রাস্তায় একজন অটোওয়ালাকে দাঁড় করিয়ে আমরা অনেকেই পেছনের বা পছন্দের সিটগুলো খালি না থাকলে অন্য সিটগুলো খালি থাকা সত্যেও তাতে না চড়ে উনাকে চলে যেতে বলি। আমরা অনেকেই এমনটা করে থাকি, কিন্তু এটি মোটেও কোনো অপরাধমূলক কাজ নয়, বরং তা একজন ভোক্তার অধিকার; সুবিধা ও পছন্দমত সার্ভিস গ্রহণ করার স্বাধীনতা ভোক্তার রয়েছে। তবে ব্যাপারটিকে অনৈতিক বলা যেতে পারে। অনৈতিক আর অপরাধের মধ্যকার দ্বন্দ বুঝানোর জন্য এটি হয়তো খুব শক্তিশালী কোনো উদাহরণ নয় , I think, you got the idea.
নৈতিকতা, মূল্যবোধ এগুলো খুবই Subjective কিছু ব্যাপার। ভৌগলিক অবস্থান, ধর্ম, এবং সংস্কৃতি এর সাথে সাথে এগুলো পরিবর্তিত হয়। বাংলাদেশে জনসম্মুখে প্রেমিক প্রেমিকার আলিঙ্গন কে বাঁকা চোখে দেখা হয়, জনসম্মুখে চুমু খাওয়ার কথা কল্পনা করা যায়, আমাদের পরিচিত অনেক দেশেই এগুলো খুব স্বাভাবিক এবং সাধারণ কিছু ঘটনা। সুতরাং তারা এগুলোকে অনৈতিক ভাবছে না। অথচ বাংলাদেশে এগুলো অনৈতিক।
অপরাধমূলক কাজে বাধা দেয়ার অধিকার একজন নাগরিকের রয়েছে। বিষয়গুলো আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে অনৈতিক হলেও, সাংবিধানিকভাবে কোনোটিই কিন্তু অপরাধ নয়। সুতরাং কেউ যদি জনসম্মুখে তার প্রেমিকাকে চুমু খায়, আইনত তাদের বাধা দেওয়ার কোনো অধিকার আমাদের নেই। বরং বাধা দিতে গেলে সেটিই হবে বেয়াইনি!
দেশে জনসম্মুখে ধূমপান সম্ভবত দণ্ডনীয় অপরাধ। নারীর জন্য তা অনৈতিক এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। আবার, নির্দিষ্ট কোনো জাতী, গোত্র বা লিঙ্গকে ছোট করে এমন কিছু বলা বা সমর্থন দেয়া, অনুমতি ছাড়া কারো ভিডিও চিত্র ধারণ এবং প্রকাশ করা এবং তা করতে মানুষকে আহ্বান জানানো প্রত্যেকটিই অপরাধ। অপরাধমূলক কাজে বাধা দেয়া একজন নাগরিকের জাতীয় দ্বায়িত্ব। যারা একটি অনৈতিক কাজে বাধা দিতে গিয়ে এতোগুলো অপরাধ করে ফেললো, রাষ্ট্র ও তার নাগরিক কি তাদের এই অপরাধের সাজা ভোগ করার জন্য প্রস্তুত হতে বলবে না?
ছবি: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩২