শীতকালে আমরা অনেকেই গরম পানিতে গোসল পছন্দ করি, আরাম বোধ করি। গোসলের পানি গরম হলে শরীর তো পরিস্কার হয়ই, উপরন্তু কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। গরম পানিতে গোসল করা হলে শরীরের পেশির স্টিফনেস (আড়ষ্টতা) দূর হয়, পেশির নমনীয়তা বাড়ে ও ব্যথা লাঘব হয় । এছাড়াও ত্বকের আণুবিক্ষণিক ছিদ্রগুলো খুলে যায়, ফলে ভেতরকার ময়লা বের হয়ে যেতে পারে এবং এতে ত্বক পরিস্কার থাকে।
কিন্তু অনেক পুরুষ আছেন শীত বা গ্রীষ্ম সব ঋতুতেই গরম পানিতে গোসল করতে ভালোবাসেন। তাদের জন্য দুঃসংবাদ হল- সব সময় গোসলের সময় গরম পানির ব্যবহার অনেক সময় পুরুষত্বহীনতার কারণ ঘটায়। গরম পানি দিয়ে গোসল করার সময় শুক্রথলির ওপর অতিরিক্ত গরমের প্রভাবে শুক্রাণুর সংখ্যা এবং শুক্রাণুর সচলতা কমে যায়। এর ফলে সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতাও কমে যায়।
সুতরাং পুরুষদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তবে মাঝে মাঝে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে তেমন ঝুঁকি নেই। এমনকি সিনথেটিক অন্তর্বাসও পুরুষের জন্য ভালো নয়। দেখা গেছে সুতির আন্ডারওয়্যারের বদলে পলিস্টারের অর্থাৎ সিনথেটিক আন্ডারওয়্যার পরলেও পুরুষত্বহীনতা ঘটতে পারে। এমনকি সুতি ও পলিস্টারের মিশ্রণের আন্ডারওয়্যারও কিছুটা পুরুষত্বহীনতা ঘটায়। এ তথ্যটি জানাচ্ছেন মিসরের গবেষকেরা। তাদের মতে, পুরুষত্বহীনতার ওপর একমাত্র ১০০ শতাংশ সুতি আন্ডারওয়্যারের কোনো প্রভাব নেই।
একদল বিজ্ঞানীর মতে, সয়াবিন ও এর উপাদানে তৈরি খাদ্য পুরুষের শুক্রাণুর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। ক্ষেত্রবিশেষে শুক্রাণুর পরিমাণ অর্ধেকে নামিয়ে আনার নজিরও রয়েছে। হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের একদল বিজ্ঞানী প্রজনন স্বাস্থ্য ক্লিনিকে আসা ৯৯ জন পুরুষের খাদ্যাভাস সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন। একই সঙ্গে বিজ্ঞানীরা সন্তান উৎপাদনে অক্ষম ওইসব পুরুষের বীর্যের নমুনা সংগ্রহ করেন। সয়াবিন ও সয়াবিন উপাদানে তৈরি খাদ্য গ্রহণের মাত্রাভেদের ওপর ভিত্তি করে ওইসব পুরুষদের চারভাগে বিভক্ত করেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণার সূত্রে হিউম্যান রিপ্রোডাকশন নামক জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে তারা উল্লেখ করেন তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য। এতে বলা হয়, পরীক্ষায় দেখা গেছে যেসব পুরুষ অতিমাত্রায় সয়াবিন ভক্ষণে অভ্যাস কম মাত্রায় ভক্ষণকারীদের তুলনায় তাদের শুক্রানুর মাত্রার পার্থক্য বিস্তর। বিজ্ঞানীদের ভাষায়, স্বাভাবিক হিসাবে একজন পুরুষের প্রতি মিলিমিটার বীর্যে ৮০ থেকে ১২০ লাখ শুক্রানু থাকার কথা। যারা সয়াবিনজাত খাবারে বেশি অভ্যস্ত তাদের বেলায় এ মাত্রা ৪১ লাখ পর্যন্ত কম থাকার নজির মিলেছে।
গবেষকদলের প্রধান ড. জর্জ ক্যাভারোর ভাষায়, সয়াবিনে থাকা আইসোফ্লাভোন্স নামে এক প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য শুক্রাণু উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটিয়ে থাকতে পারে। একই রসায়ন পুরুষ হরমোন স্ট্রোজেন উৎপাদনেও বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তার ভাষায়, অতিমাত্রায় ওজন বা মুটিয়ে যাওয়া পুরুষরা এ ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকেন।
সূত্র