ক্রাকেন কিংবদন্তির দানবাকৃতির জীব যা আইসল্যান্ড এবং নরওয়ের উপকূলে বাস করত বলে ধারনা করা হয়।বিশেষ করে তাদের বিশাল আকার ও ভয়াল চেহারা বিভিন্ন কল্পকাহিনীতে তাদেরকে সমুদ্রে বাসকারী একটি দানব হিসেবেই স্থান দিয়েছে। কিঙবদন্তীটির উদ্ভব হয়েছে সম্ভবত দানব স্কুইড অবলোকনের ঘটনা থেকে এরা শুঁড়সহ ১৩-১৫ মিটার ৪০-৫০ ফুট লম্বা হতে পারে বলে ধারনা করা হয়। এই প্রাণীরা সাধারণত অত্যন্ত গভীর সমুদ্রে বসবাস করে কিন্তু সমুদ্রপৃষ্টে এদের দেখা যায় এবং এরা জাহাজ আক্রমণ করেছে বলে শোনা যায়।
যদিও নামটি নর্স গাঁথা গুলোতে পাওয়া যায় না, কিন্তু এই ধরনের সমুদ্রদানবয়ের বর্ণনা রয়েছে এবং আনুমানিক ১২৫০ সালের নরওয়েজীয় টেক্সট,এ পাওয়া যায়। ক্যারোলাস লিনিয়াস তার জীবিত প্রাণীদের শ্রেণীবিভাগের একটি গ্রন্থের প্রথম সংস্করণে ক্রাকেনকে একটি cephalopods হিসেবে Microcosmus নামে অন্তর্ভুক্ত করেন কিন্তু পরবর্তী সংস্করণগুলোতে প্রাণীটিকে বাদ দেন। Erik Pontoppidan, বার্জেনের বিশপও বিস্তারিতভাবে ক্রাকেনের বিবরণ দিয়েছেন তার "Natural History of Norway"-গ্রন্থে। পুরনো বিবরণগুলোতে, Pontoppidan-এরটিসহ, ক্রাকেনকে বর্ণনা করা হয়েছে একটি প্রাণী হিসেবে যার আকার একটি ভাসমান দ্বীপের মত, নাবিকদের জন্য যার প্রধান বিপদ প্রাণীটি নিজে নয়, বরং এটি ডুব দিলে যে ঘূর্ণিস্রোত সৃষ্টি হয় তা। যাইহোক, Pontoppidan দানবীয় পাশাপাশি পশুটির ধ্বংস ক্ষমতা সম্পকে যা বিবরণ দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে যে যদি এটি সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজটিকে যদি আঁকড়ে ধরে, তবে তাকে এটি সমুদ্রের তলদেশে টেনে নিতে সক্ষম হবে। ক্রাকেন সবসময়েই সমুদ্রসর্প থেকে স্বতন্ত্র ছি। একটি প্রতিনিধিত্বমূলক আদি বর্ণনা দিয়েছেন সুইডেনের অধিবাসী Jacob Wallenberg তার বই Min son på galejan "My son on the galley" ১৭৮১ সালেঃ
ক্রাকেন, যাকে কাঁকড়া মাছও বলা হয়, যেটি নরওয়ের নাবিকদের বর্ণনা অনুযায়ী ততটা বিশাল নয়, মস্তক এবং লেজসমূহ গণ্য করে, আমাদের Öland এর চেয়ে সে বড় নয় অর্থাৎ ১৬ কি. মি. এর কম সে সমুদ্রের তলদেশে অবস্থান করে, অগনন ক্ষুদ্র মাছ দ্বারা নিরন্তর পরিবেষ্টিত, যারা তার খাদ্য হিসেবে কাজে লাগে এবং বিনিময়ে তার নিকট হতে খাবার পায়ঃ তার ভোজন, E. Pontoppidan যা লিখেছিলেন তা যদি সঠিকভাবে আমার মনে থাকে, তিন মাসের অধিক স্থায়ী হয় না, এবং আরও তিন মাস প্রয়োজন হয় তা হজম করতে। তার বর্জ্য ক্ষুদ্রতর মাছের একটি বাহিনীর প্রয়োজনে লাগে, একারণে জেলেরা তার বিশ্রামের স্থানে মাছ ধরে... ধীরে ধীরে, ক্রাকেন সমুদ্রপৃষ্টে ভেসে ওঠে, এবং সে যখন ১০ থেকে ১২ ফ্যাদম গভীরে, নৌকাগুলো তার এলাকা থেকে সরে যাওয়াই ভালো, কারণ স্বল্পক্ষণের মধ্যেই সে সজোরে ভেসে উঠবে, ভাসমান একটি দ্বীপের মত, তার ভয়াবহ নাসারন্ধ্র দিয়ে জল নিঃসরণ করতে করতে এবং চারপাশে বৃত্তাকার ঢেউ তৈরি করতে করতে, যা বহু মাইল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৯