সেদিন এক হাফেজী হুজুরকে দেখলাম দাবী করছেন যে বাংলাদেশের সব পাঠ্যবই থেকে বিবর্তন বাদ চ্যাপ্টারগুলিকে বাদ দেওয়ার জন্য...উনারা নিজেরা গুহায় এক পা দিয়ে আছেন সাথে করে পুরা জাতিকে নিয়ে যেতে চান...যারা বিবর্তন বাদ পড়াচ্ছেন তারা তো দাবী করছেন না যে ইসলামিয়াত পড়ানো উচিত না!!! দুই পক্ষের ই অপর পক্ষের বিষয় গুলি জানা দরকার....তাতে বিবেক বুদ্ধি কে কাজে লাগিয়ে যার যার মত করে ডিসিসন নিবে সে কি বিবর্তন বাদ বিশ্বাস করবে বা করবে না....প্রবলেম হল যে হুজুর অপর পক্ষের বিষয় টা ভাসা ভাসা ভাবে জেনেই এই বিরদ্ধাচারন করেন.। উনার জানার কথা না কংকাল এর গঠন প্রনালীর সাদৃশ্য, ফসিল এর প্রমান, ডিএনএ, জিন, ক্রমোজম, টেলোমিয়ার, সেন্ট্রোমিয়ার, হোমোলোগাস রোকোম্বিনেশন ইত্যাদি জেনে কিভাবে বিবর্তন এর প্রমান পাওয়া যাচ্ছে।
গত কয়েক দশক ধরেই, হাড়, কংকাল, ফসিল ইত্যাদির সাহায্যে কিভাবে আমরা প্রানী কুল এর মাঝে একে অন্যের সাথে মিল আছে তা কে মোাটামুটি এস্টাবলিশ করা হয়েছে..কিন্তু জিনোম যুগে এসে সেই সব প্রমান এর চেয়ে বড় প্রমান গুলি এখন হাতের কাছেই...
আমরা কি করি, আমার গঠন, আমার চরিত্র, সবই নিয়ন্ত্রিত হয় ডিএনএ দ্বারা..আর ডিএনএ থাকে কোষের নিউক্লিয়াসের মাঝে ক্রমোজমের মাঝে জড়িয়ে থেকে....আমাদের সবার কোষে থাকে ২৩ জোড়া ক্রমোজম (৪৬ টা) ..।২৩টা আসে মায়ের থেকে ২৩টা আসে বাবার থেকে...কিন্তু কেন ২৩ জো্ড়া??? বেশী ও না কম ও না????
আমরা আদিকাল থেকে শুনে আসছি মানুষের খুব কাছের প্রজাতি তিনটি .Chimpanzee, Orangutans, Gorilla...এক সময় এসে মিউটেশনের মাঝে নতুন প্রজাতি সৃস্টি হয়ে তাদের থেকে আলাদা প্রজাতি হয় প্রায় ১০-১৮ মিলিয়ন বছর আগে.... মানুষ যদি তাদের সাথে মিল থাকে তাহলে মিল টা হবে ডিএনএ লেভেলে...।সেখানে মানুষের সাথে তাদের মিল হল ৯৯.৯% এর মত....
আর ক্রমোজম এর সংখ্যা???? আমাদের যেখানে ৪৬টা তাদের সবার ৪৮টা ....তাদের থেকে যদি আমাদের উৎপত্তি হয় তাহলে ক্রমোজম দুটা বেশী কি করে হল... রিয়েল কিকার টা জানা গেল ১৯৮২ সনে উপরের ছবিটা প্রকাশ হওয়ার পর...যেখানে পাশাপাশি মানুষের সাথে বাকী তিন প্রজাতির ক্রমোজমের ছবি কে দেখানোর পর। উপরে ছবিটা দেখাচ্ছে
Side-by-side comparison of the chromosomes of humans, chimpanzees, gorillas, and orangutans (from left to right for each chromosome....মিল দেখতে পারছেন???? দেখবেন যে সবগুলি ক্রমোজম এক রকম অনলি ক্রমোজম নাম্বার দুইটা ডিফারেন্ট...।নিচের ছবিটা ভাল করে দেখুন
এখানে দেখবেন শিম্পান্জীদের ২এ ও ২বি ক্রমোজম দুইটা জোড়া লেগে মানুষের ক্রমোজম নাম্বার ২ তৈরী হয়েছে..তাই আমাদের ক্রমোজম নাম্বার ২৩ জোড়া আর শিম্পান্জীদের ২৪ জোড়া।
জিনোম স্টাডি এর টেকনোলজি উন্নত হওয়ার পর মানুষের এবং শিম্পান্জীদের পুরা জিনোম টা যখন সিকোয়েন্স করা হল, তখন দেখা গেল যে কি অদ্ভুত ভাবে এই থিয়োরী টা সাপোর্ট করে....শিম্পান্জী এর দুইটা ক্রমোজমের শেষ প্রান্ত (টেলোমিয়ার)গুলি (চারটা) ই মানুষের দুই নাম্বার ক্রমোজমে বিদ্যমান..বাকী ২২ জোড়াতে দুইটা করেই টেলোমিয়ার। কিছু 'শিক্ষিত' পাদ্রীরা চেস্টা চালাচ্ছেন বলার জন্য টেলোমিয়ার-টেলোমিয়ার ফিউশন সম্ভব না...কিন্তু নেচার তো দেখালো এটা সম্ভব....উনারা বললেন যে ফিউশনে যায়গায় কোন জিন থাকতে পারবে না কিন্তু মিলিয়ন বছরের উৎপত্তি পর ফিউশনের যায়গা কেন চেন্জ হবে না সেটা উনারা বুঝতে নারাজ..।
যারা এই ব্যাপারে বুঝেন তাদের জন্য নিচের ছবিটাই যথেস্ট এই ফিউশনের প্রমান..না বুঝলে আওয়াজ দিবেন..বুঝানোর চেস্টা করব।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:২৩