জ্বী বন্ধুগণ, আজ আমি আপনাদের মাঝে রহস্যটা ফাঁস করেই দেবো। বিষয়টা উৎঘাটন করতে আমার বছরের পর বছর সময় লেগেছে। (Picture: 1)
সুখ একটি আপেক্ষিক বিষয় এটা নিয়ে তাত্বিক আলোচনা করার সাধ্য আমার নেই। আসলে আপনি নিজে সুখ বলতে যা বুঝেন আপনার কাছে সেটাই সুখ, এখন আপনি কি সুখে থাকতে চান? উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে You're in the right place. (Picture: 2)
সুখ বলতে আমি বুঝি; সুস্থ স্বাভাবিক, স্বাধীনচেতা একজন মানুুষের নিজ ইচ্ছেমত জীবন ধারণ করার সক্ষমতাকে। সুখ এবং স্বাধীনতা এ দুটি বিষয় একে অপরের ভাই; স্বাধীনতা ছাড়া প্রকৃত সুখ অসম্ভব, তাই আমি বলবো যে যত বেশী স্বাধীন সে তত বেশি সুখী। যদিও পুরোপুরি স্বাধীনতা বলতে আসলেই কিছু আছে কি না সেটা আলোচনার বিষয়। গাড়ি, বাড়ি, নারী মিলিয়ন ডলারের মালিক হয়েও কেউ কেউ অসুখী হতে পারে বা হয়, তাই বলা হয় টাকা দিয়ে সুখ কেনা যায় না। বিশ্বাস না হলে এই যে দেখুন (Picture: 3)
এবার বিশ্বাস হলো তো? আমি প্রমাণ করে দিলাম "টাকা থাকলেই আপনি সুখি হতে পারবেন না"। সুতরাং সুখী হতে হলে বেশি বেশি আমার পোস্ট পড়তে হবে । আপনি যদি এখনো ভেবে থাকেন যে, আপনার অনেক টাকা আছে তাই যে করেই হোক সুখ আপনি ক্রয় করেই ফেলবেন; কিন্তু না, এই বিষয়গুলো আপনি কখনোই টাকা দিয়ে ক্রয় করিতে পারিবেন না। (Picture: 4 )
উপরোক্ত বিষয়গুলো যদি আপনার মধ্যে না থাকে তাহলে আপনি নিজে নিজে যতই সুখী হউন না কেন মানুষের কাছ থেকে কিন্তু শ্রদ্ধা, ভালবাসা অর্জন করতে ব্যর্থ হবেন, আর তা যদি হয় তাহলে দিন শেষে সবই মাটি। সেজন্য কখনোই Meaningless happiness এর পিছনে ছুঁটা যাবে না। Meaningless happiness এমন এক বিষয় যা কেবল একজন ব্যক্তিকেই সুখী করতে পারে মাত্র যেমন- পাগল, ভবঘুরে অথবা অর্থ বিত্ত সম্পন্ন বদমেজাজী ও অহংকারী কোন ব্যক্তি। এদেরকে কিন্তু কেউ-ই ভাল চোখে দেখে না বা এরা মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয় না। তবুও যদি আপনি সবকিছুকেই অর্থ, বিত্তের মাপকাঠিতে বিচার করতে চান তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই, শুধু এতটুকুই বলবো। (Picture: 5)
আমরা যতই বলি "কে কি বললো, এসব দেখার টাইম আমার নেই" কিন্তু দিন শেষে মানুষ সামাজিক জীব, কে কি বললো তা দেখার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আসলে সবকিছুর মধ্যে ব্যলেন্স রাখাটা জরুরী। বর্তমানের এই আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে চারিদিকে যে তি তি তি অবস্থা তাতে সবকিছুতে ব্যালেন্স রাখা সত্যিই অনেক টাফ। নিচের ছবিটি থেকে শেখার আছে অনেক কিছু A picture says more than a thousand words. সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনারা নিজেরাই নিচের এই ছবিটি'র ব্যাখ্যা করে নিন, নিশ্চয় আপনারা জ্ঞানী মানুষ। পোস্ট বেশি বড় করে আপনাদের ধৈর্যচ্যুতির কারণ হতে চাই না। (Picture: 6)
এবার মূল প্রসঙ্গে যেতে চাই- বহু বছর গবেষণা করার পর সুখে থাকার যে মূলমন্ত্র আবিষ্কার করেছি তা আজ আমি আপনাদের মাঝে উম্মোচন করতে যাচ্ছি। বিফলে- ৩০ দিনের মধ্যে মূল্য ফেরৎ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
