somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধু সমাচার

২২ শে মার্চ, ২০০৮ রাত ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বন্ধু কি খবর বল?
কতোদিন দেখা হয়নি !
_______________________


আমি মানুষ হিসেবে বরাবরই অর্ন্তমুখী। না শব্দটা যুতসই হলো না। আমি আসলে অনেকটা শামুক টাইপের মানুষ। নিজের খোলস ভেঙ্গে বের হতে পারি না, শুধু নিজের ভেতর গুটিয়ে থাকি। আমার বন্ধু বলতেও আছে হাতে গোনা কয়েকজন। তবুও কেন জানি দেশে ফেরার পরে সেই কয়েকজনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি।


ঘটনা : ১
_____

আমার ঘনিষ্ট বন্ধুদের একজন হলো আলম। অন্য বন্ধু মারফত খবর পাই, বদমায়েশটা বিয়ে করেছে। বউ তার ইয়ারমেট, চট্টগ্রাম মেডিকেলেরই। শালা যে বিয়ের দাওয়াত দেয় নাই মূলত: সেই উদ্দেশ্যে তার চৌদ্দগুষ্ঠী উদ্ধার করার জন্যই ফোন লাগাই সন্ধ্যার দিকে। রিং হতে থাকে রিসিভ করে না। আবার রিং দেই। এবার একটা কোমল কন্ঠের স্বর ভেসে আসে

- হ্যালো স্লামালাইকুম।
--ওয়াইলাইকুম আসালাম, আমি আলমের ফ্রেন্ড, অভ্র।
- আমি মিসেস আলম বলছি। ওতো এখন নামাজে।

আমি তো রীতিমত আকাশ থেকে পড়লাম। যে ছেলে কথা বলার সময় প্রতি তিনটা শব্দের পরে একটা অবধারিত গালি ব্যবহার করে সে এখন নামাজ পড়ছে। এর আগে ঈদের দিনেও তাকে নামাজ পড়তে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। আমি তোতলাতে তোতলাতে বললাম-

-- ভাবী, নাউজুবিল্লাহ বলবো, না আলহামদুলিল্লাহ বলবো বুঝতে পারছি না।
- কেন? আপনার বন্ধু ভালো হয়ে যাচ্ছে সেটা কি ভালো নয়?
-- তা ঠিক। তার মানে আপনি স্বীকার করছেন, সে আগে খারাপ ছিলো?
- হ্যাঁ, তা একটু তো ছিলো।

এরপর আরো কিছুক্ষণ ভাবীর সাথে গল্প হয় কিন্তু আমার বন্ধুর নামাজ শেষ হয় না। শেষে পরে ফোন করবো বলে লাইন কেটে দিই।

----------------------------
ঘটনা : ২
_______________

রোজা তখন প্রায় শেষ দিকে। হঠাৎ করে পুরনো বন্ধুদের কাছ থেকে ইফতার পার্টির দাওয়াত পাই। এক আড্ডায় অনেক পরিচিতজনের সাথে দেখা হবে, সো এই চান্স মিস করা ঠিক হবে না ভেবে সাথে সাথে রাজী হয়ে যাই। মহাখালীর আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারে ইফতারের আয়োজন হয়। অনেক পুরনো বন্ধুদের মাঝে জাওয়াদকে দেখে একটু দৃষ্টিভ্রম হয়। কারণ ভার্সিটিতে থাকতে তার মুখ ভর্তি দাড়ি ছিলো। এখন দেখি সব হাওয়া। বাবুকে জিজ্ঞেস করি,

- কি ব্যাপার, আমাদের মৌ-লোভী সাহেবের দাড়ি-টাড়ি গেলো কই? জে.এম.বি. সন্দেহে ড়্যাব-ট্যাব ধরছিলো নাকি?
-- আরে না, ঢাকা ভার্সিটির হাওয়া লাগছে না গায়ে, তাই ভেক পাল্টায়া ফেলছে। ও তো এখন ঢাবিতে এম.বি.এ. করতেছে।
- ও আচ্ছা। তা শুধু কি গেটআপ চেইঞ্জ হয়েছে, নাকি স্বভাবও চেইঞ্জ হয়েছে?
-- ওটা কি এতো সহজে বদলানো যায়?

আমরা গেলাম জাওয়াদের কাছে। বাবু প্রথমে শুরু করে-
- এসব কি শুনতাছি দোস্ত? তুমি নাকি ডুবে ডুবে জল খাইতেছ?
-- কি শুনতেছ বলো?
- শুনলাম, তুমি নাকি এক মাইয়ার প্রেমে পইড়া দাড়ি ফালাইয়া দিছো? কেন দোস্ত? চুমা খাইতে সমস্যা হয় বইলা?
-- কি সব বেত্তমিজি কথা বলতেছ। আল্লাহ তোমার হেদায়েত করুক। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেছি- তিনি তোমারে একটু হায়া শরম দিক।
- ও আচ্ছা, তুমি করতে পারো আর আমি কইতে গেলে হাজী সাহেবের মুখটা খারাপ না? তা, আল্লাহর কাছে চাইলে কি সব পাওয়া যাইবো?
-- অবশ্যই যাবে। তুমি সৎভাবে চাও, দেখো পাও কিনা।
- ধুর মিয়া, আর ভাব .....ইয়ো না। তুমি যে আমার কাছে নর্থ-সাউথের মাইয়াদের মোবাইল নাম্বার চাইছিলা! কেন, ওইটা আল্লাহর কাছে চাইতে পারো নাই?আল্লাহ তো তাইলে তোমার ফোনবুক ভরাইয়া দিতো।

আমাদের তখন হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যায়। জাওয়াদের মুখেও মিটিমিটি হাসি।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সময়ের স্রোতে ক্লান্ত এক পথিক তবু আশায় থাকি …

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:০৫


হালকা হাওয়ায় ভেসে আসে গত সময়ের এলবাম
মাঝে মাঝে থেমে যায়, আবার চলে তা অবিরাম
সময় তো এক নদীর মতো, বহমান অবিরত,
জল-কণা আর স্মৃতি বয়ে নেয় যত তার গত।

একটু... ...বাকিটুকু পড়ুন

মত প্রকাশঃ ইতিহাস কি বিজয়ীরাই লেখে?

লিখেছেন জাদিদ, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩২

"বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস রচনার সমস্যা" -বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আলী রীয়াজ একবার বলেছিলেন, ‘ইতিহাসের সঙ্গে ক্ষমতার একটা সম্পর্ক আছে। সে ক্ষমতায় যারা বিজয়ী হয়, তারাই ইতিহাস রচনা করে। পরাজিতরা ইতিহাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধু নাম আর কেউ মুছতে পারবেনা।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০


২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপনণের পরপরই ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মহাকাশে আজ উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। আজ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশবিরোধী আদানি চুক্তি ও ব্যাড পলিটিক্সের খপ্পরে বাংলাদেশ!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৪


বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ভারতের আদানি গ্রুপের সাথে ২০১৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য চুক্তি করেন।ভারতের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত গোড্ডা পাওয়ার প্লান্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

“বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো উচিত হয়নি “এই কথা রিজভী কোন মুখে বলে ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫১



অবাক হয়ে রিজভীর কথা শুনছিলাম উনি কি নিজেকে মহান প্রমান করার জন্য এই কথা বললেন নাকি উনি বলদ প্রকৃতির মানুষ সেটাই ভাবতেছি। উনি নিশ্চই জানেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×