পুলিশ-ছাত্রলীগ-যুবলীগ যে, একই বাহিনী এবার আস্তে আস্তে তা ফুটে উঠছে। পুলিশ ছাত্রলীগের ভাষায় যেমন কথা বলে তেমনই ছাত্রলীগ-যুবলীগ পুলিশের সহযোগী বাহিনী হিসেবেই যাকে খুশী তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত। তারা এতোদিন শিবির-জামাতকে যেখানে-সেখানে যখন খুশী আটক করেই পুলিশের হাতে সোপর্দ করে আসছিলো, অনেকেই শিবির বিরোধিতায় অন্ধভাবে সাপোর্টও করে আসছিলো তাদের এই অন্যায়কে। এবার তারা কী বলবেন?
এ ব্যাপারে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হতে পারে যেমনঃ ককটেল বিস্ফোরণ কি সাংবাদিকরাই করেছে নাকি লীগরাই করে হরতালকারীদের ওপরে চাপানোর চেষ্টা ছিলো বিশ্বজিতের হত্যার মতো যে, হরতালকারীরাই সন্ত্রাস শুধু নয় মানুষ তাও আবার হিন্দুকে খুন করে সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি করে থাকে। অথচ হরতালে পুলিশ-লীগের হাতে যতজন মরে হরতালকারীদের হতে কি ততজন মরেছে? আরো অনেক প্রশ্ন আপনারাও করতে পারেন এবং উত্তরও পেতে পারেন নিজে থে্কেই।
আবার হরতালের আগে ও পরে যে গাড়ি ভাংচূর হয়, তার পেছনেও কি এরাও দায়ী হতে পারেনা, নাকি বিরোধীদের একতরফা দায়ী করেই খালাস পাওয়া সম্ভব? যেমন মহাসচিব ফখরুল সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি নাকি ভাংচূর করেছিলো, যে মামলার বাদী আবার ঘটনার দিন ছুটিতে ছিলো? সব সম্ভব আলাদীনের চেরাগ থাকলেই??? তাহলে কে ভাংচূর করে বা করছে?! এরা তবে ককটেল বিস্ফোরনের স্থলে কী করছিলো--সাংবাদিকরা না হয় ছবিতোলার কাজে গিয়েছিল। কিন্তু ছাত্রলীগ ওখানে কেনো একই সময়ে!!! এমনকি নিরীহ ধর্মভীরু ২০জন নারীকেও পুলিশ ধরেছে, কাল প্রেসক্লাব থেকেও নারীদের ধরা হয়েছে--কেনো??
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেক মন্ত্রীও পুলিশের সাথে এই রক্ষীবাহিকেও মাঠে কাজ করা বা শুধু শিবির-জামাত বা বিএনপি বা সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের শায়েস্তা করার নির্দেশ দেয়ার পর তা ভালোভাবে পুলিশ-লীগরা বাস্তবায়নও করে যাচ্ছে, যার সর্বশেষ শিকার হচ্ছে--বিশ্ব্জিত। মিডিয়ায় আসা নিউজটি কমবেশী সবার জানা থাকার কথা, তবুও আমি সংক্ষেপে বলছি---
শিবির-জামাত আটক স্টাইলে এবার এবার চার ফটো সাংবাদিককে পিটিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এরা হচ্ছেন রয়টার্স-এর এন্ড্রু বিরাজ, প্রথম আলোর হাসান রাজা, নিউ এজ-এর সনি রামানি ও বাংলানিউজের হারুন-অর-রশিদ রুবেল।
গাড়িতে অগ্নি-সংযোগের ছবি তোলার জন্য সন্ধ্যা পাঁচটার দিকে আজিমপুর যাচ্ছিলেন তিন সাংবাদিক। এ সময় এসএম হলের সামনে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। সাংবাদিকরা তখন ছবি তোলার জন্য এগিয়ে গেলে ঢাবির একদল সশস্ত্র ছাত্রলীগ সেখানে ছুটে গিয়ে ফটো সাংবাদিকদের ঘিরে ধরে। অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বিস্ফোরণের অভিযোগে তিন ফটো সাংবাদিককে আটক করে। এ সময় সাংবাদিকরা নিজেদের পরিচয় দিলেও ছাত্রলীগ ক্যাডাররা সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র দেখতে চায়। রয়টার্সের ফটো সাংবাদিক এন্ড্র বিরাজ প্রথমে নিজের পরিচয়পত্র দেখালেও কাজ হয়নি। এরপর অন্য দুই সাংবাদিক পরিচয়পত্র ও তাদের সঙ্গে থাকা ক্যামেরা ছাত্রলীগ কর্মীদের দেখালেও কাজ হয়নি। এ সময় প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক হাসন রাজা সেখানে উপস্থিত হয়ে সহকর্মীদের পক্ষে কথা বললে তাকে মারধর করে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। এ সময় সেখানে শাহবাগ থানা পুলিশ উপস্থিত হলেও পুলিশ ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাত থেকে সাংবাদিকদের রক্ষা করতে পারেনি। এমনকি সাংবাদিকদের কোনো কথাই শুনেনি পুলিশ। ছাত্রলীগ ক্যাডাররা তিন সাংবাদিককে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
রাত সোয়া সাতটার দিকেও ফটো সাংবাদিকরা শাহবাগ থানায় অবস্থান করছিলেন। সেখানে ডাকা হয়েছে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান ও ওমর শরীফকে। উপস্থিত রয়েছেন কয়েকজন সিনিয়র ফটো সাংবাদিকও। রমনা জোনের ডিসি নুরুল ইসলামও পৌঁছেছেন শাহবাগ থানায়।
তিনি বলেন, একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা একসঙ্গে চা খেয়ে সমস্যাটির সমাধান করে দিচ্ছি। তবে ফটো সাংবাদিকরা দাবি জানিয়েছেন, দায়ী ছাত্রলীগ কর্মীদের থানায় না আনা হলে তারা থানাতেই অবস্থান করবেন। রাত ৮টার দিকে ১ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে ফটো সাংবাদিকরা শাহবাগ থানার গেটে অবস্থান
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৩