আমরা যারা গল্প উপন্যাস পড়তে অনেক ভালবাসি, তাদের অনেকেরই বই জমানোর একটা নেশা আছে। নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকতে অনেক ভালো লাগে। অনেকেরই বাসায় বই সাজিয়ে রাখার নির্দিষ্ট বুকশেলফ না থাকলেও বক্স খাটের মাথার কাছে বা পড়ার টেবিলে বই সাজিয়ে রাখার অভ্যাস আছে। অনেকে টিভির ট্রলিতেও বই গুছিয়ে রাখে। অনেকের বাসার দেয়াল জুরে বিশাল আলমারী শুধু বই রাখার।
আমার বাসাতেও নির্দিষ্ট কোন বুকশেলফ নেই যাতে শুধুই গলের বই সাজানো। কিন্তু- টিভির ট্রলির নিচের অংশে রেখেছি কিছু তিন গোয়েন্দা বই।
আমার শোবার ঘরের বক্স খাটের মাথার কাছে রেখেছি একেবারে নতুন কেনা কিছু নতুন ব্লগারদের বই। এই বইগুলো আমি কাউকে হাত দিতে দেই না। শুধু তাদেরই দেই যাদেরকে দেখি ঠিক আমার মত যত্ন করে রাখতে।
আমার পড়ার টেবিলের নিচের তাকে রেখেছি আরো পুরনো বই। আর বুক শেলফ জুরে রয়েছে শুধুই অনার্স মাস্টার্স আর ইন্টারের চকচকে সাইন্সের বইগুলো। না পারছি বিক্রি করতে। সেগুলো এখন আর কাজে লাগে না। ঐ বইগুলোর পড়ার লোক নেই এখন। সবাই বড় হয়ে গেছি। বইগুলোর এত সুন্দর মলাট, কভার পেজ যে কারণে ফেলতেও ইচ্ছে করে না। কাগজওয়ালাকে দিলে ছিড়ে ছিড়ে বিক্রি করবে ভাবতেই কলজেতে চিঁড় ধরা কষ্ট হয়! সুতরাং সব রয়ে গেছে।
ছোটবেলায় আমার একটা বাজে স্বভাব ছিলো। চেনা অচেনা কারো বাসায় গেলেই আমার চোখ পরে যেতো ওদের বাসার গল্পের বইয়ের তাকে। হয়তো ধুলোয় জড়িয়ে আছে, আমি বের করে দিতে বললেও ওদের এলার্জী শুরু হয়ে যাবে। তবু আমি নাছোড়বান্দা। নিজেই একটা ন্যাকড়া খুঁজে নিয়ে বই ঝেড়েঝুড়ে পড়তে বসে যেতাম।
সেই অভ্যেসটা বড় হয়েও অবশ্য যায় নি। তবে, মান সম্মানবোধটা আছে বলেই এখন ওটা অতটা চোখে পরে না।
ইচ্ছে থাকলেও অনেক বাসা থেকে চেয়ে নিয়ে আসা হয় না।
এরপরে শুরু হলো, বছর কয়েক ধরে অনলাইনেই গল্প পড়া। এখন ইচ্ছে করলেই অনেক বই ডাউনলোড করে বিনে পয়সায় পড়ে ফেলা যায়।
কোন গল্প পড়লে একেবারে বইয়ের কাহিনীর ভেতরে ডুবে না গেলে আমি মজা পাই না। খুঁটে খুঁটে পড়তে গিয়ে কাহিনীর সাথে মিশে গিয়ে নাকের জল চোখের জলে একাকার হই।
অন্যের লেখা পড়তে পড়তে এক সময় নিজের মধ্যেও কথাসাহিত্যিক হবার ইচ্ছেটা জেগে উঠে। আমার কাজিন সুজন ভাইয়া খুব সুন্দর গল্প লিখতো। যেকোন কাহিনীই খুব মজা করে লেখার একেকজনের ক্ষমতা থাকে। তারা যা বলে যেভাবে বলে সেভাবেই খুব মজা লাগে। সুজন ভাইয়াও ছিলো আমার কাছে খুব কাছের প্রথম একজন মানুষ যার লেখালেখি দেখে আমার মধ্যে লেখক হবার স্পৃহা গড়ে ওঠে।
এরপরে বাংলা ব্লগে লেখার আগ্রহ জন্মেছিলো ব্লগার লেখক মামুন ভাইয়ের মাধ্যমে।
এই মুহুর্তে সেইসবই পুরানা কথা। এখন বন্ধুমহলে ও পারিবারিক গন্ডিতেও অনেকে জেনেছে আমি একটু আধটু গল্প লিখি। চেষ্টা করি। কিছু গল্প লিটল ম্যাগ-এ প্রকাশিত হয়েছে।
