somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবিনাশের স্বপ্ন (পর্ব-৪)

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রাশিদুল ইসলাম লাবলু’র উপন্যাস এর খন্ড অংশ।

অবিনাশের ঘুম ভেঙে যায়। দুচোখ খুলে জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে সূর্য মাথার উপর।চোখ ফিরিয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে দুপুর দুইটা।রাত্রি জেগে নাইট কোচে ঢাকাতে এসেছে। গতকালের ঘটনাগুলো চোখের সামনে ভেসে আসছে। রফিকের বাবার কি অবস্থা কে জানে? মানুষটি সুস্থ আছে তো? রফিকতো আর যোগাযোগ করে নাই।হেনা, হেনার হাজবেন্ড সহ অবিনাশ সবাই একসাথে নাইটকোচে এসেছে। হেনার হাজবেন্ড মানুষ হিসেবে সত্যিই চমৎকার। মিশুক প্রকৃতির মানুষ। হেনাকে খুব ভালবাসে। তার আচরনে বোঝা গেলো। ভাল না বেসেই বা কি করবে? স্ত্রি তার জন্য পিতা মাতা সবাইকে হারিয়েছে। সেই স্ত্রিকে ভালো না বাসলে বিবেক বলে কি কিছু থাকে? অবিনাশ বিছানা ছেড়ে ওঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ব্রাশ করতে শুরু করে। হঠাৎ অবিনাশের মনে পড়ে হেনার মোবাইল নাম্বারটা তো নেওয়া হলো না। সেদিন অবশ্য হেনা ফোন দিয়েছিলো কিন্তু সেই নাম্বার টাকি মোবাইল লিস্টে পাওয়া যাবে। দেখা যাক মোবাইল ইনকামিং চেক করে না হয় সেভ করে নেওয়া হবে।মেসে তেমন কেউ নেই। মেসের সবাই চাকরী করে। অবিনাশ আর রফিক এই দুজনেই স্টুডেন্ট।অবিনাশ রান্না ঘরে গিয়ে দেখে বুয়া থরে থরে খাবার সাজিয়ে রেখেছে। অবিনাশের খাবার নিজ ঘরে নিয়ে এসে মাদুর পেতে খেতে শুরু করে। খেতে খেতে ভাবতে থাকে অনেক দিন বাড়িতে যাওয়া হয় নাই।মা বোন ওরা যেতে বলে কিন্তু যাওয়া হয় না। ভার্সিটি বন্ধ এই সুযোগে যাওয়া উচিত। অবিনাশ ঘর থেকে বেরুতে প্রস্তুতি নেয়। অনেকদিন সোহরাওয়ার্দীতে যাওয়া হয় নাই।এই একটি জায়গায় অবিনাশের প্রিয়। নিরিবিলি বসে বসে অনেক কিছু ভাবা যায়। অনেক বিষয়বস্থু বিশ্লেষন করা যায়। তাচাড়া গতকাল আসবার পরে মারুফেরে সাথেও দেখা হয় নাই।প্যান্ট শার্ট পড়ে অবিনাশ ঘর বন্ধ করে।তালা দিয়ে সিড়ি দিয়ে নামতে শুরু করে।

