সাউথ কোরিয়ান ক্লাস সিনেমা দ্য চেজার এবং দ্য ইয়োলো সি সিনেমার পরিচালকের সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত এটি ।
মুক্তির পর থেকে বেশ আলোচিত ছিলো সিনেমাটি । সিনেমার কাস্টিং আর পরিচালক আপাতত এই দুটো কারণ ছিলো সিনেমাটি দেখার পেছনে ।
শুরুতে-ই সিনেমার এটমোস্ফিয়ার যেভাবে ক্রিয়েট করা হয়েছিলো মনে মনে ভাবছিলাম আরেকটি মেমরিস অফ মার্ডার বুঝি পেতে যাচ্ছি । ধীরেধীরে সিনেমা গল্প যতো গভীরে যাচ্ছিলো ততো-ই মনে হচ্ছিলো পরিচালক বুঝি খেই হারিয়ে ফেলেছেন । প্রটোগনিস্টের ক্যারেক্টার ডেভলমেন্ট সবচে দুর্বল ছিলো । একজন কপ যার কিনা মেয়ে ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত সে কিনা শুধু দৌড়াদৌড়ি আর কান্নাকাটিতে পুরো সময় পার করে দিচ্ছে । যেহেতু সে একজন পুলিশ সেহেতু তার উচিত ছিলো প্রাইম সাসপেক্ট জাপানিকে এরেস্ট করা । যদিও সে বারবার বলছিলো এই সবের মূলহোতা জাপানী , তবুও সে তাকে ছাড় দিয়ে গেছে । আর ওঝাকে দিয়ে ট্রিটমেন্টের পুরো সিচুয়েশন দেখে মনে হয়নি এই পরিচালকের আগের দুটো কাজ কতো সুপ্রিম লেভেলের ছিলো । আনকোরা পর্যায়ের স্টোরি লাইনের সাথে পরিচালনাও বেশ কমজোর । সিনেমার নামের সার্থকতা রক্ষা করেছে যদিও । শুরু থেকে পুরো সিনেমাতে "হাহাকার আর হাহাকার " এই বুঝি সিনেমার নামের সার্থকতা । ওঝার নাচের সিন দেখে শুধু হাসি আসছিলো । অযদিও ঐ সিকুয়েন্সের তাৎপর্য অনেক ছিলো বলে পরিচালক দেখাতে চেয়েছেন কিন্তু শেষে এসে আবার নৃত্য ভঙ্গের অংশটুকু আমাদের দেশীয় সিনেমায় আরো ১০/১৫ বছর আগে-ই দেখানো হয়ে গেছে ।
পুরো সিনেমার সিংহভাগ সিকুয়েন্স ছিলো বৃষ্টিতে । কোরিয়ান সিনেমায় বৃষ্টির আলাদা একটা মিনিং ছিলো এতোদিন , এই সিনেমায় এতো বেশি বৃষ্টির সিকুয়েন্স ছিলো যে বৃষ্টির প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেছি ।
মূল গল্প অনেক খাপ ছাড়া মনে হয়েছে , শুরুতে দেখানো হয়েছে এক ভয়ানক রোগের প্রাদুর্ভাব এই খুনগুলোর পেছনে দায়ী । এরপর সেই অজানা রোগকে কনভার্ট করে পুরো গল্প মোড় নিলো সুপার ন্যাচারাল প্রজেক্টে । কোরিয়ান সিনেমার আরেকটি স্ট্রং দিক হচ্ছে কে প্রটাগনিস্ট আর কে এন্টাগনিস্ট তা সিনেমার শেষে পরিষ্কার হয় । পুরো সিনেমা জুড়ে এক রকম দোটানা বজায় থাকে । এই কাজটি পরিচালক এখানেও করতে চেয়েছিলেন , এক্ষেত্রে বলবো তিনি সার্থক । সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক আর এই ব্যাপারটি ছিলো প্রশংসা দাবিদার ।
গল্প অনুযায়ী রান টাইম একটু বেশি মনে হয়েছে । পুলিশের মেয়ে সহ আরো বেশ কয়েকজন ভিক্টিমের শারীরিক অবনতির দৃশ্যগুলো অনেক বেশি লেন্থি ছিলো । মাঝে নরখাদকের ক্যারেক্টার বড় একটি দিক ঢাকা পড়ে গেছে । ঐ চরিত্র নিয়ে আরো কাজ করা যেতো । সাদা-জামা পড়া মেয়ে চরিত্রটি বেশি মিস্ট্রিয়াস ছিলো । হঠাৎ করে পাতা শুকিয়ে যাওয়া দৃশ্য দিয়ে কি বোঝানো হয়েছে তা ক্লিয়ার না আর কেনো-ই বা পাতা শুকিয়ে যাবে ?
কোরিয়ান ব্রুটাল-থ্রিলারের উপর এক্সসোরসিজম ছিটিয়ে পরিচালকের ভিন্ন কিছু দেখানোর প্রয়াসকে অভিনন্দন কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মনে হয়নি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২২