somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামায়াতের কাছে জনগন স্বার্বভৌম নয়ঃ ফলে তাদের অগনতান্ত্রিক গঠনতন্ত্র অনুমোদন না দিয়ে নির্বাচন কমিশন তা প্রত্যাখান করেছে ...

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জনগনের স্বার্বভৌমত্ব অস্বীকার করে, জামায়াত শিবির গং বাংলাদেশে মওদুদীর স্বার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়...!!!

বাংলাদেশের রাজনীতি কি জামাত শিবিবের রাহুর গ্রাস থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে? এতটা ভাবা যদি খুব উচ্চাকাঙ্খী স্বপ্ন হয়ে যায়... অন্ততঃ ৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর সাক্ষাত দোসর এই দলটি এই মুহুর্তে যে কিছুটা বিপদে আছে- এতে কোন সন্দেহ নাই। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশে জামাতের রাজনীতি করা সম্ভবতঃ কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

এই মুহুর্তে গনপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশএর আওতায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন করার প্রক্রিয়া চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাধ্যতামুলক, এটা না করলে- তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবে না। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো জামায়াতে ইসলামীও তাদের গঠনতন্ত্র অনুমোদনের জন্য পেশ করেছিল নির্বাচন কমিশনে। খবরে প্রকাশ জামায়াতের বর্তমান গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশন আমলে না নিয়ে তা সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থান নেওয়া জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিয়োজিত সংগঠন হিসাবে নিজেদের দাবী করে। আল্লার নির্দেশিত বিধি বিধান ছাড়া অন্য কোন কিছুর প্রতি তাদের কোন আনুগত্য নাই, মানুষ রচিত যে কোন আইন বিধানের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। আর ঠিক এই কারনেই নির্বাচন কমিশন জামায়াতের গঠনতন্ত্রে উল্লেখিত ধারাসমুহ বিবেচনায় নিয়ে জামায়াতের গঠনতন্ত্র অনুমোদন না করে ফিরিয়ে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র সুস্পষ্ট ভাবে এমন কিছু বক্তব্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে, যা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করতে গেলে তা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মুল ভিত্তির সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে উঠবে।

জামায়াতের গঠনতন্ত্রের মৌলিক আকিদার ধারা ২এর ৫এ বলা হয়েছেঃ
আল্লাহ ব্যতীত অপর কাহাকেও বাদশাহ, রাজাধিরাজ ও সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক মানিয়া লইবে না, কাহাকেও নিজস্বভাবে আদেশ ও নিষেধ করিবার অধিকারী মনে করিবে না, কাহাকেও স্বয়ংসম্পুর্ণ বিধানদাতা ও আইন প্রণেতা মানিয়া লইবে না এবং আল্লাহর আনুগত্য ও তাহার দেওয়া আইন পালনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয় এমন সকল আনুগত্য মানিয়া লইতে অস্বীকার করিবে।

জামায়াতের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তাদের গঠনতন্ত্র ঘেঁটে এ কথা পরিস্কার, আল্লাহর নির্দেশিত বিধি বিধানের বাইরে তাদের কোন অবস্থান নাই। শরীয়া এবং সুন্নাহ যা অনুমোদন করে না, তারা তা গ্রহন করতে পারে না। আমরা এটা পরিস্কার ভাবে জানি যে বাংলাদেশে শরীয়া আইন এখনও চালু নয়। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় নিশ্চয় আল্লাহর আনুগত্য ও তাহার দেওয়া আইন পালনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয়। তা হলে এ অবস্থায় আমাদের সর্বোচ্চ বিচারালয় নিয়ে জামায়াতের আনুগত্য আমরা কি আশা করতে পারি?

জামায়াতের কথিত আল্লাহর নির্দেশিত বিধি বিধানের মধ্যেও বিস্তর ফাঁকফোকর আছে, এটাও এ সুযোগে আমাদের মাথায় রাখা উচিত। আমরা জানি, আখেরি নবুয়তের জমানার পর মানবজাতির জন্য আল্লাহর তরফ থেকে আর কোন বাণী নির্দেশ আকারে নাজিল হবে না। আমাদের পথ খুঁজে নিতে হবে এ যাবত নাজেলকৃত ঐশী গ্রন্থের নির্দেশাবলীর ব্যাখার ভেতর থেকে। এখন জামায়াত যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় (আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুক) অধিষ্টিত হয়, তবে আমরা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, জামায়াতের নিজস্ব বিধি বিধানই হবে আল্লাহর নির্দেশিত বিধি বিধান, এ যাবত নাজেলকৃত ঐশী গ্রন্থের নির্দেশাবলীর ব্যাখা মানেই হবে তাদের নেতা মওদুদীর প্রদত্ত ব্যাখা, বাংলাদেশের ইসলাম হবে গোলাম আযম-নিযামি গংএর তথাকথিত ইসলাম।

নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জামায়াতের গঠনতন্ত্র প্রত্যাখানের ভিতর দিয়ে আরও কিছু জ্বলন্ত প্রশ্ন আমাদের কাছে উঠে এসেছে। বাংলাদেশে রাজনীতি করা, নির্বাচনে সামিল হওয়ার প্রশ্ন দূরে থাক- আমাদের সাংবিধানিক ভিত্তি তথা গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সমুহের প্রতি নুন্যতম
আনুগত্য না রেখে, দিনের পর দিন জামায়াত কিভাবে তার কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে — এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়াও সমভাবে জরুরী হয়ে উঠেছে।

আমাদের গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোর ভিতরে গনতান্ত্রিক আদর্শের বাইরে কোন কিছুর চর্চা আমরা কি ভাবে করতে দিতে পারি? গনতান্ত্রিক আন্দোলনের দোহাই দিয়ে এ যাবৎ জামায়াত তাদের কার্যক্রম যে ভাবে চালিয়ে এসেছে, তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। নিশ্চিত ভাবেই জনগনের সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করার আড়ালে জামায়াতের আমীরদের স্বার্বভৌমত্ব আমরা মেনে নিতে পারি না।

আমরা বিশ্বাস করি সমাজে এমন কোন কার্যক্রমের অনুশীলন করা গনতন্ত্র অনুমোদন করতে পারে না, যা গনতন্ত্রের মুল সুর, যার উপর গনতন্ত্র দাঁড়িয়ে থাকে, সেই জনগনের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করে, তাকে অস্বীকার করতে চায়। গনতন্ত্র মানে স্বাধীন ভাবে মুক্ত চিন্তার অধিকার, গনতান্ত্রিক মত প্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠার অজুহাত দিয়েও গনতন্ত্র এই আত্মধ্বংশী ভুমিকা নিতে পারে না। গনতন্ত্রে সকল ক্ষমতার উৎস জনগনের সার্বভৌম ইচ্ছা, অন্য কোন গোষ্ঠীর মনগড়া ব্যাখার কোন স্থান, গনতন্ত্রে নাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:৫৯
১২টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×