একজন মুসলিম পুরুষ, হোক সে অবিবাহিত কিংবা এক বা একাধিক নারীর স্বামী, যৌন সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে নিজ ইচ্ছাধীন যে কয়জন খুসি ক্রীতদাসি রাখতে পারেন । একজন দাসির কোন অধিকার নেই প্রভুর নির্দেশ অস্বীকার করার, তার যৌন-ডাক উপেক্ষা করার, যতক্ষন না গুরুতর কোন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে । যদি সে তা করে, তবে প্রভু যেকোন প্রকারে সাঁজা প্রদানের মাধ্যমে তাকে শৃংখলায় আনতে পারবে, আর তা ইসলামি নিয়মে স্বীকৃত । দাসি ব্যাবহার তথা ধর্ষণের বিবিদ নিয়ম, নির্দেশিত আছে ধর্মীয় পোশাকে, পরিবর্তন ঘটেছে সময়ের সাথে সাথে পুরুষের ইচ্ছাধীন । ইসলাম কতৃক ধর্ষিত দাসিকে কখনো বা আখ্যায়িত করা হয় উপপত্নী (concubine) নামে, যাকে বিক্রয় অথবা বর্জন করার ক্ষমতা রাখেন প্রভু ।
ইবনে কাথির আয়াত ৪:২৪ এর ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন,
‘‘ আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমাদের জন্যে সব নারী বৈধ এই শর্তে যে, তোমরা তাদেরকে অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য, ব্যভিচারের জন্য নয়’ – অর্থাৎ তোমরা তোমাদের অর্থ ব্যাবহার করতে পারো সর্বোচ্চ চারজন নারীকে বিবাহের উদ্দেশ্যে এবং যতজন খুসি দাসিকেনার জন্যে, তবে অবশ্যই তা বৈধ পথে । ’’
ইসলামি পন্ডিত ইবনে জাবির আল-তাবারির ভাষ্যমতে,
‘‘ আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তারা যারা তাদের পবিত্রতা বজায় রাখে…(৭০ :২৯-৩০)’ অর্থাৎ নিজেদের যৌনাঙ্গ সংযত রাখে সেসব কাজ থেকে যা আল্লাহ নিষিদ্ধ করেছেন, তবে তারা কোনরূপ অভিযুক্ত হবে না যদি তারা তাদের স্ত্রী এবং অধিকারভুক্ত দাসিদের সাথে যৌন সম্পর্ক রাখে । ’’
নারীদের ক্রীতদাস বানিয়ে ধর্ষনের ব্যাপারে নিচের হাদিসগুলো কী আলো ফেলে দেখা যাক ।
[সুনান আবু দাউদ বই ৩১ হাদিস ৪০০৬]
মুয়াইয়া ইবনে হায়দা বর্ণীত, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর নবী, কাদের থেকে আমাদের যৌনাঙ্গ সংযত রাখতে হবে (অর্থাৎ যৌন সম্পর্ক করা যাবে না), আর কাদের বেলায় আমরা তা ব্যাবহার করবো ?’ তিনি বললেন, ‘তোমরা তোমাদের যৌনাঙ্গ সংযত রাখো তাদের ব্যাতিত যারা তোমাদের স্ত্রী এবং যারা তোমাদের অধিকৃত কিংবা ক্রয়কৃত দাসি ।’
[সহিহ মুসলিম বই ৮ হাদিস ৩৩৮৩]
জাবির বর্ণনা করেছেন যে, এক ব্যাক্তি আল্লাহর নবীর কাছে আসল, এবং বলল, ‘ও আল্লাহর রসুল, আমার কাছে যুদ্ধে পাওয়া একজন বন্দিনী আছে যে আমাদের দাসি, এবং আমি তার সাথে যৌন সংসর্গ করে থাকি । কিন্তু আমি চাইনা সে গর্ভবতী হয়ে পড়ুক ।’ আল্লাহর নবী বললেন, ‘আজল প্রকৃয়া অনুসরণ করো, যদি পছন্দ করো তো । তবে আল্লাহ কতৃক তার (দাসি) জন্যে যা নির্ধারণ হয়ে আছে তা হবেই ।’
একই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যাবে [সুনান আবু দাউদ বই ১১ হাদিস ২১৬৬ এবং সহিহ বুখারি বই ৭৭ হাদিস ৬০০]
[মালিকের মুয়াত্তা হাদিস ২.২৩.৯০]