সোহরাওয়ার্দী পার্ক। অবিনাশ বসে আছে। একজন বাদামওয়ালা চাচা বাদাম নিয়ে পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। অবিনাশ চাচাকে ডাকে ‘ওহ চাচা’। বাদামওয়ালা দাড়ায়। অবিনাশকে বলে; ‘বাদাম নিবেন?’ অবিনাশ বলে ‘হ্যা দাও। একশ গ্রাম বাদাম দাও।’ চাচা বাদাম দিয়ে গেলো। অবিনাশ বাদাম খাচ্ছে। হঠাৎ ফোন আসে। অবিনাশ ফোন রিছিভ করে। অপর প্রান্ত থেকে বলে; ‘অবিনাশ তুই এসেছিস?’ অবিনাশ বলে ‘হ্যা এসেছি। আচ্ছা বোস। আমি আসছি।’ অবিনাশ ফোন রেখে দিয়ে বাদাম খেতে শুরু করলো। হঠাৎ ছোট একটা ছেলে এসে বললো; ‘আমাকে কিছু বাদাম দিবেন স্যার?’ অবিনাশ ‘বাদাম খাবি?’ ছেলেটি বললো ‘হ্যা।’ ‘ঠিক আছে এখানে বস’ বলে অবিনাশ। ছেলেটি বসে বাদাম খেতে থাকে।অবিনাশ বলে ‘তোর বাবা মা কই থাকে’ ছেলেটি বলে’ ‘আমার বাবা মা নেই। আমি রাস্তায় থাকি।’ অবিনাশ বলে ‘কাজ কাম কিছু করিস?’ ছেলেটি বলে; ‘না স্যার কিছু করি না।তো ভোরে বস্তা লইয়া কিছু ভাংড়ি খুটি যদি পাই তো সেদিন খাই যেদিন পাই না সেদিন চাইয়া চাইয়া খাই। কেউ দিলে খাই না দিলে না খাই।’ অবিনাশ বলে;‘তুই থাকিস কোথায়?’ ‘স্যার কারওয়ান বাজারে এইচএসবিএস ব্যাংকের বিল্ডিং এর বারান্দায় থাকি।’ অবিনাশ বলে ‘তুই জন্মের পর থেকে কি একা? তোর বাবা মা?’ ‘না স্যার তিন বছর আগেও আমার মা ছিলো। আমার সাথে একসাথে এটিএন বিল্ডিং এর পাশে রাস্তায় আমরা ঘুমাতাম।একদিন হঠাৎ রাতে আমারে বললো বাবা তুই বড় হইছোস। আমি কিন্তু আর তোরে চালাইতে পারুম না। নিজের খাবার নিজেই যোগাড় কইরা খাইবি। আর আমি কিন্তু তোর নিজের লগে রাখতে পারুম না। তোর বাপ তোরে রাইখা পালাইছে এই মানে তো আর এই না জীবনভর তোরে বইয়া যাইতে হমু।আমারও তো জীবন বইলা কিছু আছে? তার পর আমি মারে জিগাইলাম মা তুমি তোমার লগে আমারে না রাখলে আমি কার সাথে থাকুম? মা কয় এতো বড় দুনিয়ায় তোর মতো এতিম অনেক পোলাপান আছে তারা থাকে কেমন করে? আল্লার দুনিয়ায় আল্লা কাউরে ঠকায় না।’ ছেলেটি খুব দ্রুতগতিতে এসব কথা বলছিলো আর বাদাম খাচ্চিলো। অবিনাশ মনোযোগ দিয়ে ছেলেটির কথা শুনছিলো। অবিনাশ বলে ‘তারপর থেকে তোর মার সাথে কি দেখা হয় নাই?’ ছেলেটি বললো; ‘না আমার দেখা হয় নাই। তবে আমার এক বন্ধুর লগে দেখা হইয়াছিলো। বন্ধু আমারে কইলো মা নাকি আবার বিয়া বইছে। একজন লোকরে লইয়া কোন এক বস্তিতে থাকে।’ অবিনাশ বলে ‘তুই মাকে খোজার চেষ্টা করিস নাই।’ ‘না!খুইজা কি করুম? যেই মা আমারে ফেলাইয়া চইলা গেছে। সেই মারে খুইজা আর কি করুম? মা ভালো থাকতে চাই। থাকুক। ভালো থাকুক।আল্লা যদি চাই তো আমিও ভালো থাকুম।’ অবিনাশ খুব মনোযোগ দিয়ে ছেলেটির কথা শুনছিলো। ছেলেটিকে খুব তিক্ষ বুদ্ধির অধিকারী বলেই মনে হলো।রাস্তার যে সকল টোকাই বিচরন করে ঠিক তাদের মতো নই।সুযোগ পাইলে এই ছেলেও বড় হতে পারে। ভালো ছেলে। ‘তুই কি সিগারেচ টানিস? না স্যার আমগো বন্ধুরা অনেক চেষ্টা করেছে আমারে সিগারেট টানানোর জন্য কিন্তু আমি টানি নাই।’ অবিনাশ বেশ কিচুক্ষন ধরে নিরব থাকলো।ছেলেটি বাদাম খাচ্ছে। বাদাম খেয়ে যেনো খুব আনন্দ পাচ্ছে।অবিনাশ এবার প্রশ্ন করে;‘পার্কে কেনো এসেছিলি?’ ‘স্যার আমি ক’দিন ধরে ভাবছিলাম পার্কে যদি বাদাম বিক্রয় করা যেতো তাইলে আমার জীবনটা ভালো ভাবে চলতো।বস্তিতে একটা ঘর ভাড়া নিতে পারতাম।ভাঙ্গাড়ি খুইটা কিছু হয় না স্যার তাই পার্কে এসেছিলাম। দেইখা গেলাম।কিছু টাকা জমাইছি।