নাস্তিক মামাদের একটা চরম একটা দুঃসময় আরম্ভ হইল। বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে ধর্ম অস্বিকার করার একটা বড় খেলায় উনারা শোচনীয় ভাবে পরাজয় বরণ করলেন। হাদিসে বর্নিত ৯০ ফুল লম্বা মানুষের অস্তিত্ব স্কয়ার কিউব ল অনুযায়ী সম্ভব না, এখন থেকে এই যুক্তি দেওয়ার রাস্তা চিরতরে বন্ধ হইল।
ব্যাপারটা কিভাবে ঘটল?
আসেন আমরা কিছু ব্লগীয় ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকাই:
বছর খানেক আগে কাকপাখি কর্তৃক ক্রমাগত বেওকুব আখ্যায়িত হইতে হইতে ব্লগের নাস্তিক মামাদের যখন ত্রাহি মধুসুদন অবস্থা তখন বিশিষ্ট জ্ঞানী নাস্তিক, ব্লগীয় পাতি-নাস্তিকদের বিজ্ঞান বিষয়ক পীর "হোরাস মামা" ঠিক করেন বিরক্তিকর কাকটাকে এইবার বিজ্ঞান দিয়ে প্রতিহত করতে হবে। কাকপাখির ব্লগ অনুসন্ধান করে তিনি দেখতে পান "আদ জাতির বিশাল আকৃতির কিছু কংকালের ছবি"--নামে মহা বেওকুব কাকপাখি একটা পোষ্ট দিছে। [ এই ছবিগুলো সম্ভবত হোয়াক্স ছিল, তবে সবগুলোই হোয়াক্স কিনা, সেই ব্যাপারে আমার এখনো সন্দেহ আছে ] হোরাস মামা তখন মনে মনে হাঁসছিলেন। এইবার বেওকুবটাকে বাটে ফালানো গেছে, "স্কেল ল" দিয়া অতি সহজেই ১৫ ফুট উচ্চতার কাল্পনিক আদ জাতির অস্তিত্ব যে বাস্তবে সম্ভব না তা তাত্বিক ভাবে প্রমান করা তাঁর কাছে একটা ছেলেখেলার ব্যাপার মনে হয় এবং তিনি যে কারনে কাকপাখি২ চালাক (!!?) আর সকল নাস্তিক এবং বেশিরভাগ আস্তিক বেকুব ।), --নামে একখানা চমৎকার বুদ্ধিদীপ্ত পো্স্ট দিয়া অন্যান্য নাস্তৈক মামাদেকে চমৎকৃত করে দেন এবং কাকপাখির প্রতি ওপেন চ্যালেন্জ ছুড়ে দেন। Click This Link
কিন্তু বেয়াড়া কাকপাখি তার পোষ্টে কোন কমেন্ট না করায়, তিনি শেষ পর্যন্ত আর থাকতে না পেরে নিজেই কাকপাখির পোষ্টে গিয়ে লিংক দিয়ে আসেন এবং তার ব্লগে এসে মল্লযুদ্ধের আহব্বান জানান। পরে কাকপাখিকে বাধ্য হয়েই তার সাথে ব্লগযুদ্ধে নামতে হয়। এবং হোরাস মামার সমর্থনে অন্যান্য নাস্তৈক মামারা একযোগে কাকপাখিকে পঁচানো আরম্ভ করেন।
হোরাস মামা এবং কাকপাখির সেই ব্লগযুদ্ধ ১৯ দিন স্থায়ী হয়। [http://www.somewhereinblog.net/blog/Horus/29296199]
