Director: Doug Liman
কোনো মুভি দেখার আগে ঐমুভিটি আপনার কতোটুকু ভালো লাগতে পারে না কিছু হলেও ডিপেন্ড করে এক্সপেক্টেশনের উপর… দেখা গেলো মুভিটা এভারেজে ভালো হয়েছে কিন্তু মুভি্র ট্রেলার অথবা আদারস ব্যাপারগুলো দেখে আপনার “এক্সপেক্টেশন” খুব বেশি হয়ে গেছে, ফলে মুভিটা আপনার ভালো নাও লাগতে পারে… এর বিপরীত ঘটনাও ঘটতে পারে, মুভি দেখার আগে “এক্সপেক্টেশন” কম থাকার কারণ এভারেজ মুভিও খুব ভালো লাগবে…
এই মুভি দেখার ক্ষেত্রে আমার সাথে দ্বিতীয় ব্যাপারটি ঘটছে, ট্রেলার দেখে ভেবেছিলাম ট্রিপিকাল টাইম-লুপ প্লটের উপর Action | Sci-Fi মুভি হবে তাই এক্সপেক্টেশন কম-ই ছিলো… আবার গত বছরের Oblivion দেখে খুব একটা মনোরঞ্জিত হতে পারি… সব মিলিয়ে-ই এক্সপেক্টেশন সীমিত পর্যায়ে ছিলো…
২০১৪ সালে যে কয়টি “সুপার্ব” মুভি দেখেছি তার মধ্যে Edge of Tomorrow (2014) স্থান পেয়ে গেছে…
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলো যথেষ্ট থ্রিল & সাসপেন্স সাথে একটু মিস্ট্রি… ইহা টাইম-লুপ প্লটের অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য… প্রথম হাফ পার হওয়ার পর থ্রিল আর সাসপেন্স বেশ কয়েকগুণ বেড়ে যায়… মুভির কনসেপ্ট বেশ ইউনিক লেগেছে আর ইউনিক কনসেপ্টের সাথে ছিলো The Usual Suspects (1995) খ্যাত অস্কার জয়ী রাইটার Christopher McQuarrie এর ইম্প্রেসিভ স্ক্রিনপ্লে…
মুভিটি নির্মিত হয়েছে জাপানীজ লেখক হিরোসি সাকুরাজাকা-এর উপন্যাস All You Need Is Kill অবলম্বনে… এবং ডিরেক্ট করেছেন Bourne Trilogy খ্যাত Doug Liman…
ডিরেকশন & স্ক্রিনপ্লে ঃ Doug Liman-এর কারুকাজ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই(যারা বর্ন সিরিজের মুভি দেখেছেন তারা আরো ভালো জানেন)… এই মুভিতেও ব্যাপক কারুকাজ দেখিয়েছেন… অডিয়েন্সকে কিভাবে মুগ্ধ করতে হয়, সে কৌশল তার জানা আছে… এবং আমি মনে করি তিনি তা পেরেছেন… শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাসপেন্স ক্রিয়েট করা সহজ ব্যাপার না… পরিচালনায় ৪/৫ তিনি প্রাপ্য…
মুভি কনসেপ্ট ইউনিক হলেও তা যথাযথ ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য দরকার ঐ রকম-ই স্ক্রিনপ্লে.. সেই রকম স্ক্রিনপ্লে-ই লিখেছেন ক্রিস্টোফার ম্যাকুয়ারি… এই মুভির আসল শক্তি-ই ছিলো স্ক্রিনপ্লে-ই ভেতর… মুভিটি ভালো লাগার ৫০% ক্রেডিট goes to স্ক্রিনপ্লে…
পারফরমেন্স ঃ প্রথম ১০ মিনিট পর্যন্ত টম ক্রুজ ছিলেন তার আগের কিছু মুভির ভেতরে… অর্থাৎ ট্রেলারে দেখা টম ক্রুজের দেখা পায়নি… কিন্তু ১০মিনিট পর যে অভিনয় কারিশমা দেখিয়েছে তা মনে রাখার মতন… টম ক্রুজের ক্যারেক্টারের জন্য প্রথমে ব্রাড পিটকে নেয়ার কথা ছিলো… অবলিভিয়ন মুভির কাজ শেষ করার পর এক সপ্তাহও রেস্ট নেন নি, এই মুভির কাজ শুরু করে দেন… Emily Blunt এর অভিনয় ভালো লেগেছে…
আহামরি ভিজুয়াল ইফেক্ট ছিলো না… smooth ইফেক্টের ব্যবহার খুব ভালো লেগেছে… একশন সিকুয়েন্সেগুলো ভালো ছিলো… aliens, weapons, explosion এর বালাই কম ছিলো… মুভির গতির সাথে রানিং টাইমের কম্বিনেশন কেমন জানি খাপ ছাড়া লেগেছে, আরো একটু বেশি হইলে ভালো হইতো… ফাইনাল কমবেট সিকুয়েন্স দেখে মনে হয়েছে তাড়াহুড়া করে শেষ হয়ে গেছে… “নায়ক মারলো ভিলেন মরলো” টাইপ হয়ে গেছে… আরো একটু জমানো আশা করেছিলাম…
এই মুভি যেই সেটে( Leavesden Studios) শুট করা হয়েছে, ঐ সেটে “হ্যারি পটার” সিরিজের মুভিও শুট করা হয়েছে, মুভির প্রায় শেষের সিকুয়েন্সে দেখা যায় Emily Blunt টম ক্রুজকে কিস করছেন যা মুভি স্ক্রিপ্টে ছিলো না এমন কি ডিরেক্টর নিজেও বলেননি Emily Blunt কে কিস করতে… পরে যখন তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কেনো তিনি কিস করেছেন, তিনি জানান সিনের সাথে ব্যাপারটি জরুরী ছিলো…
“স্পয়লার এলার্ট”…
প্রথম হাফ দেখে Source Code, Pacific Rim, triangle সহ আরো বেশ কিছু মুভির নাম মনে আসতে পারে, এইটা কোনো ব্যাপার না, সেকেন্ড হাফ দেখলে সবগুলো নাম ভুলে যাবেন…
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:১৯