গত বছর সামহোয়্যার ইন ব্লগে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের জন্মদিন উপলক্ষে উনার কিছু প্রিয় উক্তি নিয়ে পোষ্ট করি! এই বছর আবারও স্যারের কিছু প্রিয় উক্তি সেয়ার করলাম।।
স্যারের প্রত্যেকটা কথায় থাকতো লজিক, হয়তো এই জন্যই উনি ছন্দের জাদুকর!
যে জিনিস চোখের সামনে থাকে তাকে আমরা ভুলে যাই
যে ভালবাসা সব সময় আমাদের ঘিরে রাখে
তার কথা আমাদের মনে থাকে না....
মনে থাকে হঠাৎ আসা ভালবাসার কথা।
-----হুমায়ূন আহমেদ
কল্পনা শক্তি আছে বলেই
সে মিথ্যা বলতে পারে ।
যে মানুষ মিথ্যা বলতে পারে না,
সে সৃষ্টিশীল মানুষ না, রোবট টাইপ মানুষ ।
-----হুমায়ূন আহমেদ
‘‘পৃথিবীর সব মেয়েদের ভেতর অলৌকিক
একটা ক্ষমতা থাকে।
কোন পুরুষ তার
প্রেমে পড়লে মেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তা বুঝতে পারে।
এই ক্ষমতা পুরুষদের নেই। তাদের কানের কাছে মুখ
নিয়ে কোন মেয়ে যদি বলে- ‘শোন আমার প্রচণ্ড কষ্ট
হচ্ছে। আমি মরে যাচ্ছি।’
তারপরেও পুরুষ মানুষ বোঝে না।
সে ভাবে মেয়েটা বোধ হয় এপেন্ডিসাইটিসের
ব্যাথায় মরে যাচ্ছে!’’
-----হুমায়ূন আহমেদ
মানব জাতির স্বভাব হচ্ছে
সে সত্যের চেয়ে মিথ্যার
আশ্রয় নিরাপদ মনে করা..
-----হুমায়ূন আহমেদ ( দেয়াল )
মেয়েদের আমি কখনও খুশি হলে
সেই খুশি প্রকাশ করতে দেখি নি।
একবার একটা মেয়ের
সাথে সঙ্গে কথা হয়েছিল।
সে ইন্টারমিডিয়েটে ছেলে-মেয়ে
সবার মধ্যে ফার্স্ট হয়েছে।
আমি বললাম, কি খুশি তো?
সে ঠোঁট উল্টে বলল,
"উঁহু বাংলা সেকেন্ড পেপারে
যা পুওর নাম্বার পেয়েছি।
জানেন, মার্কশিট দেখে কেঁদেছি।"
-----হুমায়ূন আহমেদ
জীবনে কখনো কাউকে বিশ্বাস করতে যেও না।
কারন,যাকেই তুমি বিশ্বাস করবে সেই তোমাকে ঠকাবে।
-----হুমায়ূন আহমেদ
" পৃথিবীতে সব নারীদের ডাক উপেক্ষা করা যায়,
কিন্তু 'মা' এর ডাক উপেক্ষা করার
ক্ষমতা প্রকৃতি আমাদের দেয়নি।"
-----হুমায়ূন আহমেদ
"আমাদের মধ্যে সম্মান
করা এবং অসম্মান করার দুটি প্রবণতাই
প্রবলভাবে আছে। কাউকে পায়ের
নিচে চেপে ধরতে আমাদের ভালো লাগে,
আবার মাথায় নিয়ে নাচানাচি করতেও
ভালো লাগে।"
-----হুমায়ূন আহমেদ
ভালোবাসা একটা পাখি। যখন খাঁচায় থাকে তখন মানুষ তাকে মুক্ত করে দিতে চায়। আর যখন খোলা আকাশে তাকে ডানা ঝাপটাতে দেখে তখন খাঁচায় বন্দী করতে চায়।
-----হুমায়ূন আহমেদ
যে নারীকে ঘুমন্ত অবস্থায় সুন্দর দেখায় সেই প্রকৃত রূপবতী।
-----হুমায়ূন আহমেদ
মানব জীবন হলো অপেক্ষার জীবন... !
