বৃটেনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইসলামিক স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা বিস্ময়কর ফলাফল অর্জন করছে এবং এর হার প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তৌহিদুল ইসলাম গার্লস হাইস্কুলের অধ্যক্ষ হামিদ প্যাটেল মুসলিম নিউজকে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা বিস্ময়কর ফলাফল অর্জন করছে। যাদের মধ্যে বিরাট একটি অংশ রয়েছে যারা বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত। এরা খুবই খারাপ অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ব অতিক্রম করেছে। এদের বেশিরভাগই দরিদ্র পরিবারের সন্তান।
উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের ডারউইন শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলোর মধ্যে শিল্প শহর ব্লাকবার্ণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলো বিস্ময়কর ফলাফল অর্জনের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। ফলাফলে দেখা যায় ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ৫+ এ স্টার অর্জন করেছে। যার মধ্যে ৭৬ শতাংশ ইংরেজিতে স্নাতক শ্রেণীতে উন্নীত হয়েছেন। দেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফলাফলের দিক থেকে ইসলামিক স্কুলগুলোর স্থান অনেক উপরে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিসংখ্যানেও দেখা যায় তৌহিদুল ইসলাম গার্লস স্কুল তার চমৎকার ফলাফলের কারণে দেশের সবচেয়ে ভাল স্কুলের খ্যাতি অর্জন করেছে।
যে স্কুলের ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ৫-এ স্টার অর্জন করেছে। দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তৌহিদুল স্কুলের অবস্থান সর্বোচ্চে। যেখানে বেশিরভাগ সুবিধাবঞ্চিত। শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করে। যেখান থেকে ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছে। এ ধরনের অর্জন এবারই প্রথম নয় অতীতেও তারা অনেক উপাধী অর্জন করেছে। টাইমস এডুকেশনাল সাপ্লিমেন্ট কর্তৃক চলতি বছরের সেকেন্ডারি স্কুল অফ দি ইয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে স্কুলটি।
গত মে মাসে এক অনুসন্ধানের পর বিশেষ পুরস্কারের জন্য এ স্কুলটিকে তালিকাভুক্ত করা হয়। পরিদর্শনের পর স্কুলটির ভূয়সী প্রশংসা করে পরিদর্শক। তিনি বলেন, স্কুলের পরিবেশ এক কথায় ধারণাতীতভাবে উন্নত ও শিক্ষার মান ও পদ্ধতি খুবই চমৎকার। লন্ডনের তাইয়েবাহ গার্লস স্কুল ও হাকনি'র ২২টি স্কুলের মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে। ঐ স্কুলের শতভাগ শিক্ষার্থী ৫ প্লাস জিসিএসই অর্জন করেছে। ২০১১ সালের তুলনায় এর ফলাফল উন্নতির হার ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঐ ইসলামিক গার্লস স্কুলে এ ধরনের বিশেষ ফলাফল নতুন কিছু নয়। যদিও সহ-শিক্ষা চালু থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ওপরে রয়েছে। সহশিক্ষা চালু থাকা প্রতিষ্ঠান আল-খায়ের সেকেন্ডারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আয়শা চৌধুরী বলেন, আমি এ জন্য আনন্দিত যে ১১ বছর ধরে আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কঠোর পরিশ্রম করে একটি চমৎকার পুরস্কার লাভ করেছে এবং জিসিএসইতে বিশেষ ফলাফল অর্জন করেছে। তিনি বলেন, আমরা আল-খায়ের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই দীর্ঘ সংগ্রাম চালিয়ে যাই। আল খায়ের স্কুলটি চার্চ অব ইংল্যান্ডের অনুমোদন প্রাপ্ত। চৌধুরী বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে বায়োলজি, ক্যামেস্ট্রি এবং ফিজিক্সের মত চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলোও রয়েছে। এছাড়া ইংরেজি স্নাতক জিসিএসইতে পাঠদান করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত এখান থেকে যারা পড়ালেখা শেষ করে বেরিয়ে যাবেন তারা তুলনামূলক অনেকটা এগিয়ে থাকবেন।
বৃটেনে বর্তমানে মুসলিম জনসংখ্যার পরিমাণ ২৫ লাখেরও বেশি। মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেনের হিসেব মতে মুসলিম ছাত্রের সংখ্যা ৪ লাখেরও বেশি।