ছোটবেলায় আমাদের গ্রামে একবার "সন্ধানী, খুলনা মেডিকেল কলেজ ইউনিট" কে সেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী আয়োজন করতে দেখেছিলাম। সাদা পোশাক (তখন জানতাম না এটার নাম Apron) দেখে ভেবেছিলাম এরা বুঝি সব ডাক্তার। তখন গ্রামের মাদরাসাতে পড়তাম, তাই ডাক্তার হবার স্বপ্ন দেখাটা স্বপ্নের চেয়ে অবাস্তব ছিল। মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবার পর এনাটমি বিভাগের সাথে "মেডিসিন ক্লাব"-এর অফিস হওয়ায় ভৌগোলিক কারণে প্রথমেই পরিচিত হই এর সাথে। অল্প দিনের মধ্যেই নিজেকে পুরোদস্তুর মেডিসিনিয়ান হিসেবে আবিষ্কার করলাম। দেখলাম এখানে ভাইয়া আপুরা নিজেরা নিয়মিত রক্ত দেয়। নিজে প্রথম রক্ত দিলাম ২২শে জুলাই ২০০৯। প্রথমবার রক্ত দেবার সময় সত্যিই অনেকটা ভয় পেয়েছিলাম। রক্ত দেয়া শেষে দেখলাম এটা কোন ব্যাপারই না, একটুও ব্যথা লাগে না, কেবল মোটা সূচটা দেখে একটু ভয় লাগে। ২য় বার ২২শে ডিসেম্বর ২০০৯, ৩য় বার ২৯শে এপ্রিল ২০১০, তারপর ২৯শে সেপ্টেম্বর ২০১০। আগের ৪ বার মেডিসিন ক্লাবে রক্ত দিলেও গতকাল রক্ত দিয়েছি কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে বই মেলায়। প্রত্যেকবার রক্ত দেই আর ভাবতেই ভাল লাগে আমার এই রক্ত দিয়ে বেঁচে যাবে অসহায় একটি জীবন।
আপনারাও যারা রক্ত দেবার যোগ্য তারা প্রতি ৪ মাস পর পর স্বেচ্ছায় রক্ত দান করতে পারেন যেকোন সেচ্ছাসেবী সংগঠনকে অথবা আপনার কোন বন্ধু বা আত্মীয়কে যার রক্তের প্রয়োজন। যে রক্তটা আপনার শরীর থেকে এমনিতেই নষ্ট হয়ে যেত, সেটা দিয়ে আরেকজনের উপকার হলে ক্ষতি কী?
আপনি রক্ত দিতে পারবেন আপনার...
#বয়স ১৮ থেকে ৫৫ বসরের মধ্যে হয়
#ওজন কমপক্ষে ৫০ কেজি (মেয়েদের ক্ষেত্রে ৪৫ কেজি) হয়
#একবসরের মধ্যে বড় কোন অপারেশন না করিয়ে থাকেন বা রক্ত গ্রহন না করে থাকেন
#এক মাসের মধ্যে কোন ভ্যাক্সিন না নিয়ে থাকেন
#এক সপ্তাহের মধ্যে দাত না উঠিয়ে থাকেন
#এক সপ্তাহের মধ্যে কোন Antibiotic গ্রহন না করে থাকেন
#মেয়েদের ক্ষেত্রে, ঋতুস্রাব চলাকালীন সময়ে ও দুগ্ধপোষ্য শিশু থাকলে রক্ত দিতে পারবেন না।
আসুন আমরা সবাই মানবতার সেবায় এগিয়ে আসি। কোন ব্লগার ফরিদপুরে রক্ত দানে ইচ্ছুক হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আর যারা ঢাকায় থাকেন তারা রেটিনা ব্লাড ডোনার ক্লাব সহ সন্ধানী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইউনিট বা অন্য যে কোন সেচ্ছাসেবী সংগঠনকে। পরিশেষে এই কামনা, রক্তের বন্ধনে মুছে যাক জীবনের ধূসর ক্লান্তি...