স্মৃতি আমাকে সারা জীবন তাড়িয়ে বেড়ায়। মুহুর্ত অবসর পেলেই মনের মাঝে ভেসে উঠে কখনও শৈশব, কখনও কৈশোর, কখনও বা তারুন্যের প্রানোচ্ছল ছবি গুলো। যখনই মনে হয় অতীত স্মৃতি, তখনই চারপাশে এসে দাড়ায় কিছু পরিচিত মুখ, কিছু আপন জনদের ছবি।
বিতর্কিত বই "আমার ফাসি চাই" এর বিতর্কিত লেখক রেন্টু মারা গিয়েছেন। খবরটি ব্লগে পাই। কিন্তু তাতে কি হল? কতলোক কতভাবে মারা যায়। তার কে খবর রাখে? কিন্তু মানুষটি যখন ঘরোয়া আসরে কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকে তখন তার সূত্রে মনে পড়ে যায় সেই আসর গুলোর কথা, সেই চেনা মুখগুলোর কথা, সেই প্রিয় মানুষগুলোর কথা। সেরকম কিছু পারিবারিক আসরে এই বইটি একসময় ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। চা খাওয়ার ফাকে ফাকে চলেছে নানা আলোচনা। এই বইয়ের কতটুকু সত্য, আর কতটুকু মিথ্যা।
মোটামুটি রাজনীতি সচেতন একটি পরিবার আমাদের। পরিবারের সবাই কমবেশী রাজনীতির খবর রাখেন। হ্য়ত বাংলাদেশের মানুষের আর কোন কাজ নাই তাই সারাক্ষন রাজনীতি নিয়ে ভ্যাজর ভ্যাজর। সে পারিবারিক আসরে হট টপিক হয়ে যায় "আমার ফাসি চাই"। পারিবারিক বৈঠকের সেই স্মৃতি এখনও পুরোই টনটনে। ঠিকই মনে করতে কে কি বলেছিল। বাংলাদেশে সে এই বইটিকে কিছুটা হলেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। একেবারেই কিন্তু উড়িয়ে দেয়া হ্য় নি। হ্য়ত বাংলাদেশে এরকম লেখা আর কেউ তখনও লেখেনি বলে মানুষজন তখন গুরুত্ব দেয়। আমেরিকাতে তো এ ধরনের ঘটনা প্রচুর।প্রায়ই দেখা যায় হোয়াইট হাউজের গুরুত্বপূর্ন একজন মুখ খুলেছে। ইত্যাদি। কিন্তু বাংলাদেশ তো আর এতটা মুক্ত নয়।
মনে আছে মেজ ভাবী এই বইয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন, "এ ধরনের কথা সে লিখবে কেন?"
এদিকে আমি বলছিলাম, "সবই তো বুঝলাম কিন্তু হাসিনা কেন রেন্টুকে বহিষ্কার করলেন সেটা কিন্তু এই বই পড়ে ক্লিয়ার হয় নি। এটা কোথাও লেখা নেই ঠিক কি কারনে রেন্টু আর হাসিনার মাঝে অবিশ্বাসের দেয়াল তৈরী হয়।" এটা অনেকেই সমর্থন করলেন।
আবার রেন্টুর মৃত্যু সংবাদ আমাকে মনে করিয়ে দেয় প্রায় ভুলে যাওয়া বইটির কথা। চুম্বক অংশগুলোর কথা।
রেন্টু ভাল না খারাপ এ নিয়ে কথা বলে কোন কথা বলতে চাই না। তিনি নিজেই তো বলেছেন আমি বিশ্বাসভংগ করেছি। শেখ হাসিনা তাকে বহিষ্কার করেছেন বলেই এই বিশ্বাস ভংগ। বহিষ্কার না করলে জীবনেও হয়ত বা বিশ্বাস ভংগ করতেন না। ভাল খারাপ মিলিয়েই মানুষ। রেন্টুর সাহস আমার ভাল লেগেছে। হাসিনার শাসন আমলেই তিনি এই বই প্রকাশ করেছিলেন। এটি বড় সাহসের পরিচয়। বইটার মান ততটা উন্নত নয় এবং অনেক অতিরন্জিত। তাহলেও এই বইটি রাজনীতিবিদদের অনেক মুখোশ উন্মোচিত করে। এই বইটিকে অক্ষরে অক্ষরে বিশ্বাস করিনি কারন এটি তো ক্ষোভের বহিপ্রকাশ। কিন্তু আমিও মনে করি রাজনীতিবিদরা রক্তের রাজনীতির জন্য দায়ী।
(লেখাটি পরবর্তীতে এডিট করে আরো কিছু যোগ করব। এখন এভাবেই ব্লগে পোস্ট করছি। আমার ড্রাফট করার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। অনেক লেখাই হাওয়া হয়ে গিয়েছে। তার চেয়ে আগে ব্লগে দিয়ে পরে কারেকশন করব)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:১৩