বিএনপিতে সন্দেহ ও অবিশ্বাস
বিএনপিতে সন্দেহ ও অবিশ্বাসযাযাদি রিপোর্ট একই ঘটনায় বিএনপির তিন নেতাকে মুক্তি ও অন্যদের একাধিক মামলায় জড়ানোর ঘটনায় দলটিতে নতুন করে সন্দেহ-অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। সোমবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২০ কেন্দ্রীয় নেতাসহ দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। ১৯ ঘণ্টার ব্যবধানে রহস্যজনকভাবে মির্জা ফখরুল, সাদেক হোসেন খোকা ও আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে ছেড়ে দেয়া হয়। আর যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদীন ফারুকসহ ১৫৪ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাওয়া হয়। পরে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠান। একই ঘটনায় আটক হওয়ার পরও শীর্ষস্থানীয় তিন নেতাকে ছেড়ে দেয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মহল ও নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয় কানাঘুষা। একই অপরাধের ফল দুই রকম কেন হলো তা নিয়ে নেতাকর্মীরা প্রশ্ন তোলেন। বিগত সময়ের মতো আবারো সমঝোতা হয়েছে কিনা তাও জানতে চান কেউ কেউ। নাকি তাদের মুক্তির নেপথ্যে অন্য কোনো বিষয় রয়েছে? এ নিয়ে ইতোমধ্যেই মুক্তিপ্রাপ্ত নেতাদের অতীত কর্মকা-েরও বিচার বিশ্লেষণ শুরু করেছে। কেউ কেউ আবার বিষয়টিকে দেখছেন সন্দেহের চোখে। আবার অনেকে বলছেন, কিভাবে দলের মহাসচিব এত নেতাকর্মী রেখে একা বেরিয়ে এলেন? এ তিন নেতার মুক্তি নিয়ে মঙ্গলবার সারাদিনই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়জুড়ে ছিল সমালোচনা আর বিচার-বিশ্লেষণের ঝড়। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা জানান, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যখন পুলিশ অভিযান চালায় এবং সাধারণ কর্মীদের ওপর চড়াও হয় তখন নেতাদের উচিত ছিল পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামলানো। প্রয়োজনে কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া। কিন্তু তা না করে নেতারা মহাসচিবের কক্ষে ঢুকে ভেতরে থেকে ছিটকারী লাগিয়ে দেন। ফলে অনেক কর্মীকে অমানবিকভাবে পিটিয়ে গাড়িতে উঠাতে সাহস পায় পুলিশ। এছাড়া মঙ্গলবার দুপুরে যখন গোয়েন্দা পুলিশ মির্জা ফখরুল, সাদেক হোসেন খোকা ও আলতাফ হোসেনকে ছেড়ে দেয়, তখন বাকিদের মুক্ত না করে মির্জা ফখরুলের ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে আসা উচিত হয়নি। কিছু করার না থাকলে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মতো ডিবি কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় শুয়ে বা বসে পড়ে বাকিদের মুক্ত করার দাবি জানাতে পারতেন তিনি। কিন্তু তিনি কিছুই করেননি। সাংবাদিকরাও মঙ্গলবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে সমঝোতায় মুক্তি পেলেন কি না বলে মির্জা ফখরুলকে প্রশ্ন করেন। জবাবে তিনি বলেন, কোনো রকম আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। এসব বলে সরকার বিরোধী দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়। মির্জা ফখরুল দাবি করেন, জনগণের চাপে সরকার তাকে এবং মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা ও সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে আন্দোলন আন্দোলন খেলছে দলের এক শ্রেণীর নেতা। আর এর খেসারত দিচ্ছে সাধারণ কর্মীরা। বিএনপির নেতাকর্মীরা যখনই জেল-জুলুমের শিকার হচ্ছেন, তখনই বিতর্কিত নেতারা থাকছেন বহাল তবিয়তে। কোনো মামলা ও হামলা তাদের ধারে কাছে আসতে পারছে না।
Click This Link