গত দুই দিনের লেখায় আমি স্বাধীণতা যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধে আমাদের স্বাধীনতার রুপকার মুজিবুর রহমানের ভুমিকা নিয়ে আলোচনা করেছি।
শেখ মুজিব সাহেব আসলে কোন পন্থি ছিলেন?
শেখ মুজিব সাহেব কি আসলে স্বাধীনতা চেয়েছিলেন না অন্যকিছু?
তবে উপরিউক্ত আলোচনা গুলো প্রয়োজন ছিল যেই জন্য সেটা হল সঠিক ইতিহাস জানা। তবে আজকের ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপৃর্ন। কার আসলে মুক্তিযুদ্ধা কারা রাজাকার , কারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আর কারা বিরোধী এই বিতর্ক এখন তুঙগে। যদিও ক্ষমতাশীন দল আওয়ামীলীগ ইতিমধ্যে এই ইস্যুকে পুজি করে সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় জোটকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে।
২৫ শে মার্চের পর সেই ভয়াল রাতের পর সকলেই দিশেহারা হয়ে পড়ে। শেখ মুজিবের গ্রেফতার হওয়ার পরে দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার মত আর কেউ রইল না। তখন আনসার, পুলিশ, সৈনিকরা কোন সমন্বয় ছাড়াই যে যার মত লড়তে লাগলেন। তাজউদ্দিন যখন দিল্লিতে স্বাধীন বাংলা সরকার গঠনে ব্যস্ত তখন আপন তাগিদেই বাংলাদেশের সেনা অফিসাররা মিলিত হলেন অআনুষ্ঠানিক বৈঠকে। সেখানে উপস্থিত ছিলন কর্নেল(অব ওসমানী. মেজর জিয়া, মেজর খালেদ, মেজর শফিউল্লাহ, লে: কর্নেল আব্দুর রব সহ আরো কয়েকজন।তারা সব ইউনিটের সমন্বয় করে মুক্তি ফৌজ গঠন করলেন এবং এর দায়িত্ব দেয়া হল ওসমানীকে।
সেই সময় আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব স্থানীয় লোকেরা দিল্লিতে বসে সরকার গঠনে ব্যস্ত ছিলেন আর বাকীরা নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আরাম আয়েশ করেছেন। এই প্রসংগে মেজর জলিলের লেখাটি নিম্নরুপ:
"" মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং শিবিরগুলো পাকিস্তানি বাহিনী থেকে বিদ্রোহ করা বাংলাদেশী ক্যাপ্টেন আর মেজর পদের অফিসার দিয়েই শুরু হয়। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আওয়ামী লীগের কোন নেতাই এই ব্যাপারে তাদের কোন ভুমিকা রাখতে পারেন নি। এমনকি পশ্চিম বাংলার ট্রেনিং শিবিরগুলোতেও আওয়ামী লিগ নেতাদের কোন ভুমিকা পাওয়া যায়না। তবে এর ব্যতিক্রমও কিছু ছিল। তবে এই সংখ্যা সিমিত। এই ব্যাপারে কাউকে প্রশ্ন করলে তারা বলতেন নেতারা ভযে দেশ ছেড়ে পালীযেছেন বলে কোন খোজ খবর নিতে পারন নাই। কিন্তু আসল ব্যাপার ছিল অন্য। ভুরি ভুরি প্রমান আছে যে আওয়ামী লিগের নেতারা কলকাতার অভিজাত এলাকার হোটেল আর রেস্টুরেন্টে জমজমাট আড্ডায় ব্যস্ত। একাত্তরের সেই গভীর বর্ষনরত দিন রাতে কলকাতার অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোতে গরম কফির কাপে চুমুক দিতে ব্যস্ত নেতারা হাটু কাদা পানিতে যুদ্ধরত বাংলাদেশী তরুনদের চেহারা দেখেছে কিনা একবারো আমার সন্দেহ হয়। আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে পার্কস্ট্রীটে হুইস্কি আর বিয়ার পানরত লীগ নেতাদের মন মুকুরে একবারো ভেসে উঠেছে কিনা সেই গুলিবিদ্ধ কাজলের ছবি যে কিনা মৃত্যুর পুর্ব পর্যন্ত চিৎকার করে বলে গেছে জয় বাংলা। আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে কোলকাতার বিশেষ এলাকায় যুবতী নারী সম্ভোগে অধীর কামাতুর ওই সব আওয়ামী লীগ নেতাদের মনো সরোবরে একবারো কি ভেসে উঠেছে সেই কিশোরী র মুখ যারা ধর্ষিত হয়েছিল পান্জাবী সেনাদের দারা।
তাদের এই সব সু কির্তি গুলো একটু বেশিই জেনে ফেলেছিলেন সাহিত্যিক জহির রায়হান। তিনি চিত্রায়িত করেছিলেন অনেক দর্লভ দৃশ্যের।বেজায় অপরাধ করেছিলেন জহির রায়হান । স্বাধীনতার সুচনা লগ্নেই এই বেশী কিছু জানার জণ্য প্রান দিতে হয়েছিল তাকে।
ভারতের মাটিতে অবস্থানকালে আওয়ামী লিগ নেতাদের চুরি, দর্নীতি, অবৈধ ব্যবসা, যৌন কেলেংকারী , বিভিন্ন রকমের ভোগ বিলাসে সচিত্র প্রতিবেদন ছিল সাহিত্যিক জহির রায়হানের কাছে। তাই তাকে ক্ষমা করতে পারে নি আওয়ামী লীগ।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ৩ নং আসামী মুজিবে অবস্থাো ছিল এই রকম। তেজোদিপ্ত যবক মুজিব ৮নং এবং ৯ নং সেক্টরে লড়াই করছে। প্রচন্ড সাহসী এবং বীর মুজিব ছীল শেখ মুজিবের খুবই প্রিয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাদের কুকীর্তি সম্পর্কে খুব বেশি জেনে ফেলেছিল স্টুয়ার্ড মুজিব। যার কারনে তাকে গুলিস্তান থেকে আর খুজে পাওয়া যায়নি। (সুত্র: অরক্ষিত স্বাধীনতা মানেই পরাধিনতা: মেজর এম এ জলীল, ৯ নং সেক্টর কমানডার।)
আমি পাঠক ব্লগারতের কাছেই প্রশ্ন রাখতে চাই। মেজর জলীল বাম রাজনীতির সাপোর্টার ছিলেন। তিনি তার বইয়ে যেই চিত্র তুলে ধরেছেন তা কি নির্দেশ করে? কে ছিল আসলে মুক্তু যুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি??