সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না, যাব কি যাব না। আগে থেকে ঠিক করে রাখা সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে কেন জানি যেতে মন চাইছিল না। ঈদ-পূজার দীর্ঘ ছুটি বাসায় বসে বসে রসিয়ে রসিয়ে উদযাপন করব এমনই ছিল ইচ্ছা। কিন্তু দোটানার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ভ্রমণ বাংলাদেশের ১৫ জন বন্ধুর সাথে বেরিয়ে পড়লাম চর কুকরী-মুকরী’র উদ্দেশ্যে।
আমার এতদিন ধারণা ছিল ঈদে ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে যাওয়ার চাপ থাকে ঈদের আগে আর ঢাকায় ফেরার চাপ থাকে ঈদের পরে। কিন্তু এবার ভোলার উদ্দেশ্যে যাত্রায় আমার এই ধারণা ভুল প্রমানিত হল। ঈদের দিন রাত পর্যন্ত জানতাম আমাদের লঞ্চ ছাড়বে সন্ধ্যা সাতটায়। কিন্তু ঈদের পরদিন সকালবেলা বন্ধু মনা ফোন দিয়ে জানালো যে আমাদের লঞ্চ মানুষের ভিড়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। তাই লঞ্চ দুপুর তিনটায় ছেড়ে যাবে, আমরা অবশ্যই দুপুর দেড়টার মধ্যে যেন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে চলে আসি। মেজাজ গেল খারাপ হয়ে। ভেবেছিলাম ঈদের দুইটা দিন না হলেও কমপক্ষে ঈদের দ্বিতীয় দিন বিকেল পর্যন্ত শুয়ে-বসে কাটাব; কোথায় কি? দ্রুত ব্যাগ গোছানো শুরু করলাম। বার বার মনে হচ্ছিল বাদ দেই এবারের ট্যুর। দুপুর একটার দিকে ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বের হলাম; গন্তব্য “চর কুকরী-মুকরী”।
দুপুর দুইটার কিছু পরে লঞ্চে উঠলাম, প্রায় চার ঘণ্টা পরে ছাড়ল ভোলার উদ্দেশ্যে। আগে থেকে দুইটা ডাবল কেবিন এবং একটা সিঙ্গেল কেবিন রিজার্ভ থাকায় আমরা মানুষের স্রোত মাড়িয়ে কোন মতে সুড়ুৎ করে ঢুকে পড়লাম আমাদের বিশাল বিশাল কেবিন ত্রয়ে। নামে ডাবল হলেও সাইজে কিন্তু সেইরাম। ছয় ফিট বাই তিন ফিট। যাই হোক সারারাত কেবিনে বন্দী হয়ে আমরা ছুটে চললাম ভোলার উদ্দেশ্যে। বাইরে পূর্ণিমার দুই রাত আগের বিশাল চাঁদ বারবার হাতছানি দিয়ে ডাকছে, মনটা কেমন আকুপাকু করে ছাদের ডেকে গিয়ে মাঝ নদীতে চাঁদের এই অপার্থিব রূপ দেখতে, কিন্তু জানালা দিয়ে মাথা বের করেই দেখি ফ্লোর জুড়ে গাদাগাদি করে শুয়ে থাকা মানুষের সারি। নিমিষেই উবে যায় ছাদে যাওয়ার ইচ্ছা। মন খারাপ করে কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে গান শুনতে থাকি। তখনো কি জানতাম যে কি ভয়ঙ্কর সুন্দর পূর্ণিমা আমার জন্য অপেক্ষা করছে সাগরের বুকে।
ভোররাতে আমরা পৌঁছলাম ভোলা খেয়াঘাট। আকাশ একটু ফর্সা হতে আমরা আমাদের ব্যাগ এন্ড ব্যাগেজ নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি উকিলপাড়া বাস স্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে। খেয়াঘাট হতে জনপ্রতি ত্রিশ টাকা ভাড়ায় ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে আমরা চলে আসি উকিলপাড়া বাস স্ট্যান্ড। এখানে সকালের নাস্তা সেরে আমরা টিকেট কাটি চরফ্যাশনের ডাইরেক্ট বাসের। সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ বাস ছাড়লেও পথে আমরা আটকা পড়লাম। লালমোহন নামক স্থানে সেদিন ভোর বেলায় বাস-মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন মারা যায়। ফলে গ্রামবাসী সড়ক অবরোধ করে বেশ কয়েকটি বাস ভাংচুর করে। ফলে আমাদের বাস দুর্ঘটনাস্থলের কিছুটা আগেই থেমে যায়। আমরা প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে থেকে রিকশাযোগে অবরোধের জায়গাটুকু পার হয়ে একই কোম্পানির অপর পাশে অপেক্ষমান গাড়ীতে গিয়ে উঠলাম। বেলা সাড়ে এগারটার দিকে আমরা পৌঁছলাম চরফ্যাশন। এবার এখান হতে ম্যাক্সিজাতীয় হিউম্যান হলারে করে আমরা ছুটে চলি কচ্ছপিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে।
কচ্ছপিয়া ঘাটে দ্রুত দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা উঠে পড়ি “চর কুকরী-মুকরী”র উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ছোট্ট ইঞ্জিনচালিত নৌকোয়। চল্লিশ মিনিটের সমুদ্রের চ্যানেল দিয়ে জার্নি করে আমরা পৌঁছলাম “চর কুকরী-মুকরী”। পথে ফেলে গেলাম আরেকটি চর, যার স্থানীয় নাম “মাইনকার চর” যা আপনি গুগল আর্থে পাবেন “মনিকার চর” নামে। যাই হোক দুপুর একটার পরে আমরা পৌছাই “চর কুকরী-মুকরী”। সেখানে ঘাট হতে মিনিট দশেক হেঁটে পৌছাই কুকরী-মুকরী বাজারে। বাজারের পাশেই অবস্থিত উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ের তিনতলা ভবনে আমরা ডেরা গারি। ব্যাগ, তাবু, লাইফ জ্যাকেট ইত্যাদি সেখানে রেখে পাশের পুকুরে নেমে পড়ি জলকেলিতে। বিকেলে ঘুরতে বেড়াই “চর কুকরী-মুকরী” গ্রামটা। রাতে তাবু টানিয়ে চলে দল বেঁধে আড্ডাবাজি। কিন্তু বারবার আমার মনে হচ্ছিল কেন যে ছাই ঈদের আনন্দ মাটি করে বেড়াতে এলাম এই “চর কুকরী-মুকরী”। গ্রামের মাঝে হাঁটা আর পূর্ণিমা, এত বাংলাদেশের যে কোন গ্রামেই পাওয়া যাবে। রাতে আগে থেকে জানা আর গ্রামবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে আমরা পরের দিনের সারাদিনের ট্যুর প্ল্যান করে নেই। যা আমার আজীবন মনে রাখার মত একটি দিন হিসেবে হৃদয়ের মনিকোঠায় রয়ে যাবে।
পরদিন ভোরবেলা সবাই ঘুম থেকে উঠে তৈরি হয়ে নেই সারাদিনের জার্নির জন্য। সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে নাস্তা শেষ করে চলে যাই যে ঘাট দিয়ে আমরা “চর কুকরী-মুকরী”তে এসে নেমেছিলাম। কিন্তু বিধিবাম! ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া করে অপেক্ষা করতে থাকি প্রায় দুই ঘণ্টা। কারণ, নৌকা তখন কচ্ছপিয়া ঘাটে; যেখান থেকে আমরা রওনা হয়েছি। এই অবসরে অবশ্য আমরা সবাই ডাবের পানি পান করে নিলাম, যা ব্যাবস্থা করেছিল দুই ভ্রমণসাথী ওসমান ভাই আর বেলাল ভাই। পানির সাথে মিষ্টি নারিকেলের শাস, আহ! অবশেষে প্রায় বেলা এগারোটা নাগাদ আমরা ১৬ জন বেড়িয়ে পড়ি প্রথম গন্তব্য কালির চর আর সেখানকার নারিকেল বাগানের উদ্দেশ্যে। প্রায় ঘণ্টাখানেক সাগরের কোল ঘেঁষে ছুটে চলার পর আমরা পৌঁছলাম কালির চর আর তৎসংলগ্ন নারিকেল বাগানে। প্রথমেই যে শব্দটি মুখ দিয়ে বের হল তা হল “ওয়াও”। হাতে সময় কম থাকায় এখানকার বনে ঢুকতে পারি নাই; কিছুটা ঘুরে সংলগ্ন বীচে চলল ঝটপট ফটোসেশন।
