জিনিসটা শুরু করেছিলেন আনিসুল হক স্যার। আমি বিশ্বাস করি তিনি নিজে নাস্তিকও নন, কাজটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেও করেন নাই। কিন্তু আজকাল ফেসবুকে অনেক স্বঘোষিত নাস্তিকই কাজটি করছে। তা হল, বাক্যের আগে 'আর' এবং 'নিশ্চয়' শব্দটা ব্যবহার করছে। উদাহরণস্বরুপ আমি দুইটা বাক্য লিখছি, 'আর তারা আমার স্ট্যাটাসে লাইক দেয় না। নিশ্চয় আমি লাইক পাবার যোগ্য!' যাইহোক, আপনারা সকলেই জানেন, এটা সকল মুসলিমের কাছে স্বীকৃত যে কুরআনের মত শ্রুতিমধুর এবং অসাধারণ ভঙ্গিমায় কোন গ্রন্থ লেখা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। কিন্তু স্রেফ বাংলা বাক্যের আগে 'আর' এবং 'নিশ্চয়' শব্দটি ব্যবহার করে কোন কোন নাস্তিক প্রমাণ করার চেষ্টা করছে যে তাদের পক্ষেও সম্ভব কুরআনের মত ভাষায় সাহিত্য রচনা করা (আস্তাগফিরুল্লাহ)। এ থেকে তারা আরও প্রমাণ করতে চায়, কুরআন আল্লাহ প্রদত্ত পবিত্র গ্রন্থ নয়, মানুষের পক্ষেই কুরআনের আঙ্গিকে লেখা সম্ভব (আস্তাগফিরুল্লাহ)।
কি ভয়ানক এবং হাস্যকর চিন্তা! আপনারা সকলেই জানেন, কুরআন নাজিল হয়েছে আরবি ভাষায় এবং আরবিতে কুরআনের অনুকরনে পূর্বে বহুবার সাহিত্য রচনার চেষ্টা হলেও এখন মানুষ হাল ছেড়ে দিয়েছে। কারণ, কুরআনের মত ভাষায় ক্রমাগত লিখে যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভবপর হয় নাই। এ থেকেই কুরআনের মহত্ব প্রকাশ পায়। অন্যদিকে, প্রথম বাংলায় কুরআন অনুবাদ করেন ভাই গিরিশচন্দ্র। এবং কিছু আরবি শব্দের যথার্থ বাংলা না পেয়েই তিনি অধিকাংশ আয়াতের শুরুতে ভাবগত অর্থে 'আর' এবং 'নিশ্চয়' ব্যবহার করেছেন। সুতরাং এট ভাই গিরিশচন্দ্রের নিজস্ব লেখনি, আল্লাহ প্রদত্ত বাংলা লেখনি নয়। সে ক্ষেত্রে ইচ্ছা করলেই অনেকে এই বাংলা অনুবাদের আঙ্গিকে অনেক কিছু লিখতে পারেন। কিন্তু তাতেই কি কুরআনের অবমাননা করা হবে? কুরআনের ভাষা আরবির জোর কি এতটাই ঠুনকো। তাদের বলছি যারা কুরআনের ভাষাকে বিদ্রুপের চেষ্টায় আছেন, আপনারা কেবলই বাংলা ভাষায় কিছু অর্থহীন কথাবার্তা লিখছেন। কিন্তু আপনাদের সেই যোগ্যতা নেই যে আপনারা মহান আল্লাহর স্বয়ং নাজিলকৃত বাকভঙ্গিমাকে নকল করবেন বা বিদ্রুপ করবেন। আর যারা ইসলামের পক্ষে, তাদের বলছি, নাস্তিকেরা এসব কাজ করছে কেবলই আপনাদের উত্যক্ত করতে। কিন্তু আদতে তারা যে আল্লাহর বাণীকে ছোট করতে পারছে না বা তা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়, তার প্রমাণ তো এই লেখার মাধ্যমেই পেলেন। সুতরাং, আপনাদের কাছে অনুরোধ, নাস্তিকদের ছেলেমানুষি ফাঁদে পা দেয়ার বা তাদের সাথে কুরুচিপূর্ন বিতর্কে জড়ানোর কোনই দরকার নাই। বরং তাদের ওপেন চ্যালেঞ্জ জানান, পারলে আরবিতে কুরআনকে অনুকরণ করে একটা বাক্য রচনা করে দেখাক।