বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে রাস্তার পাশের ছোট্ট চায়ের দোকান থেকে দেশের সর্বোচ্চ স্থান সংসদের আলোচনার পর আলোচনা হচ্ছে। প্রথম দিন সেনা মোতায়েন করলে এত সেনা কর্মকর্তাকে হারাতে হতো না। কোন যু্দ্ধেও এত পরিমান সেনা অফিসার মারা যাওয়ার নজির নেই। যে মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপ্তি ছিল দীর্ঘ নয় মাস সেই যু্দ্ধেও সেনা অফিসার মারা গেছে পঞ্চাশের নিচে। আর মাত্র চব্বিশ ঘন্টার ব্যবধানে আমরা ১৬৮ জন সেনাকর্মকর্তাকে হারালাম। আলোচনা চলছে ,চলবে। ঘটনাটা সত্যই জাতির জন্য দুঃখজনক।
বাংলাদেশের মানুষগুলোর অন্যতম একটা দোষ । তারা অল্পতেই অনেক কিছু ভুলে যায়। ঘটনার বর্তমান নিয়ে চিন্তা করে। সুদুর প্রসারী কোন চিন্তা করতে পারে না। শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া সব কিছুতেই রাজনীতির গন্ধ পান। রাজনীতি ছাড়া যে অনেক কিছুই পৃথিবীতে ঘটতে পারে তারা তা চিন্তা করতে পারেন না।
২৫ ফেব্রুয়ারীর পর গত দশ দিনে অনেক কিছুই আমাদের কাছে পরিস্কার হয়েছে। সেনা কর্মকর্তাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর মিটিং এর ভাষ্যগুলো আমাদের সামনে পৌছে গেছে। অনেকেই অনেক কথা বলছেন। আমি মনে করি না শত আলোচনা পর্যালোচনা করে এর সমাধান সম্ভব।
সেনা কর্মকর্তারা সহ অনেকেই দাবী করছেন। ২৫ তারিখ সাড়ে আটটার কিছুক্ষন পরেই কেন সেনা মোতায়েন করা হলো না।তাহলে এত পরিমান সেনা কর্মকর্তাকে আমাদের হারাতে হত না। আচ্ছা, সেনা মোতায়েন কেন করা হলো না। সেই দিনের ঘটনাটা একটু মনে করার চেষ্টা করুন। সেইদিন সকালে যখন বিডিআর জোয়ানরা সেনা কর্মকর্তাদের জিম্মি করল। তখন মিডিয়া সহ সারা বাংলাদেশের মানুষ জানে বিডিআর প্রধান শাকিল দরবার হলে সবার প্রথমে বিডিআর এর এক সৈনিককে গুলি করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিডিআর জোয়ানরা সবাইকে তাদের দাবী দাওয়া আদায় করার জন্য জিম্মি করে। বিডিআর জোয়ানরা এমনকি রাস্তায় বেড়িয়ে এসেও ব্রাশ ফায়ার করে এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রসহ তিন জন পথচারী নিহত হন। বিডিআর জোয়ানরা সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করতে থাকেন । তখন সারা বাংলাদেশের সাধারন মানুষের সেন্টিমেন্ট ছিল সম্পূর্ণ রূপে বিডিআর এর পক্ষে। সেই সময় যদি সেনা বাহিনীকে আক্রমনের জন্য বলা হত তাহলে পুরা বাংলাদেশে বিডিআর আর সেনাবাহিনীর মধ্যে মারাত্মক একটা যুদ্ধ হওয়ার সম্ভবনা ছিল। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে পিলখানা বিদ্রোহের পর পরই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিডিআর জোয়ানরা বিদ্রোহ ঘোষনা শুরু করে। সবচেয়ে বড় কথা সেনা বাহিনী বিদ্বেষী মিডিয়া এমনভাবে খবরটাকে উপস্থাপন করেছে যে, সাধারন মানুষরা বিডিআর এর পক্ষে চলে যেত। স্বাভাবিকভাবে বড় ধরনের একটা গৃহ যুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।হ্যা, সেনা বাহিনীর কমান্ডো বাহিনীকে কেন কাজে লাগানো হলো না? চারদিক থেকে সেনা বাহিনী কর্ডন করে রাখতে পারত। আর সেনা বাহিনীর কমান্ডোরা ভিতরে যেতে পারত। সেনা বাহিনীর গোয়েন্দা টিমগুলো কোথায় ছিল?এমন অভিযোগও আছে গোয়েন্দাদের অস্রগুলোও ব্যবহৃত হয়েছে এই বিদ্রোহে। কেন তাদেরকে ধরা হচ্ছে না?
(চলবে)