
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে আরও কিছুদিন আন্দোলন চালিয়ে যাবার নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের। এই ইস্যুতে মে মাসের শেষদিকে পাঁচদিন হরতাল শেষে মাঝখানে বিরতি দিয়ে আবারও হরতাল কর্মসূচিতে যাবার আগাম সিদ্ধান্ত ঠিক করে রাখা হয়।

এমনকি হরতাল শেষে অবরোধ ও অনশনসহ আরও বড় কর্মসূচি দেয়ারও চিন্তা-ভাবনা ছিল। কিন্তু বিএনপি নেতাদের আশঙ্কা, ইলিয়াস আলীর ইস্যুতে আরও হরতাল বা এর চেয়ে বড় কর্মসূচি দেয়া হলে বিভিন্ন অভিযোগে বিএনপিসহ ১৮ দলের অন্য শীর্ষ নেতাদেরও মামলায় আটকে ফেলা হতে পারে। এভাবে একের পর এক মামলায় শুধু বিএনপিকেই নয়, ১৮ দলীয় জোটকেই নেতৃত্বহারা করে ফেলতে পারে সরকার বা প্রশাসন। এই অবস্থায় আগামী দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়ার মতো লোকও থাকবে না। এই আশঙ্কায় কঠোর কর্মসূচির পথ থেকে আপাতত সরে এসেছে বিএনপি।

উল্লেখ্য গত হরতালে সচিবালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে দায়ের করা দুটি মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৮ দলের শীর্ষ নেতাদের জড়ানোর কারণে থমকে দাঁড়ায় বিএনপি। মামলায় বিএনপি ও জোট নেতাদের জামিন দেয়া এবং বিচারিক আদালতে তাদের আত্মসমর্পণ প্রশ্নে সৃষ্ট পরিস্থিতি দলটিকে আরও চিন্তিত করে তোলে। এ ছাড়া গত হরতালের সময় বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে বোমা বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনাসমূহকে ভিন্ন দৃষ্টিতেও দেখছেন বিএনপির হাই কমান্ড। তাদের সন্দেহ, বিরোধী দলের কর্মসূচির সুযোগ নিয়ে অন্য কোনো উত্সাহী পক্ষও এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। কোনো সুযোগ সন্ধানী মহল যেন এই ধরনের সুযোগ নিয়ে এখনই সামগ্রিক পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে না পারে সে লক্ষেও লাগাতার বা কঠোর আন্দোলনে এখনই না যাবার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি ও ১৮ দল নেতারা।

তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, আগামী ১০ জুনের আগেই তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহালের দাবি মেনে না নিলে সব গণতন্ত্রকামী মানুষকে নিয়ে রাজপথে নামা হবে। গতকাল সোমবার ১৮ দল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

বিরোধী দলের এখনো অনেক কিছু শিখবার বাকী রয়েছে। কি ভাবে আন্দোলন করতে হয়, রাজনীতি কাকে বলে তার শিক্ষা সরকারী দলের কাছ থেকে শিখে রাখুন যা ভবিষ্যতে আপনাদের সফল হতে সহায়ক হবে।