পৃথিবীব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় কাট ফ্লাওয়ার (Cut Flower) হল জারবেরা।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই আজকাল যেকোনো ফুলের দোকানে গেলেই সহজেই সবার নজর কাড়ে বাহারি রঙের জারবেরা। আসুন জেনে নেই কিভাবে আপনি আপনার বাড়িতে/ছাদে জারবেরার ফুল ফোঁটাতে পারেন...
জারবেরার ক্ষেত্রে আমরা প্রথমেই যে ভুলটি করে থাকি তা হল জারবেরা গাছগুলো আমরা সরাসরি রোদে রাখি যা জারবেরার জন্য ক্ষতিকর। জারবেরার জন্য দরকার এমন পরিবেশ যেখানে হাল্কা রোদ আর হাল্কা ছায়া থাকে। এজন্য যাদের বাসার বারান্দায় অল্প রোদ আসে তারা সহজেই বারান্দায় লাগাতে পারেন। আর ছাদে লাগাতে হলে অন্য বড় কোন গাছের ছায়ায় রাখতে হবে অথবা কৃতিমভাবে শেড এর বেবস্থা করতে হবে।
জারবেরার ২ ধরণের জাত পাওয়া যায়। একটি সাধারন জাত যা প্রায় সব নার্সারিতেই পাওয়া যায় এবং ফুল কম ফোটে এবং ফুলের আকার ছোট।
আরেকটি হল হাই-ব্রিড জাত যা সাধারণত ভালো এবং বড় নার্সারি ছাড়া পাওয়া যায় না এবং দামও অনেক বেশী, পাশাপাশি ফুলও অনেক বেশী পরিমাণে ফোটে আর ফুলের সাইজও বেশ বড় হয়। সম্প্রতি জাগুয়ার নামক একটি ভ্যারাইটি পাওয়া যাচ্ছে যা শৌখিন গার্ডেনারদের জন্য উপযোগী একটি জাত। জারবেরা গাছ অনেক বছর বাঁচে ও সহজেই চারা তৈরি করা যায়। ফুলগুলো গাছে থাকে অনেকদিন। ৮-১০ ইঞ্চি টবেই ১ টি জারবেরার চারা লাগানো যায়।
পরিমত পানি দেয়া, মরা পাতা কেটে ফেলে দেয়া, মাঝে মাঝে মাটি খুঁচিয়ে দেয়া, আর পরিমিত মাত্রায় সার দেয়া হলে সারা বছর আপনার জন্য ফুল ফুটিয়ে যাবে জারবেরা।
জারবেরার জত্নঃ
১। হাল্কা রোদে রাখতে হবে। কড়া রোদে রাখলে ফুল ভালো হবে না এবং গাছের পাতা হাল্কা হলুদ হয়ে যাবে। ধীরে ধীরে মারাও যেতে পারে।
২। মাটি কখনও শুকাতে দেয়া যাবে না আবার বেশী ভেজাও রাখা যাবে না।
৩। মরা পাতা দেখামাত্র কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলতে হবে, হাতে ধরে টান দিয়ে মরা পাতা ফেলা যাবে না।
৪। ১৫ দিন পর পর সরিষার পচা খৈল পানি আর অল্প পরিমাণ ড্যাপ (DAP) সার দিতে হবে। ড্যাপ না পেলে গোবর/জৈব সার ব্যবহার করা যাবে। পরিমিত সার দেয়ার উপর জারবেরার ফুলের সাইজ ও সংখ্যা নির্ভর করে।
৫। ফুল মরে যেতে শুরু করলে ফুলের স্টিকটি একেবারে গোঁড়া থেকে কেটে ফেলতে হবে।
৬। তেমন কোন পোকা মাকড় হয় না। তবে কোন পোকা দেখলে সাথে সাথে মেরে ফেলতে হবে।
৭। গাছের গোঁড়া পচা রোগ প্রতিরোধ করতে পরিমিত মাত্রায় পানি দিন।
৮। মাঝে মাঝে রেড স্পাইডার মাইট পাতার নিচের অংশে দেখা যায়। অল্প গাছ হলে ভালো ভাবে পাতার নিচের অংশ ধুয়ে নিলে "রেড স্পাইডার মাইট" দূর হয়ে যাবে। বেশী গাছ হলে কীটনাশক ব্যবহার করা যায়।
৯। বাতাসে ফুল ভেঙ্গে যাওয়া রোধ করতে ফুল ফোঁটার আগেই ১ টা খুঁটি দিয়ে ফুলের স্টিকটি বেঁধে রাখুন।
তো আসুন বছরের পর বছর ধরে প্রাণ ভরে উপভোগ করি নিজের গাছে ফোঁটা জারবেরার অপার সৌন্দয্য।
গাছপালা সংক্রান্ত যেকোনো সাহায্য পেতে ফেইসবুকের এই পেজটিতে চোখ রাখতে পারেনঃ https://www.facebook.com/urgs.bd
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:২৯