বাদাম কিনতা পারুম।’ অবিনাশ ছেলেটির কথা শুনছে আর মুগ্ধ হচ্ছে। ছেলেটি সাবলীল ভাষায় অনর্গল কথা বলছে।অবিনাশ বলে ‘আজ সকালে ভাঙ্গাড়ি খুটতে গেছিলি?’ ‘জী স্যার গেছিলাম কিন্তু কিছু জুটে নাই। তাই তো আজকের দিনটা চাইয়া চিন্তা চলছে।’ ‘তাহলে রাতে খাবি কি?’ ‘স্যার রাত হলে আল্লায় জোগাড় কইরা দিবো।স্যার।গরীবের আল্লা থাকে স্যার।’ অবিনাশ অবাক হয়ে ছেলেটির পানে চেয়ে থাকে।আল্লার প্রতি অগাধ বিশ্বাস ছেলেটির। কোন একটা কর্ম করে আয় রোজগার করবার যথেষ্ট প্রচেষ্টা রয়েছে ছেলেটির।অবিনাশ ভাবতে থাকে। এতটুকু একটি ছেলে অত অল্প বয়সে জীবনযুদ্ধে নেমে গিয়েছে। অথচ ওর এই সময়টিতে খেলা করা সময়।এই যে বঞ্চিত মানুষেরা অভাব অনটনে থাকা মানুষেরা এরা এদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারলেও বড় কোন অসুখ বা অন্য কোন বিপদে এরা নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষা করতে পারে না।কারন ওদের উপার্জিত আয় শুধুমাত্র জীবিকা নির্বাহ করতেই ব্যাস্ত।অন্যান্য অভাব মেটাতে পারেনা। অবিনাশ বেশ কিছু সময় নির্বাক থাকে। ছেলেটি বাদাম খাচ্ছে। অবিনাশ ছেলেটির অসাহয়ত্ব কে বোঝার চেষ্টা করছে।অবিনাশ খেলেটিকে পকেট থেকে ১০০টাকার নোট বের করে দিয়ে বলে-‘টাকাটা ধর। রাতে খাওয়া দাওয়া করিস’।ছেলেটি খুব খুশি মনে টাকাটা নেয়। নিয়ে বলে-‘স্যার আপনি খুব ভালো মানুষ।’ অবিনাশ বলে ‘তুই বাদাম বিক্রি করবি কবে থেকে?’ ‘স্যার করবো। বাদাম রাখা এবং বাদাম ভাজার জন্য একটি ঘর দরকার। সেই ঘরে আমি থাকবো আর বাদাম ভাজবো। আর সারা দিনে বাদাম বিক্রয় করবো।’ অবিনাশ ভাবতে থাকে। এই শ্রেনির মানুষগুলোকে কে নিরাপত্তা দেবে? সমাজে এতটা অবহেলিত? তার তো কেউ নেই। এই রাষ্ট্র সমাজব্যবস্থা ছাড়া তার তো আর কেউ নেই। মানবতার কথা বললে বলা যায় আমেরিকা এই শ্রেনির মানুষেরা সরকারিভাবে কিছুটা অর্থ সহায়তা পাই।এতে তাদের খাবার কষ্টটা তো লাঘব হয়।কিন্তু আমেরিকা তো ধনীক রাষ্ট্র তাদের দ্বারা এটি সম্ভব হতে পারে। কিন্তু গরীব দেশগুলোতে কি এসকল ব্যবস্থা আনয়ন কি সম্ভব নয়? আসলে সমাজে এমন একটা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থাকা উচিত যে ব্যবস্থা এই সকল নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের অন্তত দুবেলা দুমুঠো খেয়ে অন্তত শান্তিতে থাকার ব্যবস্থা করতে পারে।সমাজতন্ত্রের যুগে একটি সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো কিন্তু সেই সমাজতন্ত্রবাদ তো ধনীক শ্রেনির যোগ্যতার প্রতিবন্ধিকতা ছিলো বলেই বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে সমাজতন্ত্র কেমন যেনো হারিয়ে যাচ্ছে।আবার এই সাম্যবাদ ইসলামের যাকাতভিত্তিক অর্থনীতির মাঝেও বিদ্যামান। ধনীক শ্রেনির কাছ থেকে নির্দীষ্ট পরিমান টাকা ট্যাক্স আকারে কেটে গরীব শ্রেনির মাঝে বিতরণ করলে নিম্নবিত্ত্বশ্রেণির মানুষদের কষ্টটা লাঘব হবে।আসলে এই পৃথিবীতে এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা খুবই জরুরী।গভীর চিন্তার মধ্যে আটকে পড়েছিল অবিনাশ। ছেলেটির কথার মাঝে তার চেতনা ফিরে এলো। ছেলেটি বলছে ‘স্যার আমি আসি’। অবিনাশ বললো ‘ঠিক আছে যাও। স্যার আপনার মোবাইল নাম্বারটা দেবেন। যদি কখনও প্রয়োজন পড়ে আপনার সাথে যোগাযোগ করবো।’ ‘ঠিক আছে যোগাযোগ কর।’ ছেলেটিকে অবিনাশ তার মোবাইল নম্বর দিয়ে দেয়।ছেলেটি সালাম দিয়ে চলে যাই।

