পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ
জীবন ও জীবিকার গল্প...
লেখকঃ সোহানী
আমাদের সহব্লগার সুলেখক সোহানীর লেখা চৌদ্দটা চমৎকার গল্প নিয়ে গল্পগ্রন্থ 'জীবন ও জীবিকার গল্প'।
প্রথম গল্প পার্ভাট এর ব্রকলিন - বিল- জ্যাকি উন্নত দেশের নাম চরিত্র হলেও নিম্ন আয়ের দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। ওরা দামী গাড়ি বাড়িতে পৃথিবীর আদিমতা বর্জিত হতে পারেনি, যা বিশ্বজুড়ে নির্মম বাস্তবতা।
'একজন হাফ মানুষের গল্প'র জহির সাহেব চরিত্রটি বাংলাদেশের সব অফিসের সব চাইতে ভাল কিন্তু ভাগ্যবঞ্চিত কর্মচারীর কমন চরিত্রের একটি। ব্যতিক্রম শুধু বাস্তবের জহীর সাহেবেরা বস হারুন সাহেবের সামনে কিছুই বলতে পারেন না।
প্রত্যেকটা গল্পে সমাজে প্রচলিত কঠিন বাস্তবতা চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়েছেন। লেখকের গল্প বলা/লেখা স্বচ্ছ, সরল এবং সাবলীল- যা নবীস পাঠকদের জন্য অনুকূল। লেখক বলেছেন - ছোট গল্প। কিন্তু ছোট গল্পের সারমর্ম হচ্ছে, "শেষ হইয়াও হইল না শেষ"! অর্থাৎ পাঠক গল্প পড়ে শেষ করার পরও কৌতূহলী করবে- তারপর কি হলো.....? কিন্তু লেখক সেই কৌতূহল পাঠকের জন্য অবশিষ্ট রাখেননি, তিনি সবটুকুই বলে দিয়েছেন। মনে হয়েছে, লেখকের গল্পগুলো অতি দ্রুত শেষ করার তাড়না কাজ করেছে
আমার কাছে মনে হয়েছে, চৌদ্দটি গল্পের প্রায় সবগুলোই গতানুগতিক গল্প কিম্বা ঘটনা বর্ণনা। গল্পের শুরু পড়লেই শেষটা কি হবে তা আগাম বোঝা যায়- যা লেখকের লেখায় মুন্সীয়ানার অভাব কিম্বা কৌসুলির ঘাটতি। অথচ, গত এক যুগেরও বেশী সময় যাবত সোহানী ব্লগ লেখায় কুশলি, অভিজ্ঞতালব্ধ লেখক হিসেবে পাঠকপ্রিয়তায় সম্মানজনক অবস্থান ধরে রেখেছেন নিজগুণে। কিন্তু জীবন ও জীবিকার গল্প প্রত্যাশা পুরণে কিছুটা ব্যার্থ হয়েছেন। আশা করি পরবর্তী প্রকাশনায় পাঠক প্রত্যাশা পূরণ করবেন।
বইটির ভূমিকা লিখেছেন আমাদের সুপরিচিত সহ ব্লগার আহমেদ জী এস। তিনি নিজে কষ্ট করে কিছুই লিখেননি। লেখকের বক্তব্যই কপি পেস্ট করেছেন মাত্র! ফলতঃ পাঠক একই লেখা দুইবার পাঠ করেছেন।
বই আর খবরের কাগজের পার্থক্যটা বুঝে বইয়ের কাগজ বাছাই করা উচিৎ। খবরের কাগজ পড়ে ফেলে দেয়, বই পড়ে সংরক্ষণ করে। বইয়ের কাগজ আরও একটু ভালো হতে পারতো। বইয়ের প্রচ্ছদ ও মলাট দৃষ্টিনন্দন হলেও বইয়ের বাধাই যাচ্ছে তাই!