গোমট একটা সময় পার করছি। আব্বা'র কোন খবর আমরা জানি না। ছোট কাকা আব্বা'র খবর আনতে ঢাকা'য় আসতে চেয়েছিল, মা রাজী হয়নি। "তোর বড় ভাই কে হারাইছি, তোকে মারার জন্য ঢাকা'য় পাঠাতে পারবো না"। কঠিন এ কথাগুলো কত সহজেই না মা বলে ফেলল। যুদ্ধ মনে হয় মানুষ কে অনুভুতি শুন্য বানিয়ে ফেলে।
গ্রামে আমাদের 6/7 দিন কেটে গেছে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা ঠান্ডা। ছোট কাকা ঢাকা'য় রওনা দিলেন, আব্বার খোজে। তাছাড়া সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে যোগ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ছোট কাকাও আব্বার সাথে এটনর্ী জেনারেল অফিসে চাকরী করতেন। অফিসে যেয়ে উভ্রান্ত অবস্থায় আব্বা'র সাথে কাকার দেখা হলো। দুই ভাইয়ের গড়াগড়ি দিয়ে সে কি কান্না ! আব্বা ভেবেছিলেন আমরা মারা গেছি, আর আমরা ভেবিছি আব্বা মারা গেছেন। কাকা কে নিয়ে আব্বা ঐ দিনই গ্রামে চলে আসলেন আমাদের সাথে দেখা করতে।
এপ্রিল'71 এর শেষের দিকে আমরা ঢাকায় চলে আসলাম। আজিমপুর কলোনী তখন মোটামুটি নিরাপদ ছিল। সম্ভবত পাকিস্তানী আর্মিরা সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কে নিজেদের পক্ষের লোক মনে করতো ! পাক-হানাদাররা অন্য সব জায়গায় অত্মাচার-নিপীরন করলেও এখানে তেমন কিছু করতে দেখিনি। তবে সবসময় খুব টহল দিতো। ছোট কাকা দিনে সরকারী চাকরী করতেন আর রাতে 'গন-সঙ্গীত' গেয়ে এলাকার যুবকদের সংগঠিত করতেন। আব্বা সম্মুখ যুদ্ধে যেতে পারেননি ঠিকই তবে অর্থ, তথ্য, খাবার, ওষুধ ইত্যাদি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন।
- অসমাপ্ত -
[link|http://www.somewhereinblog.net/jhorohowa/post/28704598| gv