যেহেতু একা একা সুখে থাকা যায় না,( তবে দুঃখটা হয়তো একান্তই নিজের ) তাই আমার এ্ই সুখের ফর্মুলাটা আপনাদের মাঝে ফাঁস অথবা শেয়ার করার মাধ্যমে নিজের সুখটাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে চাই। আমি বিশ্বাস করি- একা একা যেমন সুখে থাকা যায় না ঠিক তেমনি একসাথে সবাইকে নিয়েও সুখে থাকা যায় না, তবে অল্প সংখ্যক কিছু মানুষকে নিয়ে হয়তো সুখে থাকা সম্ভব। আর তাই সুখে থাকার আমার এই রহস্যটি উৎঘাটনের জন্য শ্রেষ্ঠ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেছে নিয়েছি এই "সামহয়্যারইন ব্লগ'কে" কারণ আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি কোটি কোটি জনসংখ্যার এই দেশে অল্পকিছু সংখ্যক বুদ্ধিমান মানুষ বাস করে এই ব্লগে। চলুন তাহলে রহস্যগুলো উম্মোচন করেই দেই আপনাদের মাঝে।
নাম্বার ওয়ান: Always avoid toxic people (Picture: 7)
এদের একদমই পাত্তা দেয়া যাবে না, সে যে-ই হোক। Toxic people এরা সাধারণত কাছের মানুষজনদের মধ্য থেকেই হয়ে থাকে বিশেষ করে; যারা আপনার সমন্ধে অনেক কিছুই জানে। পরিবার, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব এবং আত্নীয় স্বজন এদের মধ্য থেকে যে কেউ আপনার জন্য Toxic person হিসেবে বিবেচিত হতে পারে যাদের কথা-বার্তা, আচার-আচরন প্রতিনিয়ত আপানকে আঘাত করবে। এদের কথায় বিষ মেশানো থাকে; যে কারণে আপনার মস্তিষ্কে Toxicity এর পরিমাণ বেড়ে যায়, আপনার হ্রদয় ও মন বিষন্নতায় ভরে উঠে, নানা নেগেটিভিটি'তে আপনাকে ঘিরে ধরে। যেহেতু এরা কাছের লোকজনই হয়ে থাকে তাই সবসময় এদের এড়িয়ে চলা সম্ভব হয়ে উঠে না। সেক্ষেত্রে এদের কথা-বার্তা একদম পাত্তা দেয়া যাবে না অথবা শ্বান্তিপূর্ণ উপায়ে নিজ গুণে এদের হ্যান্ডল করা শিখতে হবে, যদিও বিষয়টা অনেকের জন্য প্রায় অসম্ভব তবুও এই অসম্ভবকেই যদি আপনি সম্ভব করে ফেলতে পারেন তাহলে সুখী হবার প্রথম সোাপানে আপনি পা ফেললেন।
নাম্বার টু: Never argue with stupid people, they will drag you down to their level and then beat you with their stupidity. যেহেতু চারিদিকে স্টুপিড পাবলিকের অভাব নেই, তাই আমি তাদেরকে এড়িয়ে থাকার কথা বলবো না কারণ আপনি চেষ্টা করলেও তা পারবেন না। আপনি যেখানেই যাবেন সেখানেই এদের দেখা পাবেন এবং কোন না কোন স্টুপিড লোক কোন না কোন ভাবে আপনাকে আক্রমণ করে বসবে with their stupidity. আর এই আক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র প্রুভেন ফর্মুলা হচ্ছে তাদের সাথে কোন ধরণের যুক্তি তর্কে না জাড়ানো। তারা যা বলবেই তাই সঠিক বলে মেনে নিন। তাদের সাথে তর্ক করে আপনার মূল্যবান সময় ও মনের প্রশ্বান্তি বিনষ্ট করবেন না। এই যে দেখুন সদাগুরু কিভাবে এদের হ্যন্ডল করেন। (Picture: 8)
নাম্বার থ্রী: সব জায়গায়, সবার সাথে নিজেকে প্রমাণ করার প্রোয়োজন নেই বা তুলোনা করার দরকার নেই। এতে শুধুই পন্ডশ্রম এবং নিজের ক্লাস নষ্ট হয়, যা আপনার জন্য অপমন জনক। আমার মনে হয় না বিষয়টি নিয়ে আর বেশি কিছু ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন আছে। (Picture: 9)
