গত ডিসেম্বর থেকে সিলেট জেলার জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাটের ১০টি স্থানে ভারত-বাংলাদেশে হাজার হাজার একর ভূমি নিয়ে জরিপ শুরু হয়। এ জরিপ নিয়ে ভারত প্রথমে অনীহা দেখালেও পরে আগ্রহী হয়। গত সপ্তাহ থেকে জরিপ নতুন মোড় নেয়। গত সপ্তাহের শুরুতেই পাদুয়ায় সীমান্তের জিরো পয়েন্টে জরিপ শুরু হলে স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ করে। এরপর তামাবিল সীমান্তে জরিপে গেলে বাধা দেয় স্থানীয় লোকজন। প্রায় পাঁচ দিন ধরে বাংলাদেশের স্থানীয় লোকজনের বিক্ষোভের কারণে জরিপ চালাতে পারছে না বাংলাদেশ ও ভারতের জরিপকারীরা। এ পরিস্থিতি সিলেটের জেলা প্রশাসক আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাসিম গতকাল বিকালে জৈন্তাপুর উপজেলা মিলনায়তনে সীমান্তবাসীদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। এ মতনিমিয় সভায় প্রশাসন ছাড়াও উপজেলা ও ইউনিয়ন প্রতিনিধি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিকাল ৫টায় শুরু হয় অনুষ্ঠান হয়।
জেলা প্রশাসকের বক্তব্যের পর পর উপস্থিত কয়েক জন বক্তব্য রাখেন। জৈন্তাপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক সাহেদ আহমদ জানান, সীমান্ত এলাকায় জরিপ চলছে। এ অবস্থায় একটি পক্ষ সীমান্ত পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইছে। তিনি জানান, কিছু কিছু মিডিয়া এ নিয়ে অতিরঞ্জিত করছে। এরপর মাইক্রোফোন নিয়ে বক্তব্য দিতে যান উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ম ম আলম মাসুক। তিনি তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা দিলদার হোসেন সেলিম সীমান্ত জরিপ বন্ধ করতে উস্কানি দিচ্ছেন। দিলদার হোসেন সেলিমের নাম প্রকাশ হওয়ার পর পরই গোটা মিলনায়তনে হৈ-হুল্লোড় শুরু হয়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাদের পাশে বসা মাওলানা আবদুল খালিক প্রতিবাদ জানান। তারা দু’জনের মধ্যে এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি শুরু হলে ছাত্রলীগ নেতা মাসুক চড় মারেন মাওলানাকে। (একজন বাপ-দাদার বয়স্ক মানুষকে চড় মারা কোন প্রকার অসভ্যতা তা ভাবতেই গা শিউড়ে উঠছে) এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি। প্রায় ১০ মিনিটব্যাপী চেয়ার ছোড়াছুড়ির সময় সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য অতিথি মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের চোখের সামনেই কক্ষের ভেতরেই চলে মারামারি। সংঘর্ষে কয়েক জন আহতের মধ্যে মাওলানা আবদুল খালিক গুরুতর আহত হন। তাকে জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কক্ষের ভেতরের সংঘর্ষ এক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে উপজেলা প্রশাসন চত্বরে।
সুত্র- View this link