মুক্তিযুদ্ধের ৯নং সেক্টরের সাবেক কম্যান্ডার মেজর (অব) এম. এ. জলিল মুক্তিযুদ্ধের পর ১৭ বছর প্রত্যক্ষ করেছে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার অকাল মৃত্যু, গুম ও খুন। স্বাধীনতা অর্জনের দাবীদার আওয়ামীলীগ এবং স্বাধিনতার ঘোষক জিয়া সরকারের আমলেই মুক্তিযোদ্ধারা সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতেই মুক্তিযোদ্ধারা হয়েছে নাজেহাল।
রক্তক্ষয়ী বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ ও জাতি গৌরবের আসনে অধিকার করেছে। এ গৌরবের অংশীদার সমগ্র জাতি। এ গৌরব কোন বিশেষ ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা দল বিশেষের নয়। এমন একটি ঐতিহ্যময় গৌরবকে যখন কোন বিশেষ ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা কোন রাজনৈতিক দল কিংবা মুক্তিযুদ্ধে সহকারী কোন দেশ বা জাতি নিজের একক কৃতিত্বের দাবীদার হয়, তখনই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেবল বিতর্কিত হয়ে ওঠে না, জনমনেও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জন্ম নেয় নানারূপ সংশয় ও সন্দেহ।
স্বাধিনতার পর ভারত বাংলাদেশকে কার্যত একটি প্রদেশ হিসাবে চিহ্নিত করার প্রয়াস পায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সম্পদ ও পাকিস্তানীদের ফেলে যাওয়া অস্ত্রশস্ত্র লুটপাট করে ভারতে নিয়ে যেতে থাকে। যশোরে এমন একটু লুটের মাল বয়ে নেয়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর গাড়ি বহরকে বাধা দেয়ায় ৩১ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় মেজর জলিলকে বন্দি করা হয়। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজবন্দী।
১৯৭০ সনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো ৬ দফার ভিত্তিতে ৷ এই ৬ দফার মধ্যে আওয়ামী লীগ গৃহীত ৪ রাষ্ট্রীয় মূলনীতির একটিরও উল্লেখ ছিল না ৷ তা ছাড়া নির্বচনী ইশতিহারে আওয়ামী লীগ আরো উল্লেখ করেছিল যে, তারা ইসলাম ধর্ম বিরোধী কোন আইন-কানুনও পাস করবে না ৷
কিন্তু আওয়ামীলীগ '৭২ সনের জানুয়ারীতে ক্ষমতাসীন হওয়ার সাথে সাথেই ইসলামের বিরূদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে দেয় এবং গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং জাতীয়তাবাদ নামে রাষ্ট্রে ৪ মূলনীতি নির্ধারণ করে, যা পরবর্তীতে '৭২-এর রাষ্ট্রীয় সংবিধানেও সন্নিবেশিত করা হয় ৷ এই ৪ নীতির মূল উৎস কোথায়? কেনই বা ৪ নীতিকে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হলো? এ প্রশ্নগুলোর জবাব জনগণ আজো পায় নি
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যদি একই হয়ে থাকে কেন তাহলে দেশ স্বাধীন হওয়া মাত্রই বীর সেনানীর এই নাজেহাল অবস্থা? তাহলে কেন এই দুঃখ ও লজ্জাজনক বিভক্তি, শত্রুতা এবং নিধন প্রক্রিয়া? তাহলে এই মুক্তিযুদ্ধের পেছনে আসল রহস্যটা কি? সেই গল্পই জানতে পড়তে হবে, বীর মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডার এম এ জলিলের প্রতক্ষ্য অভিজ্ঞতা থেকে লেখা
বইঃ অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা
লেখকঃ বীর মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডার এম এ জলিল
প্রকাশকঃ ইতিহাস পরিষদের পক্ষে (এফ. রহমান)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:০৩