>>
আসিফ নজরুলকে চিনতে পড়ুন শাহরিয়ার কবিরের "জাহানারা ইমামের শেষ দিনগুলি" (১৯৯৫) লিখেছেনঃ স্বপ্নমগ্ন
>>
আসিফ নজরুলঃ এক রং পাল্টানো গিরগিটিলিখেছেন: নিঝুম মজুমদার
>>
কালের কন্ঠ ২৭ আগস্ট ২০১০ তারিখে জামাতের ঢাকা মহানগরী আমির রফিকুল ইসলামের গ্রেফতারের একটি খবর দেয়। তাকে ধরার সময় তার কাছ থেকে নানা কাগজপত্র জব্দ করে পুলিশ। উদ্ধার করা নথি অনুসারে জামাতের 'নিজস্ব' বিশিষ্টজনদের তালিকায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, কমরেড সাইফুল হক ও ফরহাদ মজহার।
------------------------------------------------------------
মূল খবর:
যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে জামায়াতের ১১ কৌশল!তিন দিনের রিমান্ডে রফিকুল: - মাসুদ কার্জন
যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম ব্যাহত করতে বিশেষ গোপন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে জামায়াত ইসলামী। এ লক্ষ্যে 'বেসরকারি পর্যায়ের যুদ্ধাপরাধ অনুসন্ধান কমিটি' ব্যানারে একটি কমিটি গঠনের পাশাপাশি ১১ দফার কর্মপরিকল্পনা সাজিয়ে কাজও শুরু করেছে তারা। মুুক্তিযুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন কিন্তু এখন মহাজোট সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয়, এরকম কয়েকজন ডাকসাইটে রাজনৈতিক নেতাকে ব্যানারে ভেড়ানোর চেষ্টা তাদের অন্যতম লক্ষ্য। এসব নেতার একটি তালিকা তৈরি করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার গ্রেপ্তার অভিযানের সময় জামায়াত মহানগর আমির রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র জব্দ করেছে পুলিশ। জামায়াতের এই নেতা নেপথ্যে থেকে কথিত এই কমিটির সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছিলেন বলেও পুলিশ দাবি করেছে। রফিকুল ইসলামকে রমনা থানায় দায়েরকৃত ফারুক হত্যা মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকানোর পরিকল্পনা সংবলিত কিছু কাগজপত্র পাওয়া গেছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১১ দফা কী কী :
উদ্ধারকৃত কাগজপত্র অনুসারে ১১ দফা কর্মপরিল্পনার মধ্যে প্রথমেই বলা হয়েছে, জামায়াত তাদের নিজের মতো করে তথ্য-প্রমাণসহ ৭৭ যুদ্ধাপরাধীর একটি তালিকা তৈরি করবে। আওয়ামী লীগ, মহাজোটের শরিক কোনো দল বা বামপন্থী দলগুলোর মধ্য থেকে নেতাদের খুঁজে বের করে এ তালিকা করা হবে। এসব নেতার মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা গণমাধ্যমে প্রকাশের পাশাপাশি প্রচারপত্র তৈরি করে জনসাধারণের মধ্যে বিলি করা হবে। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে মন্ত্রীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের ওপর ভিডিও রিপোর্ট তৈরি করে তা প্রচার করা হবে।
এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যু নিয়ে ঘন ঘন সেমিনার করা হবে। যারা সরাসরি জামায়াতের রাজনীতি করেন না এরকম বিশিষ্টজনদের এসব সেমিনার বা আলোচনায় হাজির করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিলেও কোনো কারণে এখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহজোট সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয়_এরকম ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের সঙ্গে সুসম্পর্ক করে সেমিনারে টানতে হবে। এ ক্ষেত্রে জামায়াতের লক্ষ্য হচ্ছে_বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও শাহাজাহান সিরাজ। উদ্ধার করা নথি অনুসারে জামায়াতের 'নিজস্ব' বিশিষ্টজনদের তালিকায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, কমরেড সাইফুল হক ও ফরহাদ মজহার। সেমিনারে দেওয়া তাঁদের বক্তব্য ধারণ করে বুকলেট ও ভিসিডি তৈরি করে ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করার কথা রয়েছে কর্মপরিকল্পনায়।
জামায়াতের গোপন পরিকল্পনায় বলা হয়, বর্তমানে যাঁদের যুদ্ধাপরাধী বলা হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে অনেকের ছবি আছে_ যেগুলো বিভিন্ন সভা-সেমিনার থেকে ধারণা করা। এসব ছবির মধ্যে আছে স্বাধীনতার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে গোলাম আযম, বিভিন্ন সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে নিজামী, মুজাহিদের সঙ্গে রাশেদ খান মেনন, জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ভিডিও বা স্থিরচিত্র, ইসলামী ঐক্যজোটের (একাংশ) চেয়ারম্যান মিজবাউর রহমানের সঙ্গে নিজামীর ছবি। এসব ছবি বা ভিডিও সংগ্রহ করে তা প্রচারপত্র ও ভিডিও আকারে তৈরি করে তা বিলি করার কথা রয়েছে কর্মপরিকল্পনায়। রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে পাওয়া নথিতে আরো বলা হয়, বর্তমান আওয়ামী লীগের যেসব নেতা যুদ্ধাপরাধ ইস্যু নিয়ে 'অতিউৎসাহ' দেখাচ্ছেন, তাঁদের তালিকা ও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রচার করতে হবে।
রিমান্ডে রফিকুল :
আমাদের আদালত প্রতিবেদক জানান, জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলামকে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে ফারুক হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক জিয়া উজ জামান। শুনানি শেষে ঢাকার তিন নম্বর অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আলী হোসাইন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে দেন। এ ছাড়া উত্তরা থানায় ১৯ এপ্রিল দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
২৭ জুন বিএনপির ডাকা হরতালের আগের রাতে গাড়িতে আগুন দেওয়া হলে পথচারী ফারুক গুরুতর অগি্নদগ্ধ হয়ে পড়ে মারা যান। এ ঘটনায় রমনা থানায় হত্যা মামলা করা হয়।