মেঘ-
বৃষ্টি, মনে আছে তোর আর আমার প্রথম পরিচয়ের কথা?
বৃষ্টি-
হুম মনে আছে। মনে থাকবেনা কেন? স্মৃতি কি কখনো মন থেকে মুছে যায় নাকি? মনে আছে তুই ঘুম থেকে উঠেই আমার সাথে কথা না বলে অফিসে যেতি না। বলতি নারে বৃষ্টি তোর সাথে কথা না বলে গেলে আমার অফিসের কোন কাজে মন বসে না। আর প্রতিদিন আমার পছন্দের একটা গান পাঠিয়ে যেতি। না শুনলে শূন্যতা বুকে নিয়ে বলতি ঠিক আছে সময় করে শুনে নিস। বড্ড পাগল ছিলি তুই।
মেঘ-
তাই নাকি? কেন? কার জন্য,কিসের জন্য করেছিলাম? তুই বুঝলিনা। কি বোকা মেয়ে ছিলে। নাকি না বুঝার ভান করতে?
বৃষ্টি-
ইস তুই কত গল্প কবিতা লিখতি আমার জন্য। মনে আছে একদিন একটা কবিতার কথা। তুই কবিতা বললি....
আমার ছায়াতে তোমার হাসিতে মিলিত ছবি
তাই নিয়ে আজি পরানে আমার মেতেছে কবি।
পদে পদে তব আলোর ঝলকে
ভাষা আনে প্রাণে পলকে পলকে
মোর বাণীরূপ দেখিলাম আজি...নির্ঝরিনী..
তোমার প্রবাহে মনেরে জাগায় নিজেরে চিনি!!
বলার পরে আমি ওয়াও!! অনেক সুন্দর। অনেক সুন্দর বলেছিলাম।
মেঘ-
আর আমি হাসতে হাসতে শেষ। আমার হাসি দেখে তোর আরও রাগ। বাপরে!! হা হা হা মনে থাকবেনা কেন? সব মনে আছে। এই তো সে দিনের কথা। আমি হাসি থামিয়ে বললাম এটা আমার কবিতা না। এটা শুনে তুই আরও বেশি রেগে গেলি। কারণ তুই বলেছিলি তোর জন্য লিখা যেগুলো কবিতা সেগুলো যেন আমি তুকে শুনাই। অভিমানী মন নিয়ে চলে গেলি। আমার কোন কথাই আর শুনলিনা।
বৃষ্টি-
তবে জানিস তোর কন্ঠে যেকোন কবিতাই শুনিনা কেন আমার কেন যেন এক ভালোলাগার অনুভূতি কাজ করতো। কবি নিবারণ চক্রবর্তীর কবিতাও অনেক ভালো লাগলো।
মেঘ-
তোর অভিমানী ভালোলাগাইতো আমাকে এমন ভাবে হারিয়ে নিয়েছিলো আকাশ ছুঁতে।
বৃষ্টি-
নাহ আমি তো তোকে কখনও বলিনি। আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন দেখাইনি। তুইতো ভুল করেছিলি।
মেঘ-
আমিতো বুঝেছিলাম আমার শব্দগুলো তোকে বুঝিয়ে দিবে না-বলা কথাগুলো। সুরগুলো তুকে ধন্য করে তোর মনের বাগানে ফুল ফুটাবে। তুই বলিসনি কিন্ত তোর আচরণ তোর পাগলামী আমাকে কিভাবে যে জড়িয়ে নিয়েছিল আমি বুঝতেই পারিনি।
বৃষ্টি-
যেই বললাম আমার ভালোবাসার কথা ভালোবাসার প্রদীপের কথা
সেই সময়ই তোর সমস্ত কবিতাগুলো ছন্নছাড়া হয়ে গেল।
মেঘ-
হবেনা...!! আমার কবিতার স্বপ্ন দেখিয়েছিল কে? ভাল করে বাঁচার পথ কে দেখিয়েছিল? না জানা কথাগুলো কে জানিয়েছিল? বলতে পারিস? সেই তুই?
বৃষ্টি-
আমার সাজানো সংসারের কথা শুনার পর থেকে তুই আমার সাথে কথা বলা একরকম বন্ধই করে দিলি। আমি বললাম শুন এমন পাগলামী করিস না।
মেঘ-
আমিতো তোকে নিয়ে একটা রাজ্য গড়েছিলাম। সে রাজ্যে শুধু তুই,আমি আর আমাদের ভালোবাসা। জন্ম দুঃখীনি মাকে তোর কথা সব বলেছিলাম আর বলেছিলাম মা দেখো তোমার দুষ্টু ছেলে এবার সত্যি সত্যি ভালো হয়ে যাবে আর ছেলের জন্য তোমার এতো কষ্ট করতে হবেনা। মা কত্ত খুশি। তোকে দেখার জন্য অস্থির। আমি বললাম মা আমিতো এখনও দেখিনি তোমায় কি করে দেখাবো? শুধু ফেবুর অনলাইনে কথা হয় আর মোবাইলে। দেখা হয়নি কখনো, এমন কি একটা ছবিও দেখিনি। তবে না দেখা হলে কি হবে হৃদয়ের ক্যানভাসে কী সুন্দর করে এঁকে রেখেছি। সেটাতো তুমি দেখতে পারবানা। মা হেসে বলে পাগল ছেলে আমার!! আজকালের ছেলে-মেয়েদের মতি গতি বুঝিনারে।
বৃষ্টি-
তুই অনেক কষ্ট পেয়ে আবার খানিকটা আগের মতো হয়ে গেলি। আমি বললাম ভালোবাসা নাই বা হলাম ভালো বন্ধুতো হতে পারি?
কি বলিস?
মেঘ-
আমাকে সময় দিতে হবে। নিজেকে একটু সামলে নেই। মনের উপর যে দহন গেছে একটু শান্ত করে নেই।
বৃষ্টি-
ওকে সময় নিবি ভালো কথা সমস্যা নেই কিন্তু এমন কিছু করবিনা যেটার কারনে তোর আগামীর কোন সমস্যা হয়। অনেক কিছু বুঝিয়েছি বিশেষ করে তোর মায়ের কথা। মায়ের কথা বলার পর একটু শান্ত হলি। তুই যখন তোর মায়ের কথা বলতি তখন আমার অনেক ভালো লাগতো। অনেক ভালোবাসিস তুই তোর মাকে।
মেঘ-
হুম আমার মা আমার পৃথিবী।
মেঘ-বৃষ্টি হয়ে গেলো মেইল বন্ধু । ওরা সময় পেলেই মন খুলে আড্ডা দেয় সেটা হয়তোবা কবিতার ছন্দে ছন্দে না-হয় গানে গানে।
আজ ক'দিন থেকে বৃষ্টি মেঘের কোন খবর পাচ্ছেনা। কি হল মেঘের। মেঘ কোন মেঘমালায় হারিয়ে গেল। এমন তো কখনো হয়না। কোথায়ও যাবার আগে অন্তত পক্ষে একটা মেইল দিয়ে যায়। কোন মেইলও দিচ্ছেনা ফোনও করেনি। বৃষ্টি একটার পর একটা মেইল দিচ্ছে কল দিচ্ছে কোন রিপ্লাই দিচ্ছেনা। কারণ কি?
বৃষ্টি চিন্তায় পরে গেল...........
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৩৯