বেশ কিছুক্ষন অবিনাশ সোহরাওয়ার্দীতে বসে আছে অথচ বন্ধু মারুফ এখনও এখনও এলো না।সন্ধ্যা হয়ে গেছে। চারিদিকে অন্ধকার হতে শুরু করেছে। অবিনাশ ফোন করে মারুফ কে। মারুফ অপরপ্রান্ত থেকে বলে ‘ভাইরে আমি তো অফিসে আটকে গেলাম। আমার তো আসতে দেরী হবে বলেই মনে হচ্ছে।তুই না হয় মেসে চলে যা। আমি মেসে চলে যাবো। হঠাৎ করে স্যার কিছু কাজ দিয়ে দিয়েছে। কাজ শেষ না করে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অবিনাশ বলে ‘ঠিক আছে আমি তাহলে মেসে গেলাম।’ অপর প্রান্ত থেকে বলে ‘হ্যা যা।’
অবিনাশ ফোন রেখে দিয়ে হাটতে শুরু করে। সোহরাওয়াদী গেট হয়ে বের হয়ে যেতে যেতে অবিনাশের মনে হয় এত তাড়াতাড়ি বাড়ি না গিয়ে একুট হাটাহাটি করা যাক। অবিনাশ হাটতে শুরু করে।হাটতে হাটতে সোহরাওয়ার্দী পার্কের পাশ দিয়ে রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে যাচ্ছে। যেতে যেতে দেখে কিছু মেয়ে রাস্তার পাশে সোহরাওয়ার্দীর পার্কের কাছে দাড়িয়ে আছে।আর এই পার থেকে উঠতি বয়সের কিচু ছেলে মেয়েগুলোর সাথে কথা বলছে।অবিনাশ বুঝতে পারলো অবৈধ লেনদেন চলছে।কিছুক্ষন পর ছেলে দুজন পার্কের প্রাচীর টপকে ভিতরে ঢুকে গেলো।মেয়েগুলোর সাথে ছেলেগুলো অন্ধকারের সোহরাওয়াদীতে হারিয়ে গেলো। অবিনাশ এগুলো দেখতে দেখতে যাচ্ছিলো।অবিনাশ বুঝতে পারলো রাতের সোহরাওয়ার্দী এভাবে ব্যস্ত থাকে। নারী পুরষের এই লীলা চলতেই থাকে গভীর রাত্রি জুড়ে। অবিনাশ ভাবতে থাকলো এই যে নারীরা যারা রাতের আধারে টাকার বিনিময়ে পর পুরুষের কাছে নিজেদের দেহ সপে দেয়। খোজ নিলে দেখা যোবে কেউ কেউ স্বামী পরিত্যক্ত,অথবা কোন মেয়ের বিবাহ হচ্ছে না।অথবা নিজের ও নিজের পরিবারের খরচ মেটাতে এগুলো করছে।আবার কেউ কেউ নষ্ট হয়ে গেছে নষ্টামির পথে নেমে গেছে ইচ্ছাকৃতভাবেই অতি টাকা আয়ের কারনে। হয়তো পরিবারের কেউ জানেই না যে তারা এগুলো করে বেড়ায়। হয়তো অনেকে জানে তারা গার্মেন্টেসে চাকরী করেছে অথবা কোন অফিস বা কোম্পানীতে নাইট ডিউটি করে।রাষ্ট্র সমাজ ব্যাবস্থার এই ব্যাভিচারী দৃশ্যগুলো কি বন্ধ করার কোন উপায় নেই? আপনি যদি কট্টর দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখেন। লাঠি পেটা করে কিন্তু সব বন্ধ করে দিতে পারবেন। কিন্তু মানবিক দিক দিয়ে যদি দেখেন তবে আপনাকে বিবেচনা শক্তি বা প্রজ্ঞাকে কাজে লাগাতে হবে। অনেক পুরুষ আছে যারা স্বল্প আয়ের কারনে বিবাহ করতে পারে নাই অথবা নিজের স্ত্রিকে নিয়ে ঢাকায় আসতে পারে নাই তাদের দৈহিক অভাব পূরন করতে এগুলো করছে।আবার অনেক স্বামী পরিত্যাক্তা নারী যারা তাদের জৈবিক প্রবৃত্তি মেটাতে এই পথগুলো বেছে নিচ্ছে।কিন্তু বাস্তবিকব ভাবে ভাবলেও বোঝা যাই এই সমস্যা সমাজ থেকে উচ্ছেদ করতে গেলে সামনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিবে বৈষম্যমূলক সামাজিক ব্যবস্থা এবং অভাববোধ। ধনী গরীবের ব্যাপক বৈষম্য! ধনী ক্রমশ ধনী হচ্ছে গরীব ক্রমশ গরীব হচ্ছে এই যে বৈষম্য যা সমাজের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের মূলে অবস্থান করছে।যে রিক্সাওয়ালা মানুষটি অভাবের কারনে তার স্ত্রিকে ঢাকায় আনতে পারতো তাহলে তাকে এই অনৈতিক কর্মকান্ড করতে হতো না অথবা যে নারীটি স্বামী পরিত্যক্ত হবার কারনে অভাব অনটনে ভরনপোষন মেটাতে এই পথ বেছে নিয়েছে তার যদি কিছু টাকা আয় থাকতো তাহলে অভাবে তাকে এই পথে নামাতে হতো না।এর জন্য দরকার বৈষম্য নিরসন করা।এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা সমাজের অতি ধনী-গরীব বৈষম্য রোধ করবে। ইসলামের যাকাত ভিত্তিক ব্যবস্থার মতো সমাজে এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারন করা যাতে ধনীক শ্রেনির হতে কিছু আয় গরীব শ্রেনির মাঝে বিতরন করা যায় এবং সেটি কেবলমাত্র রাষ্ট্রিয় মাধ্যমেই সম্ভব এবং এই সাম্যবাদই পারে সমাজের এসব অসংখ্য অনৈতিক কর্মকান্ডে রোধ করতে। এর জন্য দরকার নতুন একটি অর্তনৈতিক ব্যবস্থা। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে অবিনাশ মেসের সামনে চলে এসেছে খেয়ালই নেই।

