুবহানআল্লাহ।

একটি ঐতিহাসিক সত্য সবারই জানা, তা হলো আমাদের দেশসহ এ উপমহাদেশের মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছেন মূলত দরবেশ, ওলি-আউলিয়া, কামেল পীরদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে। তাদের নৈতিক চরিত্র, উদার মনোভাব, স্রষ্টাপ্রেমের আকুলতা এবং সাম্যের বাণী—এই উপমহাদেশের জাত-পাতভেদে বিভক্ত লাঞ্ছিত মানুষকে টেনে এনেছে ইসলামের ছায়ায়। আমাদের কৃষিমন্ত্রী মহোদয়া যদি সে কাজটি সম্পন্ন করতে পারেন, তবে এদেশের ইসলামের ইতিহাসে তার নাম ও কীর্তি স্বর্ণাক্ষরে লেখা হবে। হয়তো তিনি কামেলিয়াত প্রাপ্ত হয়ে আউলিয়া হিসেবেও গণ্য হতে পারেন আল্লাহর রহমতে এবং ভবিষ্যতে এ দেশের মানুষ তার নামের পাশে (রহমত উল্লাহ আলাইহি) সংক্ষেপে (রহ.) লিখতে পারবেন ইনশআল্লাহ্। সবকিছুই নির্ভর করছে এ দেশের অমুসলিম আওয়ামী লীগ করা মানুষের ওপর।

কৃষিমন্ত্রী মহোদয়া অবশ্য জন্ম থেকে আওয়ামী লীগ করা মানুষ ছিলেন না। তার বক্তব্য অনুযায়ী তিনি যখন ছাত্র ইউনিয়ন করতেন বা ন্যাপ (মোজাফ্ফর) করতেন, তখন মহানবী (সা.)-এর উম্মত ছিলেন না! কারণ মহানবী (সা.)-এর উম্মত হতে গেলে আওয়ামী লীগ করা আবশ্যক। সেই ন্যাপ করা অবস্থায় পল্টনের অফিসে একবার কাদের হামলায় তিনি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন, সে কথা অবশ্য আজ তিনি মনে আনতে চাইবেন না। মনে এলেও প্রকাশ করতে সাহসী হবেন কিনা তাতেও সন্দেহ আছে।

আমাদের রাজনীতিতে মেঠো বক্তৃতার রেওয়াজ ক্রমেই প্রবল হয়ে উঠছে। সে জাতীয় সংসদে কথা বলতে গিয়েই হোক, হলরুমের কোনো সভাতেই হোক বা স্বল্পসংখ্যক মানুষের সমাবেশেই হোক—সবখানেই মাইক্রোফোন থাকতেও গলা ফাটিয়ে চেঁচাতেই হবে। আমি মওলানা ভাসানীর মাঠের বিশাল জনসভার বক্তৃতা যেমন শুনেছি, তেমনি বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতাও শুনেছি। বেতারে চাকরি করার সুবাদে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সভা-সেমিনারের বক্তৃতা শোনার ভাগ্যও আমার হয়েছে।
পল্টনে বা রেসকোর্সে তিনি যে স্বরে কথা বলতেন, সভা-সেমিনারে কথা বলতেন তার থেকে একেবারেই ভিন্ন স্বরে, ঘরোয়া ভঙ্গিতে। আর বিশাল জনসভার বক্তৃতাতেও তার কণ্ঠস্বর উদাত্ত হয়ে উঠতো ঠিকই; কিন্তু ভাষা কখনও সংযম হারাত না। এমনকি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সভা-সমাবেশের বক্তৃতায় যথেষ্ট ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ থাকলেও গলা ফাটানোর মতো চিত্কার থাকে না। হলে কী হবে—কথায় আছে না, ‘রবির প্রখর তাপে তত তাপ হয় না/তার তাপে যার তাপ-তার তাপ সয় না!’ বর্তমানে অধিকাংশ নেতা-নেত্রী, হলঘরে বক্তৃতা দেয়ার সময়েও মুখের চেহারা এমন ভয়ঙ্কর করেন, এমনভাবে হাত ছোড়েন-চিত্কারে এমনভাবে গলা ফাটান যে মনে হয় এখনই হানাহানিতে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। ভাষাও স্থূলতার সব পর্যায় অতিক্রম করে যায়। আসলে তারা সামনে উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন না—হয়তো অনুপস্থিত প্রধান নেত্রীকে শোনাতে চান তারা দলের জন্য কত গলা ফাটাচ্ছেন এবং প্রতিপক্ষকে কত গালি দিচ্ছেন। এতে প্রধান নেত্রী খুশি হন কিনা জানি না, তবে উপস্থিত সুধী শ্রোতাদের মনে ওইসব নেতা-নেত্রীর শিক্ষা-দীক্ষা, রুচিবোধ, সংস্কৃতিমনষ্কতা এমনকি সাহচর্যের পরিবেশ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়, আর সাধারণ শ্রোতার রুচিকে নিম্নগামী হতে পথ দেখায়। তাদের হিংস্র মূর্তি সাধারণ অনুসারীদের হিংস্র হতে উন্মাদনা জোগায়, যা মহানবী (সা.)-এর শিক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীত। যিনি ‘অসি’ অপেক্ষা ‘মসি’র শ্রেষ্ঠত্বের কথা ঘোষণা করেছেন, এমন কথাও বলেছেন যে, ‘জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও পবিত্র।’ পরচর্চা বা পরনিন্দাকে যিনি পাপ হিসেবে গণ্য করেছেন, হিংস্রতার উন্মাদনা সৃষ্টি এবং শতমুখে পরনিন্দায় পারদর্শী কি তাঁর উম্মত হতে পারে? উম্মতে মোহাম্মদী (সা.) এর জন্য যা হারাম-সেই হিংসা, মিথ্যাচার ও অপরের গৌরব হরণ আর যাই হোক, কোনো মুসলমানের কাজ হতে পারে না। মানুষের কাজ কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।
মূল লেখক : মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, গীতিকার, নাট্যকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
১২টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×