ব্লগযুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার আগে নাস্তিক মামাদের যতখানি আত্মবিশ্বাস ছিল, যুদ্ধ চলাকালীন তা অনেকটাই কমে যায়। একটা পর্যায়ে ১৫ ফুট উচ্চতার মানুষের অস্তিত্ব তাত্বিক ভাবে সম্ভব তা মোটামুটি প্রমান হয়ে যায়, এবং হোরাস মামা ব্যাকফুটে চলেযান। ব্লগের অন্যান্য নাস্তিক মামারা হোরাস মামার উপরে যখন প্রায় আস্থা হারিয়ে ফেলবেন অবস্থা, তখন হোরাস মামা তার তুরুপের শেষ তাসটা ছাড়েন, হাদিসে বর্নিত আদম(আঃ) এর ৯০ ফুট উচ্চতা কিভাবে সম্ভব তা জানতে চান।
এই যায়গায় এসে কাকপাখি একটা কনসেপচুয়াল ভূল করে ফেলে এবং পুরো ব্যাপারটা ঠিক মত চিন্তা না করেই একটা উত্তর দিয়ে দেয়। হোরাস মামা সেই হঠাৎ পাওয়া সূযোগের পূর্ন সদ্ব্যাবহার করেন, এবং এক ধরনের কনফিউশনের মধ্য দিয়ে ব্লগ যুদ্ধ শেষ করে দেন।
যদিও কাকপাখি আলোচনা চালিয়ে সবগুলি ইস্যু সমাধানের পক্ষপাতি ছিল, কিন্তু অনুকূল পরিস্থিতির সূযোগে "হোরাস মামা আর আলোচনা চালিয়ে তাঁর মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না" বলে সাফ জানিয়ে দেন এবং পদার্থ বিদ্যার একটা ইংরেজী ফোরামে আলোচনার বাকি অংশ চালানোর জন্য কাকপাখিকে পরামর্শ দেন।
http://www.physicsforums.com:
Click This Link
এই ঘটনার প্রায় বছরখানেক পরে "হলিউডের ৬০ ফুট কিংকং কিংবা সহী বুখারীর ৯০ ফুট লম্বা আদম বাস্তবে সম্ভব নয় কেন?" -- নামে হোরাস মামা আরেকটি পোষ্ট দেন এবং ব্লগীয় নাস্তিক মামাদের বিপুল সমর্থন লাভ করার মধ্য দিয়ে সেলিব্রেটি স্ট্যাটাস উপভোগ করেন।
Click This Link
কিন্তু এইবার হোরাস মামার ভাগ্য আগের মত সুপ্রসন্য ছিল না। ৯০ ফুট উচ্চতার মানুষ আদম (আঃ) এক পা হাটার আগেই হাড়গোর ভেঙ্গে মাটিতে পরে থাকবে বলে হোরাস মামা যেই দাবি করছিলেন, বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সেইটা যে সঠিক না তা কাকপাখি কর্তৃক অকাট্য ভাবে প্রমান করে দেখানো হয়।
একই সাথে থার্মোরেগুলেশনের ব্যাপারে ব্লগার আবদুল্লাহ সাঈদ খান বেস মেটাবলিক রেটের সুত্র দিয়ে প্রমান করে দেখান ৯০ ফুট উচ্চতার মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বিষয়ক হোরাস মামার যুক্তিগুলো অগভীর চিন্তার ফসল এবং যথারীতি ভূল।
প্রিয় পাঠক, আমাদের কল্প-শিক্ষিত নাস্তিক মামারা যে হাতুড়ে ডাক্তারের মত যুক্তি দিয়ে অনেক বাস্তব বিষয়ও আমাদেরকে ভূলভাবে ব্যাখ্যা করেন, সেইটা আজকে হাতে নাতে প্রমান হয়ে গেল এবং সেইসাথে শেষ হয়ে গেল বিখ্যাত নাস্তিক পীর "হোরাস মামার" বর্নাঢ্য ক্যারিয়ার।
হোরাস মামার পতন কিভাবে হল তা বিস্তারিত জানতে নীচের লিংকে দেওয়া উনার পোষ্টের শেষের দিকের কমেন্টগুল খেয়াল করুন:
Click This Link