হাঁটু পানি হেঁটে আবার ফিরে এলাম আমাদের নৌকায়; এবার আবার ছুটে চলা ঢল চর আর তার সংলগ্ন তারুয়া সিবীচ। ঘণ্টার উপরে ছুটে চলল আমাদের ছোট্ট ইঞ্চিন নৌকা। আবারো ভালোলাগার বিশাল ঝাঁপি; মন মাতানো প্রকৃতির অপরূপ রূপের সম্ভার। এখানেও হাঁটুর উপর পানি রেখে হেঁটে হেঁটে আমরা গেলাম এই চরে। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে ছবি তুলে নেমে এলাম সমুদ্রের পানিতে, ভেজালাম পদযুগল। এখান থেকে আমাদের শেষ গন্তব্য সোনার চর। যা সত্যিকারের সোনা হতে পারে আমাদের পর্যটন শিল্পের জন্য।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ইঞ্জিন নৌকা যোগে আরও দক্ষিণের দিকে এগিয়ে গিয়ে হঠাৎ চোখ আটকে গেল। একি! এ যে অসংখ্য সিনেমায় দেখা দৃশ্য। সমুদ্রের বুকে ছোট্ট একটা সবুজ ধীরে ধীরে যা বড় হতে হতে একসময় পরিনত হল এক সবুজ বৃক্ষ বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ভূখণ্ড। অপলক চেয়ে রই তোমার পানে নয়কো প্রেয়সী, চেয়ে রই প্রকৃতির ঐ রূপের সাগরে।
সোনার চরের সিবীচ সম্পর্কে বলে বা ছবি দিয়ে বুঝানো সম্ভব না। প্রায় আড়াই কিলোমিটার লম্বা বীচটি একা দাঁড়িয়ে রয়েছে শুধু আপনারই প্রতীক্ষায়। তার উপর তখন আকাশে ছিল শেষ বিকেলের মায়াময় সূর্য। এই চরে অনেকটা সময় কাটিয়ে আমরা যখন ফেরার জন্য নৌকায় উঠলাম তখন লাজুক সূর্য তার লালিমার রূপ লুকোতে ব্যাস্ত সাগরের বুকে। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে লাল কাঁকড়ারা বার বার মাথা বের করেই আবার ঢুকে পরে তার নিজের গর্তে। এর পরের রূপটুকু আমি লেখায় বা ছবিতে তুলে ধরতে পারব না, এটা বর্ণনা করা অসম্ভব। এটা শুধু চেয়ে দেখার আর উপভোগ করার বিষয়। আঁধার রাতের সাগরের বুকে আমরা কয়েকজনা ভ্রমণ পিয়াসী ছোট্ট ইঞ্জিন নৌকায় শুয়ে-বসে চেয়ে ছিলাম আকাশের পানে। কিন্তু কে ছিল সেই আকশের বুকে? সেখানে ছিল পূর্ণিমার বিশাল চাঁদখানি কেমন ঘোলাটে লাল আভা নিয়ে, সারাটা পথ সঙ্গী হয়ে এগিয়ে এসেছে “চর কুকরী-মুকরী”র আমাদের ডেরা পর্যন্ত। সাথে ছিল এর পরেও। আর এমন রোমান্টিক আবহে কার কণ্ঠে না এসে যায় প্রিয় সব রোমান্টিক গান? প্রায় আড়াই ঘণ্টার এই যাত্রাপথে সারাটা সময় ছিল আমাদের হেরে গলায় গাওয়া রোমান্টিক সব গান। প্রাণ ভরে উপভোগ করেছি সময়টুকু, কেননা এমন মুহূর্ত এ জীবনে দ্বিতীয়বার আসবে কিনা কে জানে!
রাত আটটার পরে আমরা ফিরে এলাম “চর কুকরী-মুকরী”। আমাদের দলনেতা রবিউল হাসান খান মনা আমাদের সঙ্গী হয় নাই কিছুটা অসুস্থতা আর কিছুটা আমাদের বারবিকিউ নাইট উপহার দেয়ার জন্য। তো ফিরে বাজারের ঘাটে নেমেই আমরা সাগর ভাই (স্থানীয় ছোট্ট খাবার হোটেলের মালিক) এর দোকানে ