somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আলোর ঈশ্বর!

২০ শে মার্চ, ২০১০ রাত ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরিচয়

একটি ছেলে নাম ঈশ্বর একটি মেয়ে কে ভালোবাসে। হতাশ হচ্ছেন তাই না ? পুরানো কাহিনী কিন্তু আমি এটাই জানি। কি আর করা. চলুন কাহিনী শুরু করা যাক.....

মেয়েটির নাম আলো । সে আমার জীবনে এসেছিলো আলো হয়ে, ইশ্বরের আলো হয়ে।
ছেলেটি মেয়েটি কে তাদের এলাকায় সবসময় দেখত। কিন্তু কখনই তার সাথে কথা বলার সাহস করে উঠতে পারেনি। যদি পাত্তা না দেয়? যদি রেগে যায়?
একদিন মেয়েটি বেড়াতে আলো ছেলেটির বাসায় তার মা সহ । ছেলেটি খালি বার বার মেয়েটি কে আড় চোখে দেখছে। তাদের মা রা যখন কথা বলায় ব্যস্ত , এই সুযোগে তারা পরিচিত হলো ।
--আপনার নাম ?
--ঈশ্বর।
--আপনার ?
--আলো।
--কি করেন? বলছে মেয়েটি
--আমি এস এস সি দিবো।
--আপনি?
--আমি অষ্টম শ্রেণীতে।
ঠিক এইভাবে শুরু।
শুরু হলো তাদের দেখা হওয়া ,ভাব বিনিময় চলতে লাগলো এবং একটি বন্ধুত্ব গড়ে উঠে । কিন্তু কেও কোনদিন তাদের ভালোবাসার কথা বলেনি । তারা শুধু মনে মনেই ভালোবাসতো. বলতে সাহস করতো না, প্রতাখ্যান হবার ভয়ে ।
একদিন ছেলেটি দূর দেশে চলে গেলো উচ্চ শিক্ষার জন্যে। যাবার আগে মেয়েটির সাথে দেখা করলো। তারা পরস্পর কিছু সময় কাটালো এবং ছেলেটি মেয়েটিকে এক বাক্স চকলেট উপহার দেয়। আর মেয়েটি দে একটি কলম।

ছেলেটি যখন বিদেশে প্রথম দিকে মেয়েটির সাথে কিছু যোগাযোগ হত। তারপর সে মেয়েটিকে ধীরে ধীরে ভুলে গেলো । নতুন দেশ , নতুন বন্ধু , আর পড়াশুনা তো আছেই। দীর্ঘ ৫ বছর পর ছেলেটি ফিরে এসেছিলো।

এসেই তার পুরনো দিনের কথা মনে পারে গেলো. কোথায় সেই মেয়েটি ? কেমন আছে সে? তাকে কি মনে আছে?

আসুন এইবার কাহিনী ঈশ্বর এর মুখ থেকে শোনা যাক।


ভালোবাসা

বাড়ি ফিরার পরদিন ঘুম থেকে উঠে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে দেখলাম , একটি অপরিচিত মেয়ে মার পাশে বসে আছে। চেনা চেনা লাগছে কিন্তু ঠিক চিনছি না। মেয়ে টা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে এবং বললো কেমন আছেন মিস্টার? একি! এতো আলো . আমি বললাম
--আলো তুমি?
--জী আমি।
--কেমন আছেন?
--তোমাকে তো চেনাই যাচ্ছে না। বড় হয়ে গেছ।

অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। পরিপূর্ণ এক নারী । আমার তার দিকে তাকিয়ে থাকতে লজ্জা লাগছিলো.। কেনো জানি সেদিন মনে হয়েছিলো একে না পেলেই নয়। এইভাবে শুরু হলো আমাদের ভালোবাসার আর এক পর্ব। কি ভাবে তাকে আমার ভালোবাসার কথা বলেছিলাম , কিভাবে সে রাজি হয়েছিলো সেটা ইতিহাস। শুধু জানি আমরা একটি সুন্দর গতিময় জীবনের মধ্যে ছিলাম। এতো ভালোবাসা, এতো সুন্দর জীবন যে পরম করুণাময় দিতে পারে আমার সেটা বিশ্বাস হচ্ছিলো না। তখন শুধু মনে হতো জীবন টা অনেক সুন্দর। আলো যতক্ষণ আমার পাশে থকত শুধু মনে হতো ইসস সারা জীবন যেনো সে আমার আলো হয়ে থাকে। শুধু রবীন্দ্রনাথের হৈমনিতর মতো মনে হতো ,”আমি ইহাকে পাইলাম”। কিন্তু পরম করুণাময় আমদের এই সুন্দর জীবনে আঘাত হেনেছিলো।

বিচ্ছেদ

বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর আমি একটি চাকরি তে যোগদান করি. বাবা মা আমার বিয়ের জন্যে ব্যস্ত হয়ে পরে। অনেকে ভাবতে পারেন সমস্যা কি, আলো কে বিয়ে করলেই তো হয়। না হয় না। আলো আর আমার ধর্ম এক ছিলো না। তাদের পরিবার ছিলো ইসলাম ধর্মালম্বী , আর আমরা ছিলাম অন্য ধর্মের। আমার মা প্রায় আফসোস করে বলতো ,”ইসস মেয়েটা যদি আমাদের ধর্মের হত”। আলো প্রথমে তার পরিবার কে রাজি করাতে চেয়েছিলো, কিন্তু পারেনি। সে আমাকে বলেছিলো পালিয়ে যাই। কিন্তু বাবা মার এক মাত্র সন্তান হবার জন্যে তাও করতে পরি নি। তাছাড়া আলোর পরিবার , এবং আশ পাশ থেকে আমাদের পরিবার কে হুমকি দেয়া হচ্ছিলো। এরপর খুব দ্রুত আলোর বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের আগে আলো শেষ বারের মতো আমার সাথে দেখা করে। অনেক কেঁদেছিল সে। পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো আমার সাথে । আমি পারিনি, সাহস করে উঠতে পারিনি।

পুনশ্চ :


অনেক বছর পার হয়ে গেছে। সেইসব দিন গুলি আজ শুধু ইতিহাস। আমি আর বেশিদিন বাচবো না। কিডনি জনিত জটিল রোগে আক্রান্ত আমি হাসপাতালের বেডে শুয়ে সেইসব দিনের কথা চিন্তা করি। আজ শুধু মনে হয় কি হতো যদি একটু সাহস দেখাতাম। ইসস একবার যদি সেই সময়ে ফিরে যেতে পারতাম। শুধু একবার তবে ঠিক আলো কে নিয়ে পালিয়ে যেতাম। জীবনের আলো আর বেশিদিন নেই আমার জন্যে। ছোটট এই জীবনে অপূর্ণতা রয়ে গেলো। হায় ঈশ্বর আমাকে আরেকবার সুযোগ দাও !

হও
হা আমি এটা হাতে দেবো। আমি ঈশ্বর অন্তত আমার লেখায়। আমি সবার ধর্ম এক করে দেবো। ইশ্বরের কোনো কিডনি রোগ হবে না। সে তার আলো কে নিয়ে পুরা জীবন কাটাবে। আমি আমার রচনায় যা খুশি করতে পরি। আমি এখানে সর্বশক্তিমান। আমি শুধু বলবো , “হও”।











সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:০৪
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমুখী একটি চাওয়া

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২০


মানুষের মুখে হাসি ফুটুক,
আঁধার মুছে আলোর ছোঁয়া,
ক্লান্তিহীন পথ চলুক,
নতুন স্বপ্ন আনবে জোড়া।

দিনবদলের শপথ নিয়ে,
কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করে যাই,
নদীর স্রোতে ভেসে ভেসে
একটি স্রোতে মিলিয়ে যাই।

সবার তরে সমান বিচার,
ধনীর দুঃখীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ

লিখেছেন জ্যাকেল , ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×