somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা সন কি বাঙালীর নিজস্ব ও মৌলিক সন ? (২য় পর্ব)

২৯ শে মে, ২০১০ বিকাল ৫:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবরের বঙ্গাব্দ সম্বন্ধে কিছু উক্তি উল্লেখ করা প্রয়োজন। বাংলা একাডেমীতে বর্ষপন্ঞ্জি শুদ্ধি করণের জন্য ডঃ শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে যে কমিটি গঠিত হয় তারা যে ঘোষণা দেন তাতে লেখা হয়ঃ-
(১) মোঘল আমলে সম্রাট আকবরের সময়ে হিজরী সনের সঙ্গে সামন্ঞ্জস্য রক্ষা করে যে ' বঙ্গাব্দ ' প্রচলন করা হয়েছিল তা হতে বৎসর গণনা করতে হবে।
(২) জনাব আমজেদ হোসেন সাহেব লিখেন, 'বঙ্গাব্দ' বা ফারসী সনে সৌর সনের ভিত্তিতে হিজরী সনকে গ্রহণ করা হয়। এভাবেই ' হিজরী ' সালকে ' বাংলা সনে ' রূপান্তরিত করা হয়। অর্থাৎ 'এক কথায় হিজরী সনের রূপান্তরই বাংলা সন।( স্বাগত ১৪০০ সাল )
(৩) "বাংলা সন" কিভাবে যাত্রা শুরু" প্রবন্ধে জনাব গোলাম মোর্তজা লিখেছেন- 'আকবরের রাজত্ব কালে এবং তারই নির্দেশে সৌর পদ্ধতির বাংলা সনের প্রবর্তন করা হয়। বাংলা সনের গণনা শুরু হয় আকবরের সিংহাসনে আরোহনের একমাস পরে ১১ই এপ্রিল ১৫৫৬ খ্রীষ্টাব্দে।


এই রকম উদাহরণ ভুরি ভুরি। এক কথায় আমাদের বাংলাদেশী পন্ডিতদের একই হরিবোল, " সম্রাট আকবরই বাংলা সন বা বঙ্গাব্দের প্রচলন করেছেন।" কিন্তু সত্যিই কি সম্রাট আকবর ১৫৫৬ সালে বাংলা সনের প্রচলন করেছিলেন?
ইতিহাসের আলোকে চিন্তা করলে দেখা যায়। ১৫৫৬ সালে আকবর যখন দিল্লীর সিংহাসনে আরোহন করেন ও কথিত বাংলা সন প্রচলন করেন তখন (বর্তমানের বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গ) বাংলা ছিল কার্যত: স্বাধীন। শেরশাহের মৃত্যু পর থেকে সুবে বাংলা দিল্লী অধীনতার নাগপাশ থেকে প্রায় মুক্ত ও স্বাধীন থেকেছে। গৌড়ের পাঠান সুলতান দাউদ খাঁন কররানী ১৫৭৩ সালে সিংহাসনে বসেই গৌড় থেকে দক্ষিণে চট্রগ্রাম পর্যন্ত আপন রাজ্যসীমা বিস্তার করেছিলেন। ১৫৭৫ সালে রাজমহলের যুদ্ধে সম্রাট আকবরের বাহিনী দাউদ খাঁন কররানীকে পরাজিত ও নিহত করলেও 'সুরে বাংলায়' সুদৃভাবে শাসন ক্ষমতা বিস্তার করতে পারেননি।



বার ভূঁইয়ার প্রধান ঈশা খাঁর রাজত্ব কালেও মোগলেরা বাংলায় দাঁত ফুটাতে সক্ষম হয়নি। ১৫৯৯ খৃষ্টাব্দে ঈশা খাঁর পরলোক গমনের পরেও তার পুত্র মুসা খাঁ যতদিন জীবিত ছিলেন ততোদিন মোগল শক্তির আধিপত্য বাংলায় ছিল না। সুতরাং এ কথা ধ্রব সত্য যে ১৬১০ খ্রীষ্টাব্দে সুবেদার ইসরাম খাঁন রাজমহল থেকে ঢাকায় "সুরে বাংলার" রাজধানী স্থানান্তরের পূর্বে বাংলায় মোঘল আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আবার মোঘলেরা ১৬১২ খ্রীষ্টাব্দে নোয়াখালী পর্যন্ত দখল করতে পারলেও ১৬৬৬ খ্রীষ্টাব্দে পূর্বে চট্রগ্রাম করতলগত করতে সক্ষম হয়নি। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ১৬৬৬ খ্রীষ্টাব্দের পূর্বে বাংলায় কথিত 'বঙ্গাব্দ' বা 'বাংলা সন' তো দূরের কথা, আকবরের প্রচলিত সর্ব ভারতীয় "ফসলী সন" ও প্রচলিত হতে পারেনি। বাংলার কিয়দংশে তখন 'লক্ষণ সন', চট্রগ্রামে 'মগী সন' ও ত্রিপুরায় 'ত্রিপুরাব্দ' প্রচলিত ছিল।
তা হলে আমাদের ইতিহাসবিদরা ও পন্ডিতেরা কেন বলছেন যে সম্রাট আকবরই ১৯৫৬ খ্রীষ্টাব্দে 'বাংলা সন' চালু করেছন। স্বয়ং বাংলাই যখন সম্রাট আকবরের অধীনে ছিল না তখন তের পক্ষে 'বঙ্গাব্দ' বা 'বাংলা সন' প্রচলনের প্রশ্ন উঠে কি ?

(চলবে)
২য় পর্বের সমাপ্তি
(চার পর্ব)




বিঃ দ্রঃ-
( সময়ের অভাবে লেখাটি আমি চার খন্ডে লেখার চেষ্টা করছি, এর মূল লেখক আমি নই। লেখাটি আমি পেয়েছি একটি বৈশাখী স্বরনিকা থেকে। স্বরনিকাতে লেখক হিসাবে যার নাম উল্লেখ আছে তা হলো এ, বি, এম, ফয়েজ উল্লাহ। লেখাটির শেষে লেখা আছে " লেখকঃ কলামিষ্ট, নজরুল গবেষক ও জাগরন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ।"
লেখাটি আমার ভালো লেগেছে তাই এখানে তুলে দিলাম। লেখার পুরো কৃতিত্ত্ব মূল লেখকের।)
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১০ সকাল ১০:২৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×