ইয়াহিয়া—মালিক—নাফি থেকে । মালিককে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘এমন এক ব্যাক্তি যার কয়েকজন স্ত্রী এবং কিছু সংখ্যক দাসি রয়েছে, সে কি গোছলের পুর্বে একসঙ্গে সবার সাথে যৌন সম্পর্ক করতে পারবে ?’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘গোছলের পুর্বে কোন ব্যাক্তি তার অধিকৃত দুই দাসির সঙ্গে যৌনকৃয়ায় অংশ নিলে তাতে দোষের কিছু নেই । কিন্তু যেদিন এক স্ত্রীর সাথে যৌন মিলনের দিন থাকবে সেদিন অন্য স্ত্রীর সাথে সহবাস করা যাবে না । তবে এক ক্রীতদাসির সাথে যৌন মিলন সম্পন্ন করে অন্য এক দাসির সাথে সহবাস আপত্তিকর নয়, যদিও সে ব্যাক্তি যুনুব (সঙ্গমের পর দেহে বীর্য লেগে থাকার অবস্থা) ।’
[মালিকের মুয়াত্তা হাদিস ২৮.১৪.৩৩]
ইয়াহিয়া—মালিক—ইবনে শিহাব—উবায়দুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ—তার পিতা থেকে। উমর ইবনে আল-খাত্তাব কে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘কোন ব্যাক্তির এক ক্রীতদাস মহিলা এবং তার কন্যা রয়েছে । তাহলে ঐ ব্যাক্তি কি পারবে ক্রীতদাসি ও তার কন্যার সাথে পরপর সঙ্গমে লিপ্ত হতে ?’ উমর বললেন, ‘আমি এমনটা করা পছন্দ করি না।’ এরপর তিনি এধরনের কাজ নিষিদ্ধ করে দিলেন ।
[মালিকের মুয়াত্তা হাদিস ২৯.১৭.৫১]
ইয়াহিয়া—মালিক—নাফি থেকে । আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর বললেন, ‘কোন ব্যাক্তি যদি তার ক্রীতদাসকে বিয়ে করার অনুমতি দেয়, তবে তালাকের ক্ষমতা থাকে ক্রীতদাসের হাতে । এ ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারবে না । কোন ব্যাক্তি যদি তার ক্রীতদাসের কন্যা অথবা তার ক্রীতদাসির কন্যা নিজের জন্যে নিয়ে নেয় তবে সে ব্যাপারে কারো কিছু বলার নেই।’
[মালিকের মুয়াত্তা হাদিস ২৯.৩২.৯৯]
ইয়াহিয়া—মালিক—দামরা ইবনে সাইদ আল মাজনি—আল হাজ্জাজ ইবনে আমর ইবনে গাজিয়া থেকে: উনি (আল হাজ্জাজ) জায়েদ ইবনে তাবিতের সঙ্গে বসে ছিলেন, যখন ইয়েমেন থেকে ইবনে ফাহদ তার কাছে আসলেন । তিনি (ইবনে ফাহদ) বললেন, ‘আবু সাইদ, আমার কাছে এক দাসি আছে, আর আমার কোন স্ত্রীই এই দাসির মত উপভোগ্য নয় । আমার কোন স্ত্রীই আমাকে এরূপ তৃপ্তি দানে সক্ষম নয় যে আমি তার থেকে কোন সন্তান চাই । তাহলে কি আমি তাদের সাথে আজল করতে পারি ?’ জায়েদ ইবনে তাবিত বললেন, ‘হে হাজ্জাজ, আপনি আপনার অভিমত দিন ।’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন । আমরা আপনার সাথে বসি যাতে আপনার থেকে কিছু শিখতে পারি ।’ তিনি বললেন, ‘আপনার মতামত জানান ।’ আমি বললাম, ‘ওই দাসি তোমার ময়দান, তুমি চাইলে সেখানে পানি ঢাল অথবা ইচ্ছে হলে তৃষ্ণার্ত রাখো । আমি জায়েদের থেকে এই শুনেছি ।’ জায়েদ বললেন, ‘উনি সত্য বলেছেন।
প্রথম পর্বের লিংক -http://www.somewhereinblog.net/blog/kabiryahoo/30094741
অপেক্ষা ......তৃতীয় পর্বে....
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৩