somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ nnএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

যে গল্পের শেষ নাই.....

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে গল্পের শেষ নাই.....

পাসের সীটের যাত্রী সাথে আলাপচারিতায়- নাম জানার পর, জিজ্ঞেস করলাম- "বাড়ি কোথায়?"
ছেলেটি বলল- 'ঝালকাঠী, কীর্ত্তিপাশা গ্রাম।' কীর্ত্তিপাশা শুনেই বুকের ভিতরে উথাল পাথাল ঢেউ- এক কিশোরীর মিষ্টি মুখ ভেসে উঠলো.......

এসএসসি পরীক্ষা শেষে যেমন অফুরন্ত সময় থাকে- এইচএসসি পরিক্ষার পর তেমন নয়। প্রথমত উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি পরিক্ষার প্রস্তুতির জন্য বাড়তি পড়াশোনা। আমাদের সময় ক্যাডেট কলেজের ক্যাডেটদের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগদান অনেকটাই বাধ্যতামূলক ছিলো- কিন্তু জাতীয় রক্ষীবাহিনী সৃষ্টির পর থেকে '৭৫ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীতে যোগদানের প্রতি ক্যাডেটদের আগ্রহ কমে যায় কিম্বা একটা দোদুল্যমান অবস্থা বিরাজ করছিলো। এইচএসসি ফাইনাল এক্সামের আগেই সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য প্রি-মেডিক্যাল টেস্ট সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে- তবুও আমি আরও অনেকের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। ফাইনাল এক্সাম দিয়ে আমি সময় কাটাই বৃটিশ কাউন্সিল, পাবলিক লাইব্রেরীতে। বন্ধু ফরিদের কাছে জেনেছিলাম- আরজ আলী মাতুব্বর নিয়মিত বরিশাল পাবলিক লাইব্রেরীতে আসেন। তার সাথে পরিচিত হতে এক্সাম শেষে আমি বরিশাল চলে যাই।

এক বিকেলে বন্ধু ফরিদের বাড়িতে গিয়েছি। সেখানেই প্রথম দেখা, বন্ধু ফরিদের মামাতো বোন- ওদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। তার উজ্জ্বল গভীর চোখ আর ঠোঁটের নিচে ছোট্ট তিল.... এক নজরেই ভালো লেগে গেল। দুবেণী বাঁধা চঞ্চল মেয়েটাকে কী যে ভালো লাগছে! কিন্তু প্রকাশ করতে পারিনি। পরিচিত হবার, কথা বলার প্রবল ইচ্ছা কিছুই বলা হয়নি। সেও কিছু বলেনি তবুও "অনেক কথা যাও যে বলে কোনো কথা না বলি"... হয়তো সেও আমার ভালোলাগা বুঝেছিলো। 'রানু' নামের ক্লাস টেনের ছাত্রীটির আকর্ষণেই সময় অসময়ে বন্ধুর বাড়ি পরপর কদিন গেলাম। সেও আশেপাশে ছিলো...
এক দিন ঠোঁটের কোণে স্মিত হাসির রেখা এনে বলল -"কাল সকালে চলে যাবো।"

হ্যা রানু চলে গিয়েছে। 'রানু' এবং 'কীর্তিপাশা' ছাড়া আমার আর কোনো সঞ্চয় নেই... ওখানেই সব কিছু থেমে গেলেও বুকের ভেতর রানু নামটা খোদাই হয়ে রইলো- 'এখন আমার বেলা নাহি আর, বহিব একাকী বিরহের ভার'...

কয়েক বছর পর বন্ধু ফরিদকে একদিন জিগ্যেস করলাম -"রানু'র কি বিয়ে হয়ে গেছে?"

বন্ধু হেসে বলল - তুই কি ওকে........

সময়ের ব্যবধানে পেরিয়ে গিয়েছে অনেক কিছু। অর্ধশত বছর পর 'কীর্তিপাশা' নামটা শুনেই অসমাপ্ত মনে হলো জীবনের যৎসামান্য মুহূর্ত! একদিন অযাচিত ভাবে অকস্মাৎ শুরু হয়েছিল, সেটা অপরিবর্তিত থেকে গেছে আজও......কিছু কিছু স্মৃতি জীবনের সাথে এমনভাবে জড়িয়ে থাকে হাজারো চেষ্টা করেও
মুছে ফেলা যায় না।

কত বসন্ত দোল,
ফাগুন রঙে লাল হওয়া
চলে গেছে জীবনের ওপর দিয়ে।
না আমি মরে যাইনি, আমার প্রাণটা খুব শক্ত।
হয়ত আরও অনেক কষ্ট পেতে বাকী আছে তাই এখনও বেঁচে আছি।

কিন্তু সেদিনের সেই দুবেণী বাঁধা চঞ্চল মেয়েটার
উৎসাহ উদ্যমে ভরা একটা প্রাণ কোথায় যে
হারিয়ে গেল? আর ফিরে এলোনা....
তবুও বসন্ত কাল এলে আজো আমার মনের কোণে সুর বেজে ওঠে, অকারণ খুশীতে প্রাণটা ছট্‌পট্‌ করে, তবু যৌবনতো আর ফিরে আসবেনা, যে যায় সে কি আর আসে? কত চন্দ্রভূখ অমাবস্যা পার হলাম, তবু সে তো আসেনি!

(ইহা একটি নিছক গল্প)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি।। আমি পদত্যাগ করিনি , ডাইনী করেছে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪০

জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানা আপু

লিখেছেন সোহেল ওয়াদুদ, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৩

শুভ জন্মদিন আপু! আপনার জন্মদিনে সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন কর্মব্যস্ত সুখী জীবন কামনা করছি। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আপনি এবং দুলাভাই অনেক প্রজ্ঞাবান মানুষ। দেশের স্বার্থে জাতির স্বার্থে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন তারেক রহমানের দুর্নীতির নিয়ে আরো কিছু জেনে নেই

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৫


‘তারেক রহমানের উপর আস্থা রাখবো কিভাবে? দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার, হাওয়া ভবন দিয়ে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার কী না করেছেন তিনি’, আলাপচারিতায় কথাগুলো বলতেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক বিপ্লবী ছোটভাই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিপদের সময় কোনো কিছুই কাজে আসে না

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১৫


কয়েক মাস আগে একটা খবরে নড়েচড়ে বসলাম। একটা আরব দেশ থেকে বাংলাদেশি দুটো পরিবারকে প্রায় দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কীসের ক্ষতিপূরণ সেটা খুঁজতে গিয়ে যা পেলাম, তা হলো:... ...বাকিটুকু পড়ুন

পদ ত্যাগ না করলেও ছেড়ে যাওয়া পদ কি শেখ হাসিনা আবার গ্রহণ করতে পারবেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৯



তিনি ছাত্র-জনতার ধাওয়া খেয়ে পদ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচে গেছেন। পদের লোভে তিনি আবার ফিরে এসে ছাত্র-জনতার হাতে ধরাখেলে তিনি প্রাণটাই হারাতে পারেন। ছাত্র-জনতার হাত থেকে রক্ষা পেলেও তাঁর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×