somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাশেম বিন আবু বকর

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হৈ চৈ বাধিয়ে দিয়েছেন তিনি। কারন ডেইলী মেইল তাকে নিয়ে লিখেছে। দেশের পত্র পত্রিকায় যার নামে এক লাইন নেই, তিনি কিনা ডেইলী মেইলের রিপোর্টের বিষয় বস্তু হয়েছেন!

তিনি বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত লেখকদের একজন। এটি চাট্টিখানি কথা নয়। যারা তার এই সাফল্যকে "চটি লেখক" বলে উড়িয়ে দিতে চান, তারা নিতান্তই হীনমন্যতায় ভুগছেন। কারন "চটি লেখক" রা স্বনামে লিখতে সাহস পান না, তাদের নিয়ে ডেইলী মেইল প্রতিবেদনও প্রকাশ করে না। সমাজের এক বিশাল অংশের মন ছুয়ে যাবার ক্ষমতা যিনি রাখেন তকে তুচ্ছ জ্ঞান করতে পারে শুধু আহাম্মকরাই। ডেইলী মেইল সেই আহম্মকদের একজন নয়। তাই স্বীকৃতি দিয়েছে তার সাফল্যকে। সমাজের এই অংশটি সাহিত্যের মূল স্রোতে ঠাই পায় নি। কিছু ক্ষেত্রে তাদের দেখা পেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে নেতিবাচক দৃষ্টিকোন থেকে। সেক্যুলারিস্টরা ধরেই নিয়েছে "ফুল কি, পাখী কি যারা চেনে না, তাদের নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই।"

"এএফপি বলছে, স্যেকুলার লেখকরা এমন এক দুনিয়ার গল্প বলেছে, যেখান থেকে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রধান অংশের গ্রামীণ ও ধর্মীয় জীবনের অস্তিত্ব মুছে ফেলা হয়েছে। কাশেম এই শূন্যতার বিষয়টি অনুধাবন করে তার উপন্যাসের বাজার গড়ে
তুলেছেন।"


এই ব্লগে তার লেখালেখি নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। তা থেকে যা বুঝতে পারছি তা হল তার উপন্যাসের বিষয় বস্তু রক্ষনশীল মুসলিম পরিবেশ। উপন্যাসের নায়িকা বোরখা পড়েন আবার প্রেম প্রত্যাখ্যান করার মত চারিত্রিক দৃঢ়তা দেখাতে পারেন না। সেখানে তিনি দুর্বল।
ধর্মীয় অনুশাসনের কঠোর অনুশীলনের মধ্যে থেকেও আত্ম নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তার উপন্যাসের পাঠকরাও মূলত সেই পরিবেশ থেকে আসা। যারা উপন্যাসের কাল্পনিক জগতের মধ্যে হারিয়ে যেতে চায়, ক্ষনিকের জন্য নিজেকে নিয়ে যেতে চায় এক স্বপ্নের জগতে। যেখানে রোমান্স করতে হলে ইসলামকে বিসর্জন দিতে হয় না।

তারপরেও কিছু কথা বাকী থেকে যায়। কাশেম বিন আবু বকরের পাঠকের অভাব নেই, তার উপন্যাস হট কেকের মত বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু তিনি কি কালোত্তীর্ন সাহিত্যিক হবার যোগ্যতা রাখেন? এই প্রশ্নটি রাখছি, তবে তার জবাব আমার কাছে নেই। জবাব পেতে হলে তার বই পড়তে হবে। তাকে মূল্যায়ন করতে হবে তার সৃষ্টিশীলতা দিয়ে। অতীতে রোমেনা আফাজ নামে এক লেখিকা "দস্যু বনহুর" নামে এক মেগা সিরিয়াল লিখে তোলপাড় করে দিয়েছিলেন। আজ তিনি কোথায়? মিডল স্কুলে থাকতে যে বই আমাকে সম্মোহিত করে রাখতে, সে বই আজ দেখলে ছুড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে।

কিন্তু কালোত্তীর্ন লেখক হতে গেলে যে সমস্ত সৃষ্টিই অসাধারন হতে হবে তা কিন্তু নয়। ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস পড়তে বসে প্রেমের ঘ্যানঘ্যানানি দেখে বিরক্তের চোটে বইটাই ছুড়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু তার অন্য আরেকটি বই পড়ে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলাম যে তিনি শক্তিশালী লেখক। তবে এও সত্য যে লেখকের শক্তিমত্তাকে সাধারন কোন ইকুয়েশনে ফেলা যায় না। ব্যবসা সফল লেখিকা আগাথা ক্রিস্টির কথাই ধরা যাক। তার লেখালেখিতে চরিত্রগুলো মূলত এলিট সমাজের। অথচ সমাজের সর্বস্তরের পাঠকের কাছে তিনি পাঠক প্রিয়তা পেয়েছেন। বাইবেল এবং শেকসপীয়রের পরেই তিনি স্থান করে নিয়েছেন ব্যবসা সফল লেখিকা হিসেবে। তার উপন্যাসের চরিত্রগুলোর ভেতরের জটিলতাকে সফল ভাবে তুলে ধরে ধরেছেন বলে সাহিত্যিক হিসেবেও তিনি সব মহলের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছেন। যার ফলে সার্বজনীন না হবার সীমাবদ্ধতা থাকলেও ক্রিস্টির অবস্থান এবং অবদানকে কারো পক্ষে অস্বীকার করা সম্ভব নয়।

কাশেম বিন আবু বকরের স্থান ইতিহাসে কোথায় হবে? তিনি কি রোমেনা আফাজের মত বিস্মৃতির অতল তলে একসময় হারিয়ে যাবেন? নাকি, ক্রিষ্টির মত সময়কে পরাজিত করে মানুষের হৃদয়ে নিজের আসন গেড়ে নেবেন?

সবাইকে শুভ কামনা।

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৫০
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×