
এটা ছিল ২০০৬ সাল ,আমি তখন ক্লাস সেভেন এ ।ঈদের বাকি আরো ১৫ দিন । আমি ,পারভেজ ,বাপ্পা বসলাম পরিকল্পনা করতে । ভাবছেন কিসের পরিকল্পনা ? না, পরিবারের ঈদের কেনা কাটার পরিকল্পনা নয় , ঈদে কিভাবে বেড়াব এটার পরিকল্পনা । প্রথমে পারভেজ বল্ল , এই তোরা শোন ঈদের দিন নামাজ পড়ে বাড়ির, সকলের বাড়িতে, বেড়াতে যাব । তার পর যে আত্থিয়রা বেশি টাকা দে তাদের বাড়িতে যাব ।বাপ্পা বল্ল ঠিক আছে । কিন্তু আমি প্রশ্ন করে উঠলাম ।আচ্ছা তোরা বড়ি কোন দিক থেকে বেড়ানো শুরু করবি ? পারভেজ বলে কেন , উত্তর দিক দিয়ে । বাপ্পা বলে দক্ষিন দিক দিয়ে । এবাভে তাদের মধ্যে একটা ঝগড়া শুরু হয়ে গেল ।আমি বল্লাম ঝগড়া বন্ধ কর । টস দে । বাপ্পা বল্ল পয়সা আছে ? আমি পকেটে হাত দিয়ে বল্লাম না । তারপর সে একটা পাতার কিছু অংস নিয়ে আমাকে বল্ল , এবার তুই টস দে । আমি টস দিলাম ,বাপ্পা জিতল । সদ্ধান্ত হল বাড়ির দক্ষিন দিক দিয়ে বেড়ানো শুরু করব । এর পর কোন দিন কোন আত্থিয়ের বাসায় যাব ।সেটা ঠিক হল । এরি মধ্যদিয়ে আমাদের সেই দিনের পরিকল্পনা শেষ হল ।
ঈদের আগের রাতে চাঁদ দেখা গেল । ঈদের আনন্দে সারা রাত ঘুম হল না । ঈদের দিন সকাল বেলা উঠে বাড়ির, আমরা তিন বন্ধু একে অপরকে ডাকা ডাকি করে ,বাড়ির পুকুরে গোসল করলাম। তারপর নতুন পান্জাবি পরে তিনজন একত্রে ঈদাগাহে নামাজ পড়লাম । এর পর কবরস্থানে গিয়ে কবর জেয়ারত করলাম । কবর বাসির জন্য দোয়া করলাম বড়দের সাথে । তারপর বাড়িতে এসে মা, বাবা , চাচা -চাচি , দাদাভাইকে সালাম করেলাম । সবাই রিতী মতো আমাকে সালামি দিল , আমার দাদা একটু বেশি সালামি দিত । তাই দাদাকে ঈদগাহা থেকে বাহির হওয়ার সময় এক বার, বাড়িতে এসে আবার সালাম করলাম । হঠাত্ পারভেজ আর বাপ্পার ডাক ,ঐ ফয়সাল তারাতারি আয় ,বেড়ানো শুরু করব । এর পর আমাদের বাড়িতে যে ১0 -১৫ টি ঘর ছিল সবগুলোতে গেলাম । তারপর ৩ জনে সাইকেল নিয়ে দূরের আত্থিয় দের বাড়ির উদ্দেশ্যে রাওনা হতাম । এবাভে কাটত আমাদের ঈদ । আজ সেইদিন আর নেই । যে যার কাজে ব্যেস্ত । পারভেজ এখন প্রবাসে , বাপ্পাও তার কাজ নিয়ে ব্যেস্ত । আসলে ছোট বেলার ঈদ অনেক আনন্দ ময় ছিল । যা কখনো ভুলা যায় না।