
ক্রোধ বা রাগ একটি অতি মাত্রার ক্ষতিকর উপসর্গ যা শারীরিক ও পারিবারিক এমন কী সামাজিক জীবনকেও বিষিয়ে তুলতে পারে। রাগেলেন তো হারলেন এই চির সত্য কথাটি আমরা সকলে জানলেও কার্যক্ষেত্রে এর ব্যবহার সীমিত। যেমন ধুম পান বা মদ্যপান ক্ষতিকারক জেনেও আমরা এর সংস্পর্স থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারছিনা। অনেক আইন, আদেশ উপদেশ দিয়েও যখন ধুমপান বা মদ্যপান থেকে আসক্তকারীকে এর থেকে ফিরানো যায় না তখন আক্ষেপে অনেকই বেলে থাকেন " নেশা খাবি খা ! মারা যাবি যা! " । তার পরও অনেকে বারবার সেই একই উপদেশ এবং অনুরোধ করে ধুমপান থেকে বিরত থাকতে।

ইদানিং লক্ষ্য করছি সামুর কতিপয় বন্ধু অন্যদের লেখা যদি তাদের মতের সাথে কনফ্লিক্ট করে অর্থাৎ তাদের মতের সাথে না মিলে তা হলেই তারা রাগন্বিত হন। আজে বাজে মন্তব্য করেন যা কখনো কখনো মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। তারা এতটাই রাগন্বিত হন যে হিতাহিত জ্ঞাণ হারিয়ে অশালীন ও অশ্লীল বাক্য প্রয়োগে কুণ্ঠিত হন না। এতে করে যে তিনি তার অজান্তে নিজের মন্দ চরিত্রটি মুখোশের অন্তরাল থেকে জন সম্মূখে প্রকাশ করে দিচেছন তা বুঝতেও পারেনা।রাগ হলে অনেকের অবস্থা এমন হয় যে তিনি যেন নিজেকে সামাল দিতে পারছেন না, কিছুতেই আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারছেন না।

সামুর সেই সকল বন্ধুদের মধ্যে যারা তাদের এই মন্দ অভ্যাসটির জন্য লজ্জিত এবং অনুতপ্ত এবং মনেপ্রাণে এই মন্দ অভ্যাসটি ত্যাগ করতে চান তাদের জন্য আমার পরামর্শ আপনারা রেগে গেলে মিষ্টি খাবার অভ্যাস করুন। হাতের কাছে রাখুন মিষ্টি নিদেন পক্ষে একমুঠো চিনি। তিনি যদি চিনি-গস্নুকোজ বা মিষ্টি কোন খাবার রাগের সময় খানিকটা খেয়ে নেন তাহলে দ্রুত সেই মিষ্টি তাঁর মেজাজ স্বাভাবিক করতে মস্তিস্কে সাহায্য করবে অর্থাৎ সেখানে শক্তি যোগাবে| রাগে অগ্নিশর্মাদের জন্য যে ভাল দাওয়াই পাওয়া গেছে এতে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই| রাগ হলে মেজাজ হয় গরম, সঙ্গে সঙ্গে চিনি বা মিষ্টি জাতীয় কিছু খেলে মিষ্টি মিষ্টি হয়ে গলে যাবে মেজাজটাও, রাগ পালাবে, চমৎকার ওষুধ !

রাগ প্রশমনের বেশ কিছু নিয়ম আছে তবে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বার্ড বুশম্যান রাগের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন চিনি রাগ উপশমে সাহায্য করে| সম্প্রতি তাঁর এ গবেষণার ফল এক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে| তিনি বলেছেন, চিনি রক্তপ্রবাহকে ঠিক রেখে মসত্মিষ্কে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে| কেউ রাগ করলে আগের অবস্থায় তার মনকে স্বাভাবিক করার কাজে মসত্মিষ্কের অনেক শক্তি ব্যয় হয়| গস্নুকোজ ও মিষ্টিদ্রব্য অতিদ্রম্নত মস্তিষ্ককে সেই শক্তি যোগান দিতে পারে| লেবু দেয়া কোন মিষ্ট পানীয় পান করলেও বেশ খানিকটা উপকার পাওয়া যায়; তাতেও খানিকটা মস্তিস্কের শক্তি পাওয়া যায়| গবেষক জানিয়েছেন, তাঁরা বেশকিছু কলেজ ছাত্রের মেজাজ পরীৰা করেছেন| তাতে এই চিনি বা গস্নুকোজের সুফলের অকাট্য প্রমাণ পেয়েছেন|

তবে কেউ যদি না বুঝেও তার ক্ষতি করতে চায় তখন আর কিছুই করার থাকেনা। ধুমপানের মতো রাগ ও শরীরের জন্য ক্ষতি কর। তাই এর থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন। সুস্থ্য থাকুন।