কোটা সংস্কার আন্দোলন সারাদেশেই বেশ আলোড়ন তুলেছিলো। যদিও আন্দোলনে আমি সরাসরি অংশগ্রহন করিনি তারপর এই আন্দোলনে আমার পূর্ণ সমর্থন ছিলো। কারণ আমার কাছে এটা কে যৌক্তিক বলেই মনে হইছে। আপনি কম দক্ষ হয়ে ও একজন দক্ষ লোককে কোটার জোরে হটিয়ে দিবেন এ কেমন আসুরিক ক্ষমতা!
যাই হোক কিছুদিন আগে, বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ থেকে জানানো হয়, এখন থেকে নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে অর্থাৎ আগে যা প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরি বলে পরিচিত ছিল সেখানে নিয়োগের ক্ষেত্রে আর কোন কোটা ব্যবস্থা থাকছে না। যাইহোক কোঁটা বহাল বা কোঁটা রাখা নিয়ে তো কম জল ঘোলা হয়নি। শিবিরের রগ কাটার মত, সরকারী বাহিনীর হাতুড়ী পেটা ও আবিস্কার হয় এই কোটা আন্দোলনের কল্যাণে। আর তা আমরা সবাই বেশ ভালো ভাবেই প্রত্যক্ষ করেছি।
কোটা বাতিল হওয়ার পর কিছু মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক সংগঠন শাহবাগ অবরোধ করে। তাঁদের উপস্থিতি যা ছিলো সেটা আমার ৩ বছরের ভাইগ্না কে বললেও গুনে বলে দিতে পারতো। যাইহোক আমার কথা হচ্ছে তারা যে কোঁটা বহাল করতে বলল এটা কি শূধুই তাঁদের যৌক্তিক যাবি নাকি কতিপয় মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের কে আশরাফ আর বাকি সবাইকে আত্রাফ ভাবছে!
যারা দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে তারা অবশ্যই দেশের সূর্য সন্তান তাতে কারোই কোন সন্দেহ নাই। তাঁদের কে অবশ্যই তার জন্য রিওয়ার্ড দিতে হবে। এখন এই রিওয়ার্ড অনেকভাবেই দেয়া যেতে পারে। কিন্তু সেই রিওয়ার্ড টা কেন তাঁদের সন্তান, নাতি পুতি খুতিদের কোটার মাধ্যমে চাকরি দিয়েই করতে হবে। কোঁটা থাকা মানে জব মার্কেটে যোজন যোজন এগিয়ে থাকা। এমনকি আমি পাবলিক বিশ্যবিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষায় ও সেইম ব্যাপারটা দেখেছি। সমান নম্বর পেয়ে কোঁটাধারি প্রথমদিকের সাবজেক্টে পড়ছে।
এখন কথা হচ্ছে আমার বাবা তো মুক্তিযুদ্ধের সময় ৫ বছর ছিলো। সে তো আর চাইলে ও যুদ্ধ করতে পারবে না। এখন তার মানে দাঁড়াচ্ছে আমরা জন্মগতভাবেই তৃতীয় শ্রেণীর হয়ে যাচ্ছি। আর মুক্তিযুদ্ধের ছেলে মেয়ে বা নাতি রা জন্মের পরেই পেয়ে যাচ্ছে প্রথম শ্রেণীর নাগরিকত্ব।
আমার বিশ্বাস মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিল দেশ স্বাধীন করতে দেশ থেকে বৈষম্য দূর করতে। বৈষম্য সৃষ্টি করতে না। কোঁটা ব্যবস্থা তো বৈষম্যকেই প্রমোট করে। যেইসব মুষ্টিমেয়ে লোক কোটা বহালের দাবীতে রাস্তা অবরোধ করেছিলো তারা তো দেশের জন্য না, বরঞ্চ নিজেকে প্রথম শ্রেণীর নাগরিকত্ব দেয়ার জন্যই যুদ্ধ করেছিলো।
কোঁটা নিপাত যাক,
মেধাবী মুক্তি পাক।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০২৩ ভোর ৫:৪৩