কতটা ভালো লিখি তা সত্যিই জানি না আমি। অন্তত যাদের লেখা পড়ে আমি আবেগাপ্লুত হয়ে যাই তাদের মত কিছু সৃষ্টি করতে এখনো পেরে উঠিনি।
নতুন ব্লগারদের অনেকেই বেশ ভালো লিখে। এই সামহোয়ারইন ব্লগেই অনেকে আছে যাদের লেখার শতভাগ ভক্ত আমি। সবার নাম এই মুহুর্তে মনে পরছে না। যাদের নাম মনে আছে শুধু তাদের কথা বলি- স্বদেশ হাসনাইন, নিরব ০০৯, ত্রিনিত্রি, টিনটিন, সরলতা, সকাল রয়, মেঘ মেঘা, ইহতিশাম আহমদ, মাহী ফ্লোরা, বোহেমিয়ান, রিয়েল ডেমন ...এমনি আরো অনেকে।
হুমায়ূন আহমেদ বা মুহম্মদ জাফর ইকবালের মত লেখক হয়ে উঠা এখনো অনেক দূরে; তার চেয়ে সহজ আমার কাছের ব্লগার-লেখক-বন্ধুদের মত হয়ে উঠা। নবীন লেখ সম্মেলনে গিয়ে নবীন লেখক বন্ধুদের অনেক লেখার কিছু ছাপা বই দেখলাম। হয়তো একদিন সেই দিন আসবে যখন নিজের লেখা গল্পগুলো দিয়েই একক সংকলন আমারো বের হবে। কিন্তু, আমি মনে করে এলেবেলে লেখা দিয়ে 'শুধু পরিচিতি পেতে' নয়। গল্প সংকলন, সেটা ঠিক এখনই নয়। আরো কিছুটা পরে। আরো একটু পোক্ত করে নেই নিজের লেখনী শক্তিটাকে।
এক সিনিয়র সম্মানিত ব্লগার বন্ধুর একটা প্রস্তাব পেয়েছি কয়েকদিন আগে। ওনার কাছ থেকে লেখনীর প্রশংসা সহ পরামর্শ পেয়েছি অনেক। সেই ব্লগার বন্ধু ২০১৩ অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশের জন্য 'আমার গল্পের সংকলন' বের করার পরামর্শ দিয়েছেন। আমি নিজেই জানি না একটা সংকলন বের করার জন্য উপযুক্ত গল্প সত্যি আমার জমেছে কিনা। ভাইয়াকে ধন্যবাদ, আমাকে সম্মানিত করার জন্য। ভাইয়াকে আশ্বাস দিয়েছি আগামী বার (মানে, ২০১৪) ইনশাল্লাহ সেই চেষ্টা করবো। এবার থাক।
তবু মনে হলো, একটু ব্লগবাড়িটাকে ঝেড়ে দেখি, এখানে কয়টা গল্প রয়েছে।
চলুন বন্ধুরা , দেখা যাক কয়টি সার্থক সুন্দর গল্প পাওয়া যায় এখানে।
একেবারে প্রথম দিকের পোস্ট থেকে শুরু করি___
।।এক।। "বিবর্ণ ভালবাসা দিবস!"
।।দুই।। একদিন স্বপ্নের দিন
।।তিন।। ভালো ঘর , ভালো বর!
।।চার।। স্বপ্ন সুদূর
।।পাঁচ।। অজানা ভয়!
।।ছয়।। সত্যগোপন ও সম্পর্কের পরিণতি!
।।সাত।। টেলিপ্যাথি- পর্ব ০১
---- টেলিপ্যাথি- পর্ব ০২
।।আট।। মুখোশ
।।নয়।। রিপু
।।দশ।। ফেসবুক বন্ধুতা ও একটি ভুল
।।এগারো।। সাধু ভাষায় রচিত একটি ধারাবাহিক উপন্যাসঃ
" তরূনীর বিবাহ সমাচার"
পর্ব ০১
পর্ব ০২
পর্ব ০৩
পর্ব ০৪
শেষ পর্বঃ
।।বারো।। প্রজাপতি স্বপ্ন
।।তেরো।। নব-দিগন্ত
।। চৌদ্দ।। তাসনিম ও তার সদিচ্ছা
।।পনেরো।। খাইরুন ও সেফটি
।। ষোল।। আলোর স্বপ্ন-রথ
।।সতেরো।। অচীন অন্বেষা
।।আঠারো।। বোনাস
পাঠক ব্লগার বন্ধুরা, আপনাদের সুচিন্তিত সুন্দর সমালোচনা সহ মন্তব্য পেলে খুশি হবো। আপনাদের সুন্দর পরামর্শে আমার পরবর্তী লেখাটি আরেকটু নিখুঁত হয়ে উঠবে।
সবাই ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।