-----হুমায়ূন আহমেদ
অশ্ব অশ্বারোহীর বন্ধু নয়।
যেমন বন্ধু নয়, মেঘমালার।
বন্ধু হবে এমন যাদের সঙ্গে কখনো দেখা হবে না।
দু'জনই থাকবে দু'জনের কাছে অদৃশ্য।
দৃশ্যমান থাকবে তাদের ভালোবাসা।
-----হুমায়ূন আহমেদ
যা পাওয়া যায়নি, তার প্রতি আমাদের আগ্রহের সীমা থাকে না। মেঘ আমরা স্পর্শ করতে পারি না বলেই মেঘের প্রতি আমাদের মমতার সীমা নেই।
-----হুমায়ূন আহমেদ
মধ্যবিত্য পরিবারের মানুষগুলোই পৃথিবীর আসল রূপ
দেখতে পায়।
-----হুমায়ূন আহমেদ
ভোর বেলায় মানুষের মেজাজ মোটামুটি ভালো থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খারাপ হতে থাকে, বিকাল বেলায় মেজাজ সবচে বেশি খারাপ হয়, সন্ধার পর আবার ভালো হতে থাকে। এটাই সাধারণ নিয়ম।
- তন্দ্রাবিলাস
-----হুমায়ূন আহমেদ
অনেক কিছুই বই পড়ে শেখা যায় না। যে কোনোদিন মিষ্টি খায় নাই, সে কি কোনো বই পড়ে বুঝতে পারবে মিষ্টির স্বাদ কী ! যে কোনোদিন লাল রঙ দেখে নাই, বই পড়ে সে কি বুঝবে লাল রঙ কী?
-----হুমায়ূন আহমেদ
আয়না দেখলে আয়নার সামনে দাড়াতে ইচ্ছা করে । খুবই ক্ষুদ্র ইচ্ছা
এবং নির্দোষ ইচ্ছা । তবু অতি ক্ষুদ্র ইচ্ছাকে প্রশ্রয় দিতে নেই। একবার
প্রশ্রয় দিলে সব ইচ্ছাকে প্রশ্রয় দিতে মন চাইবে ।
গ্রন্থ: দরজার ওপাশে -----হুমায়ূন আহমেদ
বিয়ের আগের রাতে সবমেয়েরই কি এ রকম হয়?
আচ্ছা বাংলাদেশে এমন মেয়ে কি আছে যে বিয়ের আগের রাতে ঘুমের ওষুধ ছাড়া ঘুমুতে পেরেছে?
-----হুমায়ূন আহমেদ
যুদ্ধ এবং প্রেমে কোনো কিছু পরিকল্পনা মতো হয় না।
-----হুমায়ূন আহমেদ
মেয়েরা ব্যাক্তিগত চাহিদার কাছে কখনো পরাজিত হয় না।
-আমিই মিসির আলী
-----হুমায়ূন আহমেদ
মানুষ মানুষের কথা খুব দ্রুত ভুলে যায়।
-----হুমায়ূন আহমেদ
কান্নার সঙ্গে তো সমুদ্রের খুব মিল আছে।
সমুদ্রের
জল নোনা। চোখের জল নোনা। সমুদ্রে ঢেউ
ওঠে।
কান্নাও আসে ঢেউয়ের মতো।
-----হুমায়ূন আহমেদ
"মানুষের কষ্ট দেখাও কষ্টের কাজ"
-----হুমায়ূন আহমেদ
দুঃসময়ে কোনো অপমান গায়ে মাখতে হয় না।
-----হুমায়ূন আহমেদ
তুমি যখন ভাল করতে থাকবে, মানুষ
তোমাকে হিংসা করতে শুরু করবে। না চাইলেও তোমার
শত্রু জন্মাবে।
-----হুমায়ূন আহমেদ
চট করে কারও প্রেমে পড়ে
যাওয়া কোনো কাজের কথা না।
অতি রূপবতীদের কারও
প্রেমে পড়তে নেই। অন্যরা
তাদের প্রেমে পড়বে, তা-ই
নিয়ম।
-----হুমায়ূন আহমেদ
গভীর প্রেম মানুষকে পুতুল বানিয় দেয়।
প্রেমিক প্রেমিকার হাতের পুতুল হন
কিংবা প্রেমিকা হয় প্রেমিকের পুতুল। দুজন
এক সঙ্গে কখনো পুতুল হয় না।
কে পুতুল হবে আর কে হবে সূত্রধর
তা নির্ভর করে মানসিক ক্ষমতার উপর।
মানসিক ক্ষমতা যার বেশী তার হাতেই
পুতুলের সুতা।
-----হুমায়ূন আহমেদ
"মানুষ যখন মৃত্যুর দিকে এগোতে থাকে তখন সে
ব্যাকুল হয়ে পেছনে তাকায়। আমার মনে হয় তাই
হয়েছে। সারাক্ষণই শৈশবের কথা মনে পড়ে। কী
অপূর্ব সময়ই না কাটিয়েছি!"
