বিখ্যাতদের দাম্পত্য জীবন -
চরিত্রহীন, লুইচ্চা, লম্পট এই শব্দগুলো শুধু পুরুষদের বেলায় প্রযোজ্য, নারীদের বেলায় না ৷ যেসব পুরুষ চরিত্রহীন হয়, তারা কার সাথে চরিত্র নষ্ট করে? নিশ্চয় পুরুষের সাথে না ৷ কোন না কোন নারীর সংস্পর্শেই তাদের চরিত্র নষ্ট হয় ৷ আর সেসব নারীদের আড়ালে রেখে আমাদের সমাজ সব দোষ চাপিয়ে দেয় পুরুষের উপরে ৷
নারীদের প্রতি আমাদের অপরিসীম শ্রদ্ধার কারনে, কোনো নারী চরিত্রহীন হতে পারে, কোনো নারীর মাঝে লাম্পট্য থাকতে এসব আমরা ভাবতেই পারি না ৷ পুরুষদের মানবিক দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে সমাজ পুরুষকে চিহ্নিত করেছে কামুক ধর্ষক হিসেবে, আর নারীকে দিয়েছে দেবীর আসন ৷
আজকে আমরা জানবো উপমহাদেশের এমন একজন দেবীর দাম্পত্য জীবন নিয়ে ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর এই প্রিয় ছাত্রীকে ডাকতেন, "প্রিয়দর্শিনী" বলে ৷ কে জানত এই প্রিয়দর্শিনী রাজনৈতিক মাঠের সাথে সাথে পুরুষদের হ্যার্টও কাঁপাবেন সমান তালে ৷ প্রিয় পাঠক, বলছিলাম উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনৈতিক শ্রীমতি ইন্দিরা নেহেরুর কথা ৷ ইন্দিরা নেহেরু এবং ফিরোজ জাহাঙ্গীরের প্রেম এক সময় ঝড় তুলেছিলো উপমহাদেশে ৷
অনেকে ফিরোজ জাহাঙ্গীরকে মুসলমান মনে করে ভুল করেন, তিনি ছিলেন জরাস্থুষ্ট্রীয় ৷ এটি পারস্যের অতিপ্রাচীন একেশ্বরবাদী ধর্মীয় মতবাদ ৷ এরা সাধারণত অগ্নিপূজক হয় ৷ এই ধর্মাবলম্বীরা পারস্য বা ইরান থেকে ভারতবর্ষে এসেছিলো বলে, এদেরকে পার্সীও বলা হয় ৷ ভারতের ধনকুবের রতন টাটা, অভিনেতা বোমান ইরানি, জন আব্রাহাম সহ অনেকেই পার্সী সম্প্রদায়ের ৷
ফিরোজের বাবা আনন্দ ভবনে মদ সাপ্লাই করতেন ৷ ফলে নেহেরু পরিবারের সাথে ফিরোজের পরিবারের সখ্যতা গড়ে উঠে ৷ ১৯৩০ সালে ফিরোজ একবার ইন্দিরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ৷ তখন জওহরলাল নেহেরু এবং কমলা নেহেরু ইন্দিরার বয়স কম বলে সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ৷
১৯৩৬ সালে ইন্দিরার মাতা কমলা নেহেরুর মৃত্যু হলে, জওহরলাল নেহেরু তাকে পড়ালেখার জন্য ইংল্যান্ডে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পাঠিয়ে দেন ৷ ফিরোজ তখন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র ৷ সেখানে দু'জনের কাছে আসা এবং ভালোবাসা হয় ৷ ইংল্যান্ড থেকে ইন্দিরা তার বাবাকে প্রায় শ'খানেক চিঠি লেখেন ৷ যার প্রতিটিতে শুধু একটা কথাই থাকত, "বাবা, আমি ফিরোজকে ভালোবাসি ৷"
নেহেরু পরিবার ছিলো ব্রাক্ষ্মণ ৷ হিন্দু শাস্ত্রমতে, ব্রাক্ষ্মণ ব্যতীত অন্য যে কোন ধর্মের লোকই শূদ্র বা নিচু জাত ৷ নিচু জাতের সাথে ব্রাক্ষ্মণ সন্তানের বিয়ে হলে জাত যাবে ৷ ইন্দিরা-ফিরোজের প্রেম তখন রাষ্ট্র হয়ে গেছে ৷ "মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নাই", রাজনৈতিক মঞ্চে এ কথাটি বলা যত সহজ; বাস্তবে তার প্রমাণ দেওয়া অনেক কঠিন ৷ জওহরলাল নেহেরু পড়ে গেলেন উভয় সংকটে; একদিকে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, অন্যদিকে জাত ৷
