প্রায় এক বছর ধরে জল্পনা কল্পনা শেষে ভারতবর্ষ ভ্রমণের সুযোগ ঘটল। কিন্তু চারজনের পরিকল্পনার মধ্যে শেষে দুজনে এসে ঠেকলাম। ছুটি ছাটা সবার একসঙ্গে শিকে ছিঁড়ল না। অফিসিয়াল পাসপোর্ট তাই ভিসার ঝক্কি ছিল না কিন্তু ছুটির ঝক্কি অর্থাৎ এন ও সি র ঝক্কি ভিসার ঝক্কির চেয়ে কোন অংশেই কম নয়। শেষ পর্যন্ত ১লা এপ্রিল ছুটির অনুমোদন হাতে এসে পৌঁছল তার আগেই রাসেল ঢুকে পড়েছে, সুতরাং আমি একা। আগের দিনই ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিয়ে রেখেছিলাম ২ তারিখ সকাল আঁটটার মধ্যে পৌঁছে গেলাম দর্শনা চেকপোস্টে, কাগজপত্র দেওয়ার পর ইমিগ্রেশনের পুলিশ মহোদয় পরিচয় জানতে চাইল, শোনার পর বলল আপনার দায়িত্ব হস্তান্তরের কাগজপত্র লাগবে। আমি বললাম আমি তো ওটা নিয়ে আসিনি ওটা কি লাবেই? নাকি ওটা ছাড়াও সম্ভব? উনি ঘাড় কাত করে ফেললেন,বললেন ওটা ছাড়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। কি আর করা! জীবনে যা করি নাই সেটাই করতে হল পুলিশ হেডকোয়ার্টার এ কর্মরত এক দোস্তকে ফোন দিলাম সব নিয়মের মধ্যে চলে এল। বর্ডার ক্রস করে বি এস এফ এর চেকিং শেষে গেদে চেকপোস্ট, এখানে কোন ঝামেলা ছাড়াই কাজকর্ম সম্পন্ন হল। অল্প কিছু টাকা এক্সচেঞ্জ করে নিলাম। রাসেল এর সঙ্গে কথা হল, ওর নির্দেশনা মোতাবেক বেথুয়া নামক একটা যায়গায় দেখা হল। ওখান থেকে ওর এক আত্মীয়ের বাড়ি, সেখানে যেয়ে শুনলাম ওখান থেকে মুর্শিদাবাদ খুব কাছে, যদিও আমাদের ভ্রমণ সুচিতে মুর্শিদাবাদ ছিল না কিন্তু এতো কাছে এসে সুযোগ মিস করতে মন চাইল না, পরের দিন খুব সকালে রওয়ানা দিলাম পলাশীর উদ্দেশে, পলাশি থেকে মুর্শিদাবাদ ট্রেন এ।
গেদে স্টেশন
মুর্শিদাবাদ পৌঁছালাম ১০ টার দিকে, এরপর একটি অটো ঠিক করে নিলাম সারাদিনের জন্য, প্রথমেই গেলাম কাটরা মসজিদ, তারপর একে একে কাঠগোলা বাগান, নশিপুর রাজবাড়ি, মতিঝিল, হাজারদুয়ারি এবং মিরজাফরের বংশধরদের কবরস্থান। ছোট্ট ছিমছাম শহর মুর্শিদাবাদ, প্রতি পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে ইতিহাস
কাটরা মসজিদ
নবাব এবং বিশ্বাসঘাতকদের পাশাপাশি অবস্থান আপনাকে নিশ্চিত ভাবেই আড়াইশ বছর আগে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
হাজারদুয়ারির সামনের মিনার
হাজারদুয়ারি
কাঠগোলা বাগানে মার্বেল পাথরের ভাস্কর্য, পুরো পাথর কেটে ভাস্কর্যটি করা।
ইমামবাড়া, হাজারদুয়ারির ঠিক সামনে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:১১