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৩৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও আমার ভাবনা

লিখেছেন মেহেদী তারেক, ১০ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৪০

অবশেষে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হলো
আমি সবসময়ই প্রজ্ঞাপন দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে ছিলাম। কারণ, বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য জনগোষ্ঠী এখনো দলটিকে সমর্থন করে। এত বড় একটি জনগোষ্ঠীর মতামত কিংবা... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিষিদ্ধ নয়, শুধু নড়াচড়া বন্ধ: আওয়ামী লীগ, ‘কার্যক্রম’ ও বিরোধীদের বিভ্রান্তির রাজনীতি

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই মে, ২০২৫ রাত ১:৫২


“আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে”—এই লাইনটি ফেসবুকে ঝড় তুলেছে, চায়ের কাপে তুফান এনেছে, এবং কিছু বিরোধী রাজনীতিকের মুখে সাময়িক হাসি ফিরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু একটু থামুন ! খেয়াল করুন: বলা হয়েছে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আঁচলে বাঁধা সংসার

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১১ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:২০



আমি তখন কলেজে পড়ি। সবেমাত্র যৌথ পরিবার ভেঙে মায়ের সঙ্গে আমাদের ছোট্ট একটা সংসার হয়েছে। নতুন সংসার গুছিয়ে নিতে, মা দিনের প্রায় সবটা সময় ঘরকন্নার কাজে পার করে দিতেন। ঘরের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৫৩

লিখেছেন রাজীব নুর, ১১ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:৪৫



কেন জানি মন মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।
কিছুই ভালো লাগছে না। ইচ্ছা করছে ঘোড়ায় চড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি। হাতে থাকবে চাবুক। যেখানে অন্যায় দেখবো লাগাবো দুই ঘা চাবুক। সমস্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

লিখেছেন নতুন নকিব, ১১ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৫

একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

প্রিয় পাঠক, গতকাল ১০ মে ২০২৫। এই দিনটি কোনো সাধারণ দিন ছিল না। এটি ছিল ঐতিহাসিক এমন একটি দিন, যা বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×