আমাদের ক্লাসের একটা ঘটনা দিয়েই শুরু করি।
ক্লাসের বেশিরভাগ ছেলেমেয়ের ধারণা আমি সকালের ক্লাসে কখনই সময়মতো আসতে পারিনা। কথায় যে কিছুমাত্র সত্যতা নেই, তা নয়। প্রায় দিনই দেখা যায়, সকালের ক্লাসের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে আমি হাঁপাতে হাঁপাতে হাজির।
কি ঘটনা? স্যারের এ কোশ্চেনের জবাবে রাস্তায় জ্যাম, বাস এক্সিডেন্ট বা ‘পারিবারিক কাজ’ জাতীয় এক্সকিউজ যা মুখে আসে একটা বলে ফেলি। স্যারের চেহারা ভাবলেশহীন থাকলেও পেছনে ক্লাসভর্তি ছেলেমেয়ের মুখটিপে হাসা দেখে বুঝতে পারি, কথাগুলো মোটেও মার্কেট পায়না।
তো সেই আমিই যখন সেদিন সকালের ক্লাসে টাইমলি হাজির হলাম, অনেকের চোখ বিষ্ময়ে কপালে উঠলো। অনেকের বিষ্ময়ধ্বনি আর ছানাবড়া চোখকে উপেক্ষা করে ‘ভাবের সাথে’ সবার সামনের বেঞ্চে ব্যাগ রাখলাম। ক্লাসসুদ্ধু ছেলেমেয়ের দৃষ্টি তখন আমার দিকে। অনেকের মুখই প্রশ্ন করার জন্য হাঁ হয়ে ছিলো। অনেকে পশ্চিম আকাশে মুখ করে সূর্য খুঁজতে লেগে গেলো(সূর্য পশ্চিম দিকে উঠেছে কিনা দেখার জন্য। কি ফাজিল!)। যাই হোক , আমি হাত তুলে সবাইকে আশ্বস্ত করলাম। বললাম, তাড়াতাড়ি আসার পেছনে দৈব বা অলৌকিক কোন কারণ নেই। আমি একান্ত নিজের ইচ্ছায় এসেছি এবং আমি চাইলেই তা পারি। তবে আজ আমার একটি বিশেষ দিন এবং তা তোদের সাথে শেয়ার করার জন্যই আগে এলাম।
একজন ফস করে বলে বসলো, তোর জন্মদিন, তাই না? বললাম , লোকে যে তোকে গাধা বলে , এমনি এমনি বলে না। জন্মদিন হলে আমি কেক নিয়ে ঢুকতাম না?
“তাহলে কি .........কাউকে প্রপোজ টপোজ করেছিস নাকি?” আরেকজন বললো। বললাম, দ্যাখ, ডিসেন্ট একটা ছেলে হিসাবে যে ইমেজ আমার আছে, এক নিমিষে তা শেষ করে দেয়ার কোনো অধিকার তোর নেই।
চাকরি পেয়েছিস? বাতিল। লটারি জিতেছিস? বাতিল। বিয়ে করেছিস? বাতিল।
“তো কি?......... কি এমন রাজকার্যটা সেরে এসেছেন যে এত ভনিতা করতে হবে?” একজন বললো, অনেকটা রাগতঃস্বরেই।
বুঝলাম, ধৈর্যের বাঁধন যায় যায়। এখন না বললে কিল আর হিল একটাও মাটিতে পড়বেনা।
বললাম , শোন.........
(আজ এ পর্যন্তই)