----- কিছু শৈশব (হুমায়ূন আহমেদ)
মৃত্যুর সময় পাশে কেউ থাকবে না,এর চেয়ে ভয়াবহ বোধ হয় আর কিছুই নেই।শেষ বিদা্য় নেয়ার সময় অন্তত কোনো একজন মানুষকে বলে যাওয়া দরকার।নিঃসঙ্গ ঘর থেকে একা একা চলে যাওয়া যা্য় না,যাওয়া উচিত নয়।এটা হৃদ্য়হীন ব্যাপার।
-----হুমায়ূন আহমেদ
সঠিক সিদ্ধান্তের
ক্ষমতা আছে শুধুই আল্লাহপাকের।
মানুষকে মাঝে মাঝে ভুল
সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রমাণ করতে হয়
যে সে মানুষ।
-----হুমায়ূন আহমেদ
মেয়েদের মন পৃথিবীর সবচেয়ে স্পর্শকর জায়গা। এই মন অনেক
কঠিন বিষয় সহজে মেনে নেয়, আবার অনেক সহজ বিষয়
সহজে মেনে নিতে পারে না।
-----হুমায়ূন আহমেদ
গাধা এক ধরনের আদরের ডাক। অপরিচিত বা অর্ধ-পরিচিতদের
গাধা বলা যাবে না। বললে মেরে তক্তা বানিয়ে দেবে। প্রিয় বন্ধুদেরই
গাধা বলা যায়। এতে প্রিয় বন্ধুরা রাগ করে না বরং খুশি হয়।
-----হুমায়ূন আহমেদ
"মিথ্যা বলা মানে আত্মার ক্ষয়। জন্মের সময় মানুষ বিশাল এক আত্মা নিয়ে পৃথিবীতে আসে। মিথ্যা বলতে যখন শুরু করে তখন আত্মার ক্ষয় হতে থাকে। বৃদ্ধ বয়সে দেখা যায়, আত্মার পুরোটাই ক্ষয় হয়ে গেছে।"
------ তিথির নীল তোয়ালে (হুমায়ূন আহমেদ)
"একজন মানুষকে সত্যিকারভাবে জানার উপায় হচ্ছে
তার স্বপ্নটা জানা।"
------ কবি(হুমায়ূন আহমেদ)
"মেয়েদের আসল পরীক্ষা হচ্ছে সংসার...
ঐ পরীক্ষায় পাশ করতে পারলে সব পাশ!"
--- প্রিয়তমেষু (হুমায়ূন আহমেদ)
আবেগ প্রবণ মানুষ
খুব বোকা হয়ে থাকে
তারা খুব সহজেই....
মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলে।
তাই তারা প্রতারিত হয় বেশি,
কষ্টও পায় বেশি।
-----হুমায়ূন আহমেদ
মানুষ নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করে। সে চায় অন্যরা তাকে খুঁজে বের করুক।
-----হুমায়ূন আহমেদ
একজন প্রেমিকের কাছে চন্দ্র হলো তার প্রেমিকার মুখ।
আর জোছনা হলো প্রেমিকার দীর্ঘশ্বাস।
-----হুমায়ূন আহমেদ
ভালোবাসা ও ঘৃনা দুটাই মানুষের চোখে লিখা থাকে !
''ঘেঁটু পুত্র কমলা'' (হুমায়ূন আহমেদ)
মাঝে মাঝে আত্মার সম্পর্ক রক্তের সম্পর্ককেও অতিক্রম করে।
-----হুমায়ূন আহমেদ
গল্প উপন্যাস হল অল্প বয়সী মেয়েদের মাথা খারাপের মন্ত্র।
-----হুমায়ূন আহমেদ
বয়সকালেই মানুষ ছোট খাট ভুল করতে থাকে।
ছোটখাটো ভুল করা যখন অভ্যাস হয়ে যায় তখন করে বড়
ভুল !
------ জোছনা ও জননীর গল্প;(হুমায়ূন আহমেদ)
কখনো কখনো তোমার মুখটা বন্ধ রাখতে হবে। গর্বিত
মাথাটা নত করতে হবে এবং স্বীকার
করে নিতে হবে যে তুমি ভুল। এর অর্থ তুমি পরাজিত
নাও, এর অর্থ তুমি পরিণত এবং শেষ বেলায় জয়ের
হাসিটা হাসার জন্য ত্যাগ স্বীকারে দৃঢ়
প্রতিজ্ঞ।
-----হুমায়ূন আহমেদ
নামে কিছু আসে যায় না। আসে যায় কর্মে। যিশুখ্রিষ্টকে বিশুব্রিষ্ট ডাকলেও তাঁর যিশুত্ব কিছুমাত্র কমবে না।
-----হুমায়ূন আহমেদ
কাজল ছাড়া মেয়ে দুধ ছাড়া চায়ের মত।
-----হুমায়ূন আহমেদ
আমরা জানি একদিন আমরা মরে যাব
এই জন্যেই পৃথিবীটাকে এত সুন্দর লাগে।
যদি জানতাম আমাদের মৃত্যু নেই
তাহলে পৃথিবীটা কখনোই এত সুন্দর লাগতো না।
-----হুমায়ূন আহমেদ
প্রতি পূর্ণিমার মধ্যরাতে একবার আকাশের দিকে তাকাই।
গৃহত্যাগী হবার মত জোছনা কি উঠেছে? বালিকা ভুলানো
জোছনা নয়। যে জোছনায় বালিকারা ছাদের রেলিং ধরে
ছুটাছুটি করতে করতে বলবে - ও মাগো,কি সুন্দর চাঁদ।
নব দম্পতির জোছনাও নয়। যে জোছনা দেখে স্বামী গাঢ়
স্বরে স্ত্রীকে বলবেন - দেখো দেখো চাঁদটা তোমার মুখের
মতই সুন্দর। কাজলা দিদির স্যাঁতস্যাতে জোছনা নয়।
যে জোছনা বাসি স্মৃতিপূর্ণ ডাস্টবিন উল্টে দেয় আকাশে।
কবির জোছনা নয়। যে জোছনা দেখে কবি বলবেন - কি
আশ্চর্য রূপার থালার মত চাঁদ।
আমি সিদ্ধার্থের মত গৃহত্যাগী জোছনার জন্য বসে আছি।
যে জোছনা দেখা মাত্র গৃহের সমস্ত
দরজা খুলে যাবে। ঘরের ভিতর ঢুকে পড়বে বিস্তৃত প্রান্তর।
প্রান্তরে হাঁটব, হাঁটব আর হাঁটব-
পূর্ণিমার চাঁদ স্থির হয়ে থাকবে মধ্য আকাশে।
চারদিক থেকে বিবিধ কণ্ঠে ডাকবে-আয় আয় আয়।
বইয়ের নামঃ কবি ---হুমায়ূন আহমেদ
স্যার আপনি এত বড় মাপের লেখক ছিলেন? যে আপনাকে নিয়ে কিছু লিখবো! সে সাহস হয় নি, আপনি একধারে ছিলেন কথা সাহিত্যিক, লেখক, কবি নাট্য নির্মাতা, পরিচালক!
এমন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব নিয়ে সম্ভবত খুব কম মানুষী পৃথিবীতে জন্মায়...
আপনার প্রতিটা জন্মদিন আপনাকে ছাড়া পালন করাটা ভাবা যায় না। তবুও জীবন থেমে থাকে না, আপনি যেখানে আছেন ভাল থাকবেন স্যার।
আগের পোষ্ট :- হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কিছু প্রিয় উক্তি....আর অগ্রিম শুভ জন্মদিন স্যার।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৬