উপায়অন্ত না দেখে নেহেরু মহাত্মা গান্ধীর দ্বারস্থ হলেন ৷ মহাত্মা গান্ধী ফিরোজ জাহাঙ্গীরকে নিজের পালকপুত্র এবং ইন্দিরা নেহেরুকে পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন ৷ ফিরোজ জাহাঙ্গীর হয়ে গেলেন ফিরোজ গান্ধী, আর ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী নেহেরু হয়ে গেলেন ইন্দিরা গান্ধী ৷
১৯৪২ সালে তাদের বিয়েটা হয়েছিলো হিন্দু ধর্মানুসারে ৷ হিন্দু ধর্মমতে একজন মানুষ পৃথিবীতে সাত বার জন্ম গ্রহণ করে ৷ এক জন্ম থেকে আরেক জন্মের ব্যবধানকে জন্মান্তর বলে ৷ স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের সাত জনমের সঙ্গী এই বিশ্বাস থেকেই, বিয়েতে তারা অগ্নিস্বাক্ষী রেখে সাত পাক খায় ৷
ইন্দিরা-ফিরোজ জুটির প্রেম, ত্যাগ, সংগ্রাম আদর্শ হতে পারত ভারতবর্ষের প্রেমিক যুগলদের কাছে ৷ কিন্তু সে বিয়েটাও টিকলো না ৷ বিয়ের মাত্র আট বছরের মাথায় ১৯৫০ সালে দুই সন্তান রাজীব গান্ধী এবং সঞ্জয় গান্ধীকে নিয়ে ইন্দিরা চলে আসে পিতা নেহেরুর কাছে ৷ জন্ম জন্মান্তরের সঙ্গী বলে হিন্দু ধর্মে সাধারণত ডিভোর্সের প্রচলন নেই ৷ তাদেরও ডিভোর্স হয়নি, তবে ইন্দিরা আর ফিরে যায়নি ফিরোজের ঘরে ৷
কি ঘটেছিলো তাদের সংসার জীবনে?
ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের আগে ও পরে একাধিক প্রেমে মজেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী ৷ ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্কের পূর্বে শান্তিনিকেতনে তিনি প্রেমে পড়েছিলেন এক জার্মান শিক্ষকের । ওই শিক্ষক তাকে জার্মান ভাষা শেখাতেন ।
ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্ক থাকাকালেই মোহাম্মদ ইউনুস নামের আরো একজনের সাথে প্রেম ছিল ইন্দিরার । কে এন রাও তার "নেহেরু ডায়নাস্টি" বইতে লিখেছেন, ইন্দিরার ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধী মূলত ইন্দিরা-ইউনুসের ছেলে । মোহাম্মদ ইউনুসের লেখা "পারসন, প্যাশন অ্যান্ড পলিটিক্স" বইতেও এর ইংগিত পাওয়া যায় ৷
বিষয়টি আরো পরিস্কার হয় সঞ্জয় গান্ধী নিহত হওয়ার মাধ্যমে ৷ ২৩ জুন ১৯৮০ সালে নয়া দিল্লির কাছে সাফদারজং এয়ার পোর্টের কাছে জরুরি অবতরণ করতে গিয়ে নিহত হন সঞ্জয় গান্ধী ৷ পরে জানা যায় বিমানে বোমা বা বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল । যা মাঝ আকাশে বিস্ফোরিত হয় । ঘটনা স্থলেই মারা যান সঞ্জয় গান্ধী ৷ এই ঘটনার আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ছিলো সঞ্চয়ের মমতাময়ী মা ইন্দিরা গান্ধী ৷ বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনীতিতে জেষ্ঠ্য পুত্র রাজীব গান্ধীর পথ পরিষ্কার করার জন্যই তিনি এ পথ বেছে নেন ৷
সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর তাকে কে মেরেছে, এটা বুঝতে বিন্দু মাত্র দেরি হয়নি সঞ্জয়ের স্ত্রী মেনকা গান্ধীর । জানা যায় কংগ্রেসের বিপরীতে তিনি নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু সফল হন নি । পরে এক সময় যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি তে । তার পুত্র বরুণ গান্ধী বর্তমানে উত্তর প্রদেশের বিজেপির পার্লামেন্ট সদস্য এবং নরেন্দ্র মোদীর খুব কাছের মানুষ । বরুনের মা মেনকা বিজেপির হর্তা কর্তা দের একজন । রাহুল গান্ধী এবং বরুণ গান্ধী দুই জন কাজিন । কিন্তু দুইজন দুই মেরুর মানুষ ।
ইন্দিরা গান্ধী ও তার বাবা নেহেরুর ব্যক্তিগত সহকারী এম এ মাথাই তার আত্মজীবনী ‘'রেমিনিসেন্স অব দ্য নেহরু এজ’' বইয়ে লিখেন, নিজের স্বামী ফিরোজ গান্ধীকে খুব একটা পছন্দ করতেন না ইন্দিরা । প্রায় ১২ বছরের বেশি সময় ইন্দিরার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল তার । অবাধ এই যৌন সম্পর্কের ফলে একবার ইন্দিরা গর্ভবতী হয়ে পড়েন । পরবর্তীতে ইন্দিরার গর্ভপাত ঘটানো হয় । একাধিক পুরুষের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত থাকার কারণে ইন্দিরার সঙ্গে মাথাই তার যৌন জীবনের সমাপ্তি টানেন বলে উল্লেখ করেন ৷
দুনিয়াটা একটা রঙ্গ মঞ্চ ৷ আমরা প্রত্যেকেই এ রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা । অভিনয়ের মাধ্যমে সফলতার শীর্ষে আরোহন করে হয়ত দেবীর আসন লাভ করা যায়, কিন্তু মন থেকে সুখী হওয়া যায় কি? ইন্দিরা কি পেরেছিলেন মন থেকে সুখী হতে? স্বামী-সন্তান-সংসার সব কিছু তুচ্ছ করে ইন্দ্রিয় সুখের জন্য যারা একের পর এক পুরুষকে কাছে টানে, উত্তরটা তাদেরই ভালো জানা আছে৷বিখ্যাতদের দাম্পত্য জীবন -
চরিত্রহীন, লুইচ্চা, লম্পট এই শব্দগুলো শুধু পুরুষদের বেলায় প্রযোজ্য, নারীদের বেলায় না ৷ যেসব পুরুষ চরিত্রহীন হয়, তারা কার সাথে চরিত্র নষ্ট করে? নিশ্চয় পুরুষের সাথে না ৷ কোন না কোন নারীর সংস্পর্শেই তাদের চরিত্র নষ্ট হয় ৷ আর সেসব নারীদের আড়ালে রেখে আমাদের সমাজ সব দোষ চাপিয়ে দেয় পুরুষের উপরে ৷
নারীদের প্রতি আমাদের অপরিসীম শ্রদ্ধার কারনে, কোনো নারী চরিত্রহীন হতে পারে, কোনো নারীর মাঝে লাম্পট্য থাকতে এসব আমরা ভাবতেই পারি না ৷ পুরুষদের মানবিক দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে সমাজ পুরুষকে চিহ্নিত করেছে কামুক ধর্ষক হিসেবে, আর নারীকে দিয়েছে দেবীর আসন ৷
আজকে আমরা জানবো উপমহাদেশের এমন একজন দেবীর দাম্পত্য জীবন নিয়ে ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর এই প্রিয় ছাত্রীকে ডাকতেন, "প্রিয়দর্শিনী" বলে ৷ কে জানত এই প্রিয়দর্শিনী রাজনৈতিক মাঠের সাথে সাথে পুরুষদের হ্যার্টও কাঁপাবেন সমান তালে ৷ প্রিয় পাঠক, বলছিলাম উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনৈতিক শ্রীমতি ইন্দিরা নেহেরুর কথা ৷ ইন্দিরা নেহেরু এবং ফিরোজ জাহাঙ্গীরের প্রেম এক সময় ঝড় তুলেছিলো উপমহাদেশে ৷
