কাউকে যদি বলা হয়, একটি বিশাল অট্টালিকা বা একটি রাজপ্রাসাদ নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছে, তাহলে কেউ নিশ্চয় এটা বিশ্বাস করবেন না। যদি কেউ বলে, দেখ, এই দালানটি হঠাৎ নিজের থেকে তৈরি হয়ে গেল, সবাই তাকে পাগল বলবে। তাহলে বলুন, এ বিশ্ব চরাচর, এই যে সুউচ্চ আকাশ আর সুবিস্তৃত যমীন, এই ঊর্ধ্বজগত আর নিম্নজগত কীভাবে একজন স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারে? কোনো বানানেওয়ালা ছাড়া আকস্মিকভাবে অস্তিত্ব লাভ করতে পারে? নিশ্চয় এসবের একজন স্রষ্টা আছেন। একজন অসীম ক্ষমতাবান নিয়ন্ত্রক আছেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেন: ‘ তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারাই স্রষ্টা? তারা কি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না’ (সূরা আত-তূর: ৩৫-৩৬)।
একদা এক গ্রাম্য বেদুঈনকে বলা হয়েছিলো কিভাবে তুমি তোমার প্রতিপালককে চিনলে? তখন তিনি বললেন-পদচিহ্ন অতিক্রমকারীর প্রমাণ বহন করে, উটের মল উষ্ট্রীর অস্তিত্বের প্রমাণ বহন করে। তাহলে সুউচ্চ আসমান, সুপ্রসস্ত জমিন এবং উত্তাল সমুদ্র কেন সর্বশ্রোতা এবং সর্বদর্শীর অস্তিত্বের প্রমাণ করবে না?
প্রথম আমেরিকান মহাকাশচারী জন গ্লেন বলেন: “এ ধরনের সৃষ্টি দেখেও তুমি আল্লাহর উপর ঈমান আনবে না এটা অসম্ভব! এ সৃষ্টি তো আমার ঈমানকে আরো মজবুত করেছে। আমি এ চিত্রের আরো কিছু বিবরণ চাই।”
আল্লাহ তায়া’লা বলেন: আল্লাহ যথার্থরূপে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। এতে নিদর্শন রয়েছে ঈমানদার সম্প্রদায়ের জন্যে)। (আনকাবুত: ৪৪)।
আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেন: ‘ তারা কি তাদের উপরে আসমানের দিকে তাকায় না, কিভাবে আমি তা বানিয়েছি এবং তা সুশোভিত করেছি? আর তাতে কোনো ফাটল নেই। আর আমি যমীনকে বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক প্রকারের সুদৃশ্য উদ্ভিদ উদ্গত করেছি আল্লাহ অভিমুখী প্রতিটি বান্দার জন্য জ্ঞান ও উপদেশ হিসেবে’ (সূরা কাফ : ৬-৮)।
যে ব্যক্তি আসমানের দিকে তাকাবে, আসমানের নিপুণ সৃষ্টি, আসমানের সৌন্দর্য-বৈচিত্র্য এবং তার সুউচ্চতা ও শক্তির প্রতি লক্ষ্য করবে, সে তার মধ্য দিয়ে আল্লাহ তাআলার অসীম শক্তি ও ক্ষমতাই দেখতে পাবে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:১০