সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক।
বিভিন্ন বাণিজ্য সংস্থা থেকে পুলিশের ‘ডোনেশন’ (চাঁদা) নেয়া বৈধতা পেতে যাচ্ছে। এজন্য একটি নীতিমালাও করতে যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুলিশ বিভাগের দুর্নাম ঘোচাতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। এর আগে সড়কপথে বিভিন্ন মালিক সমিতির নামে চাঁদা তোলার বৈধতা দিয়েছিল বর্তমান সরকার। মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগের সমালোচনা করে আইনজ্ঞরা বলেন, এটা করা হলে পুলিশের চাঁদাবাজি বৈধতা পাবে।
জানা যায়, বাজেটের সীমাবদ্ধতার দোহাই দিয়ে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ডোনেশন নিচ্ছে। কেবল গাড়ি নয়, কোনও কোনও থানার আসবাবপত্র, সামনের সাইনবোর্ডও কেনা হচ্ছে এ টাকায়। কোনও নতুন থানার কার্যক্রম শুরু করা হলেই এ প্রবণতা বেশি চোখে পড়ে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানার যানবাহন ও সাইনবোর্ডে চোখ রাখলেই এর সত্যতা মেলে। কোনও-কোনও থানা অনেক বিতর্কিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও ডোনেশন নেয় বলে অভিযোগ আছে। ডোনেশন নেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ বেশ পুরনো। আবার পুলিশকে ডোনেশন দিয়ে এর অপসুযোগও নিচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান।
পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে তারা ডোনেশনদাতা প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেয়। ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে গ্রহণ করেন না। কোনও-কোনও ক্ষেত্রে দাতা প্রতিষ্ঠানের ‘লাঠিয়াল বাহিনীর’ ভূমিকায়ও অবতীর্ণ হয় পুলিশ।
বলার অপেক্ষ রাখেনা, যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়, সেটা যে পরিমাণই হোক না কেন, তার প্রতি পুরো বাহিনীর একধরনের আনুগত্য সৃষ্টি হয়। এটা আইন প্রয়োগে বাধার সৃষ্টি করে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
মূলত: ডোনেশন ক্রমে এটা হবে পুলিশের চাঁদাবাজিকে বৈধতা দেওয়ার শামিল। এটা কোনও অবস্থায়ই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সরকারের উচিত পেশাগত দায়িত্ব পালনে পুলিশবাহিনীর প্রতি সার্বিক সহায়তা বাড়ান। সরকারের সদিচ্ছা থাকলেই এটা সম্ভব। তা না করে একটা অবৈধ বিষয়কে বৈধতা দিলে এর অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
ডোনেশন গ্রহণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকের (ট্রান্সপোর্ট) পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের কাজ করেন এ বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ বিভাগে বর্তমানে প্রায় দেড় লাখ জনবল রয়েছে। গত চার বছরে এ বিভাগে ৩০ হাজারের মতো নতুন জনবল অন্তর্ভুক্ত হলেও সে অনুযায়ী যানবাহন বাড়েনি। আর এ কারণেই পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ডোনেশনের গাড়ি নিয়ে থাকে।
জানা যায়, নীতিমালার সহায়ক হিসেবে ৮টি সুপারিশও করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে। সেগুলো হলো এ সংক্রান্ত পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন। যে কোনও ইউনিট থেকে ডোনেশন গ্রহণের প্রস্তাবনা ওই কমিটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আরেকটি পূর্ণাঙ্গ কমিটিও রাখা হবে। ডোনেশন গ্রহণের আগে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সুনাম, ঋণসংক্রান্ত তথ্য, ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত তথ্য, এলাকায় ভাবমূর্তি এবং পুলিশের কর্মকা-ে ওই ব্যক্তির কোনও ধরনের প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করা হবে।
প্রসঙ্গ, পুলিশের ডোনেশন গ্রহণকে নীতিমালার মাধ্যমে বৈধতা: না দিয়ে আইন করে বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে আমরা। কারণ এধরণের নীতিমালা করা হলে একটি অবৈধ জিনিসকে বৈধতা দেওয়া হবে। যা আইনি শাসনের ওপর প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ নিরপেক্ষ বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।
ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতাবলে একটি অবৈধ জিনিসকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করে সমাজে চরম দুর্দশা বয়ে আনছে। কেননা দুর্নীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান এখনও বেশ নাজুক। এ পরিস্থিতিতে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া বা সেখানে বৈধতার প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা অনৈতিক।
বলাবাহুল্য, আজকাল পুলিশ অনেক ক্ষেত্রেই বেআইনি কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তারা বাজেট-বরাদ্দ নেই এমন কথা বলে জনগণের কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছে। এটা যেমনি অপরাধ, তেমনি নীতিমালা করে সেটিকে বৈধতা দেওয়াও আরো মারাত্মক অপরাধ। এর অবসান এক্ষুনি হওয়া জরুরী।
মূলতঃ এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা মুবারক থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত মুবারক তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)