ভারতকে ‛অসহযোগী’ দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত এবং......
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ট্রাম্পের অবিস্মরণীয় জয়ের পর ট্রাম্পের প্রশাসনে একের পর এক ভারতপন্থী লোকজন নিয়োগ দিয়েছেন, যা দেখে ভারতীয়রাতো বটেই, এদেশীয় জোকার টাইপের ময়ূখ রঞ্জন ভাদা-ভাকুরাও উচ্ছ্বসিত।
বলাই বাহুল্য, আগামী ৪ বছর বাংলাদেশকে বিপদে ফেলার সবরকম চেষ্টাই ভারত করবে এবং তাতে যদি আমেরিকাকে আংশিকভাবেও যুক্ত করা যায়, তাইলে সেই বিপদ সামাল দেওয়া অত্যন্ত দূরুহ হবে। ভারতীয় মদতে লুটেরা আওয়ামী লীগ হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করতেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডা চালাতে। ভারতীয় এবং বাংলাদেশের ভারতপন্থীরা ঘোষণা দিয়েই বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আনার চেষ্টা করতেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের গোয়েন্দা প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন এর একজন সদস্য। বাংলাদেশ বিদ্বেষী এই মহিলার প্রভাব ট্রাম্পের উপর অবশ্যই আছে। শোনা যাচ্ছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্বেও আসতে যাচ্ছেন একজন ভারতপন্থী।
তো এরা যখন ট্রাম্পের কানের কাছে একটা কথা বারবার বলতে থাকবে, সে প্রভাবিত হবে এটাই স্বাভাবিক এবং প্রভাবিত হয়ে একটা বাজে ডিসিশন নিয়ে ফেলতেই পারে, যেহেতু লুচ্চা স্বভাবের ট্রাম্পকে প্রভাবিত করা সহজ।
আমি নিজেকে মোটেই রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করিনা, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ" তো নয়ই। তবে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ার লেখা মনোযোগ দিয়ে পড়ি। তাই গভীরভাবে লক্ষ্য করেছি- সাধারণত আমেরিকার সরকার পরিবর্তন হলেই আমেরিকার ফরেন পলিসি চেঞ্জ হয় না- এটা যেমন সত্য, গত টার্মে ট্রাম্প বেশ কিছু ডিসিশন আমেরিকান ফরেন পলিসির বাইরে গিয়ে নিয়েছিলো- সেটাও সত্য। তবে জিও-পলিটিক্সে আমেরিকার পরিকল্পনা সুদূর প্রসারি- যার সদ্য প্রমাণ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশ, মধ্যপ্রাচ্যে সিরিয়া....এবার বোধহয় মোদির গদি উলটে দিতে খোদ 'ভারত'।
ইতোমধ্যেই আমরা সবাই জেনেছি- আমেরিকা ভারতকে 'অসহযোগী দেশ' হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এটা দীর্ঘমেয়াদি ক্যালকুলেশনের বাই প্রোডাক্ট।
সমস্যাটা বুঝতে গেলে আমাদেরকে বিগত কয়েকদিন সহ কয়েক মাসের সিগনিফিকেন্ট কয়েকটি ইনসিডেন্ট খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। বিগত কয়েকদিনে দুটো মেজর ইনসিডেন্ট ঘটেছে-
প্রথমতঃ যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে ‛অসহযোগী’ দেশ হিসেবে সাব্যস্ত করেছে। ডিপ্লোম্যাসির ভাষায় অসহযোগী মানে শত্রুর কাছাকাছি; তাও আবার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের মত দেশ। চাট্টিখানি কথা নয়! রেড লাইন কনসিডারেশনে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইরান যদি ২০ হয়ে থাকে, তবে ভারত অলরেডি ১৮; অর্থাৎ যেকোনো মুহূর্তে ভারতকে ধরা হবে বলেই আমার ধারণা।
দ্বিতীয়তঃ সুইজারল্যান্ড তাদের দেশে ইন্ডিয়ান এন্টিটির উপর ট্যাক্স বাড়িয়েছে। ইন্ডিয়ান কম্পানি গুলিকে এখন থেকে এক্সট্রা ট্যাক্স তো দিতেই হবে, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে তাদের ইনকামও লিমিট করা হয়েছে (টেকনোলজি এবং পেট্রোকেমিক্যাল সেক্টরে); যেটা ভারতীয় বিজনেসম্যানদের জন্য অনেক বড় ক্ষতি এবং লজ্জাজনক। কারন ট্যাক্স এক্সটেনশনের ব্যাপারটা অন্য কোনো দেশের জন্য এপ্লিক্যাবল নয়।
এটা গেলো বিগত কয়েকদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এবার আমরা মাসখানেক পেছনে ফিরে দেখবো- শিখ নেতা হত্যা নিয়ে ভারতের সাথে কানাডার ডিপ্লোম্যাটিক চ্যানেলে বিশাল কন্ট্রোভার্সি। যেখানে ভারত ডাহা ফেল করে। কানাডার মাটিতে তাদের নাগরিক হত্যা নিয়ে কানাডিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতকে হুঁশিয়ার করে বলেন ‛Five eyes is considering and everything on the table’
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শিখ নেতাকে মার্ডারের দায়ে এক্স ইন্ডিয়ান আর্মি অফিসার এবং 'র' এর হিট স্কোয়াডের সদস্য বিকাশ জাদবকে মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে রেখেছে FBI.
মানি লন্ডারিং, মার্ডারার হায়ার সহ নানান অপকর্মের জন্য ভারতকে ব্ল্যাকলিস্ট করেছিল ‛ফাইন্যান্সিয়াল একশন টাস্ক ফোর্সেস'- FATF
এই সবকিছুকে এক জায়গায় করে ইক্যুয়েশন মেলানোর চেষ্টা করলে আমরা যেটা পাই তা হলো- RAW তার লিমিট ক্রস করে CIA বা Five Eyes এর সাথে খেলতে গিয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে ইতিমধ্যে ফাইভ আইসের হাতে তাদের বেশকিছু আন্ডারকাভার অপারেটিভ হান্ট ডাউন হয়েছে এবং সর্বোপরি ভারতের প্রেস্টিজ লুস হয়েছে। ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডিপ্লোম্যাটিক চ্যানেলে তাদের রেপুটেশন হ্যাম্পার হয়েছে। কাজেই আশা করি- ২৬' সালের মধ্যে সাউথ এশিয়ায় জিওপলিটিক্যাল আর্থকুয়াকে পুরো সিনারিও চেন্জ হয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:৩৬