নাম্বার ফোর: (কানে কানে আগেই বলে রাখি; এটা শুধুমাত্র পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, কাউকে বলা যাবে না কিন্তু )
নারীদের সংস্পর্শে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না; আপনার মা, বোন, খালা, চাচী, ফুফু, স্ত্রী, গার্লফ্রেন্ড, বান্ধবী সে যে নারীই হোক না কেন নারীদের সাথে খুব বেশি সময় আড্ডা মারা যাবে না নিতান্তই প্রয়োজন না হলে। আচ্ছা নারীদের সাথে এত টাইম স্পেন্ড করার কি আছে একটু শুনি? চেচামেচি ত্যানা প্যাঁচানি কত প্রকার ও কি কি আপনি তা হাড়ে হাড়ে টের পাবেন। এতবার না করা সত্যেও যদি আপনি নারীদের সাথে সময় ক্ষেপন করতেই চান, তাহলে আমি বলে দিচ্ছি; এতে আপনার ব্রেইন ঢাল হয়ে যাবে, ধীরে ধীরে আপনার কমন সেন্স লোপ পাবে। আর এমন ঢাল ব্রেইন নিয়ে কিভাবে আপনি সুখি হন তা আমার একটু দেখার আছে। (Picture: 10)
নাম্বার ফাইভ: এখন পর্যন্ত আমার আবিষ্কার করা সুখে থাকার সর্বশ্রেষ্ঠ ফর্মুলা হচ্ছে এটি, আর তা হচ্ছে- কখনোই ষঁড়ের সামনে, ঘোড়ার পিছেন এবং একজন ইডিয়টের ধারে কাছে যেতে নেই। জীবন চলার পথে আপনি যদি এই ফর্মুলটা মেনে চলতে পারেন তাহলে সুখ আপনার কাছে ধরা দিতে বাধ্য। বিষয়টা নিয়ে আর কিছু ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন বোধ করছি না, আগেই বলেছি আপনারা জ্ঞানী মানুষ। (Picture: 11)
পরিশেষে বলতে চাই, আসলে সুখে থাকার নির্দিষ্ট কোন ফর্মুলা নেই ভাইজান, এটা ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভর করে। অনেক কষ্টে দিন যাপন করেও কেউ কেউ সুখী হতে পারে, কিছু কষ্টের মাঝেও সুখ লুকায়িত থাকে। তাই বলবো কিসে আপনার সুখ তা নিজেকেই আবিষ্কার করতে হবে, আমি তো কেবল কিছু পদ্ধতি দেখালাম মাত্র। তাই কে কি বললো, কোথায় কি লেখা আছে, তার উপর নির্ভর করে জীবন চলে না। সেজন্য, জীবনকে সুখী করে গড়তে চাইলে সবার আগে নিজের ব্রেইন ইউজ করার বিকল্প কিছু দেখি না। আপনি নিজ যুক্তি তর্কের মাধ্যমে আমার এই পোস্ট অসাড় প্রামাণ করে দিতে পারেন আর তা খুবই সম্ভব। তাই বলবো; নিজের ব্রেইন এবং মন-মননশীলতা ইউজ করার মাধ্যমে সুখে থাকার নিজ নিজ পদ্ধতি আবিষ্কার করতে হবে। জ্ঞান অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট কারো মুখাপেক্ষী বা নির্দিষ্ট কোন মতবাদের উপর নির্ভরশীল হওয়া চলবে না। (Picture: 12)
আর হ্যাঁ, আমাদের সুখে থাকতে হবে, অবশ্যই সুখে থাকতে হবে, বিশেষ করে তাদের সামনে। (Picture: 13)
পোস্টটি ছোট করতে চেয়েও অনেক বড় হয়ে গেলো আশা করি পড়তে খুব বেশি কষ্ট হবে না। বানান, শব্দ চয়ন, বাক্য গঠন ইত্যাদিতে অনেক ভুল থাকা বাঞ্চনীয় যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ থাকবে।
ধন্যবাদ সবাইকে, হ্যাপি ব্লগিং।
নোট: পোস্টে ব্যবহারকৃত ছবি, মিম এসবের সোর্স আমার হার্ডড্রাইভ, এগুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা যা সম্পূর্ণ কপিরাইট ফ্রী।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৫:২৯