অনেকে ফিরোজ জাহাঙ্গীরকে মুসলমান মনে করে ভুল করেন, তিনি ছিলেন জরাস্থুষ্ট্রীয় ৷ এটি পারস্যের অতিপ্রাচীন একেশ্বরবাদী ধর্মীয় মতবাদ ৷ এরা সাধারণত অগ্নিপূজক হয় ৷ এই ধর্মাবলম্বীরা পারস্য বা ইরান থেকে ভারতবর্ষে এসেছিলো বলে, এদেরকে পার্সীও বলা হয় ৷ ভারতের ধনকুবের রতন টাটা, অভিনেতা বোমান ইরানি, জন আব্রাহাম সহ অনেকেই পার্সী সম্প্রদায়ের ৷
ফিরোজের বাবা আনন্দ ভবনে মদ সাপ্লাই করতেন ৷ ফলে নেহেরু পরিবারের সাথে ফিরোজের পরিবারের সখ্যতা গড়ে উঠে ৷ ১৯৩০ সালে ফিরোজ একবার ইন্দিরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ৷ তখন জওহরলাল নেহেরু এবং কমলা নেহেরু ইন্দিরার বয়স কম বলে সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ৷
১৯৩৬ সালে ইন্দিরার মাতা কমলা নেহেরুর মৃত্যু হলে, জওহরলাল নেহেরু তাকে পড়ালেখার জন্য ইংল্যান্ডে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পাঠিয়ে দেন ৷ ফিরোজ তখন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র ৷ সেখানে দু'জনের কাছে আসা এবং ভালোবাসা হয় ৷ ইংল্যান্ড থেকে ইন্দিরা তার বাবাকে প্রায় শ'খানেক চিঠি লেখেন ৷ যার প্রতিটিতে শুধু একটা কথাই থাকত, "বাবা, আমি ফিরোজকে ভালোবাসি ৷"
নেহেরু পরিবার ছিলো ব্রাক্ষ্মণ ৷ হিন্দু শাস্ত্রমতে, ব্রাক্ষ্মণ ব্যতীত অন্য যে কোন ধর্মের লোকই শূদ্র বা নিচু জাত ৷ নিচু জাতের সাথে ব্রাক্ষ্মণ সন্তানের বিয়ে হলে জাত যাবে ৷ ইন্দিরা-ফিরোজের প্রেম তখন রাষ্ট্র হয়ে গেছে ৷ "মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নাই", রাজনৈতিক মঞ্চে এ কথাটি বলা যত সহজ; বাস্তবে তার প্রমাণ দেওয়া অনেক কঠিন ৷ জওহরলাল নেহেরু পড়ে গেলেন উভয় সংকটে; একদিকে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, অন্যদিকে জাত ৷
উপায়অন্ত না দেখে নেহেরু মহাত্মা গান্ধীর দ্বারস্থ হলেন ৷ মহাত্মা গান্ধী ফিরোজ জাহাঙ্গীরকে নিজের পালকপুত্র এবং ইন্দিরা নেহেরুকে পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন ৷ ফিরোজ জাহাঙ্গীর হয়ে গেলেন ফিরোজ গান্ধী, আর ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী নেহেরু হয়ে গেলেন ইন্দিরা গান্ধী ৷
১৯৪২ সালে তাদের বিয়েটা হয়েছিলো হিন্দু ধর্মানুসারে ৷ হিন্দু ধর্মমতে একজন মানুষ পৃথিবীতে সাত বার জন্ম গ্রহণ করে ৷ এক জন্ম থেকে আরেক জন্মের ব্যবধানকে জন্মান্তর বলে ৷ স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের সাত জনমের সঙ্গী এই বিশ্বাস থেকেই, বিয়েতে তারা অগ্নিস্বাক্ষী রেখে সাত পাক খায় ৷
ইন্দিরা-ফিরোজ জুটির প্রেম, ত্যাগ, সংগ্রাম আদর্শ হতে পারত ভারতবর্ষের প্রেমিক যুগলদের কাছে ৷ কিন্তু সে বিয়েটাও টিকলো না ৷ বিয়ের মাত্র আট বছরের মাথায় ১৯৫০ সালে দুই সন্তান রাজীব গান্ধী এবং সঞ্জয় গান্ধীকে নিয়ে ইন্দিরা চলে আসে পিতা নেহেরুর কাছে ৷ জন্ম জন্মান্তরের সঙ্গী বলে হিন্দু ধর্মে সাধারণত ডিভোর্সের প্রচলন নেই ৷ তাদেরও ডিভোর্স হয়নি, তবে ইন্দিরা আর ফিরে যায়নি ফিরোজের ঘরে ৷
কি ঘটেছিলো তাদের সংসার জীবনে?
ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের আগে ও পরে একাধিক প্রেমে মজেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী ৷ ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্কের পূর্বে শান্তিনিকেতনে তিনি প্রেমে পড়েছিলেন এক জার্মান শিক্ষকের । ওই শিক্ষক তাকে জার্মান ভাষা শেখাতেন ।
ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্ক থাকাকালেই মোহাম্মদ ইউনুস নামের আরো একজনের সাথে প্রেম ছিল ইন্দিরার । কে এন রাও তার "নেহেরু ডায়নাস্টি" বইতে লিখেছেন, ইন্দিরার ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধী মূলত ইন্দিরা-ইউনুসের ছেলে । মোহাম্মদ ইউনুসের লেখা "পারসন, প্যাশন অ্যান্ড পলিটিক্স" বইতেও এর ইংগিত পাওয়া যায় ৷
বিষয়টি আরো পরিস্কার হয় সঞ্জয় গান্ধী নিহত হওয়ার মাধ্যমে ৷ ২৩ জুন ১৯৮০ সালে নয়া দিল্লির কাছে সাফদারজং এয়ার পোর্টের কাছে জরুরি অবতরণ করতে গিয়ে নিহত হন সঞ্জয় গান্ধী ৷ পরে জানা যায় বিমানে বোমা বা বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল । যা মাঝ আকাশে বিস্ফোরিত হয় । ঘটনা স্থলেই মারা যান সঞ্জয় গান্ধী ৷ এই ঘটনার আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ছিলো সঞ্চয়ের মমতাময়ী মা ইন্দিরা গান্ধী ৷ বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনীতিতে জেষ্ঠ্য পুত্র রাজীব গান্ধীর পথ পরিষ্কার করার জন্যই তিনি এ পথ বেছে নেন ৷
সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর তাকে কে মেরেছে, এটা বুঝতে বিন্দু মাত্র দেরি হয়নি সঞ্জয়ের স্ত্রী মেনকা গান্ধীর । জানা যায় কংগ্রেসের বিপরীতে তিনি নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু সফল হন নি । পরে এক সময় যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি তে । তার পুত্র বরুণ গান্ধী বর্তমানে উত্তর প্রদেশের বিজেপির পার্লামেন্ট সদস্য এবং নরেন্দ্র মোদীর খুব কাছের মানুষ । বরুনের মা মেনকা বিজেপির হর্তা কর্তা দের একজন । রাহুল গান্ধী এবং বরুণ গান্ধী দুই জন কাজিন । কিন্তু দুইজন দুই মেরুর মানুষ ।
ইন্দিরা গান্ধী ও তার বাবা নেহেরুর ব্যক্তিগত সহকারী এম এ মাথাই তার আত্মজীবনী ‘'রেমিনিসেন্স অব দ্য নেহরু এজ’' বইয়ে লিখেন, নিজের স্বামী ফিরোজ গান্ধীকে খুব একটা পছন্দ করতেন না ইন্দিরা । প্রায় ১২ বছরের বেশি সময় ইন্দিরার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল তার । অবাধ এই যৌন সম্পর্কের ফলে একবার ইন্দিরা গর্ভবতী হয়ে পড়েন । পরবর্তীতে ইন্দিরার গর্ভপাত ঘটানো হয় । একাধিক পুরুষের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত থাকার কারণে ইন্দিরার সঙ্গে মাথাই তার যৌন জীবনের সমাপ্তি টানেন বলে উল্লেখ করেন ৷
দুনিয়াটা একটা রঙ্গ মঞ্চ ৷ আমরা প্রত্যেকেই এ রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা । অভিনয়ের মাধ্যমে সফলতার শীর্ষে আরোহন করে হয়ত দেবীর আসন লাভ করা যায়, কিন্তু মন থেকে সুখী হওয়া যায় কি? ইন্দিরা কি পেরেছিলেন মন থেকে সুখী হতে? স্বামী-সন্তান-সংসার সব কিছু তুচ্ছ করে ইন্দ্রিয় সুখের জন্য যারা একের পর এক পুরুষকে কাছে টানে, উত্তরটা তাদেরই ভালো জানা আছে৷
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১১