
আজ ব্যাক্তিগত একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। ঘটনাটা দুই তিন দিন আগের। টিভিটার যেন কি হয়েছে। টিভির গোলাপী কাভারটা না উঠিয়ে দেখলে কেমন যেন শো শো শব্দ করে। মনে হয় যেন কি নির্গত হচ্ছে! কাভারটা তুলে দিলে আবার শব্দটা থেমে যায়।
সেদিনও টিভিটা অন করেছি যথারিতী কাভার না তুলেই, শো শো শব্দ শুরু হয়ে গেল। তাড়াতাড়ি কাভারটা তুলে দিলাম। তুলে দিয়েই টিভির পিছন দিকে যেখানে ছিদ্র ছিদ্র মত থাকে সেখানে হাত দিলাম। হাত দিয়ে স্পর্শ করিনি, এক দেড় ফুট দূরে শূন্যে হাত রেখেছিলাম। আমি আগেই টের পেয়েছিলাম ওখানে কেমন যেন একটা আবেশ আবেশের মত তৈরী হয়।
হাত দেয়ার সাথে সাথে একদম ঠিক ম্যাজিকের মত একটা কান্ড ঘটল যা এতদিন শুধু টিভি সিনেমার পর্দায়ই দেখেছি। দেখলাম তীব্র সাদা আলো টিভির পিছনের ওই ছিদ্র গুলো দিয়ে বের হয়ে এসে দেড় ফুট দূরে দাড়ানো আমার হাতটাকে খামচে ধরল। তারপর তা আমার সারা শরীর জুড়ে ছড়িয়ে পড়লো। অসহ্য ধরনের তীব্র একটা গরম জ্বর জ্বর অনুভূতি, মনে হল হার্ট টা কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে, হাতটা ভীষন জ্বলতে লাগলো, রিমোট ছিটকে হাত থেকে দূরে পড়ে গেল, আমি নড়তে পারছিলাম না, কেমন যেন অবশ হয়ে শক্ত হয়ে আটকে গেছি, কোন শব্দও করতে পারছিলাম না। বুঝলাম একেই বুঝি বলে মৃত্যু!! একবার মনে হল ফিরে আসতে পারবো কিনা?
পায়ের নীচে সিমেন্টের ফ্লোর আর মোজা পড়ে থাকার কারনে কিনা জানিনা জিনিসটা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে ছেড়ে গেল। যাবার সময় শরীর থেকে পোড়া একটা গন্ধ বের হল আর আঙ্গুল গুলো ভীষন জ্বালা করছিলো। এতক্ষন পরে ভয়ার্ত আর্ত চিৎকার আমার গলা দিয়ে বের হয়ে এল। আশেপাশে কেউ ছিল না তাই আমার চিৎকার কারো কানে গেল না। আমি আবার কার্পেটের উপরই শুয়ে পড়লাম। আম্মা ছাড়া বাসায় কেউ ছিল না। তিনিও বেশ খানিকটা দূরে ছিলেন। কিছুক্ষন পরে উঠে আম্মার কাছে গেলাম। ঘটনা বললাম। আম্মা বললেন কোন পূন্যের গুনে নাকি বেচে গেছি। ভাল লাগলো এই ভেবে যে যাক জীবনে কিছু পূন্য তাহলে করেছি। মাথা ভার হয়ে ছিল। বুঝতে পারছিলাম নতুন জীবন পাওয়া কাকে বলে!
আলসেমি করে ডাক্তারের কাছে গেলাম না। বিকেলে ইলেকট্রিশিয়ান এল। টিভি চেক করে দেখলেন পিকচার টিউব থেকে যে কেবল বের হয়েছে তাতে লিক রয়েছে। এই কেবল দিয়ে নাকি অতি উচ্চ মাত্রার কারেন্ট যায়। আর আমাদের টিভির ঐ কেবল দিয়ে নাকি এগারো হাজার ভোল্ট কারেন্ট পাছ হয়। কি সাংঘাতিক! তার মানে আমার ভিতর দি্যে এগারো হাজার ভোল্ট কারেন্ট গেছে! কেমনে বেচে রইলাম!! মিরাকেল বলে মনে হল। ইলেকট্রিশিয়ান এটাও বললেন তার এক কলিগ নাকি বছর দুয়েক আগে ঠিক এই কেবলটার কারনেই মারা গেছেন।
পরদিন ডাক্তারের কাছে গেলাম। ঘটনা শুনে বললেন সাথে সাথে আসা উচিত ছিল। যা ক্ষতি হবার হয়ে গেছে। সাথে সাথে আসলে ক্ষতিটা বুঝা যেত। প্রেসার দেখলেন নীচেরটা বেশ কম, মাত্র ষাট। বাকি সব নরমাল আছে। বললেন তুমি পুরোপুরি পুড়ে যেতে পারতে, ভাগ্য ভাল যে তা হয়নি। আমার নিজেরও শক খাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১১ দুপুর ২:৩৪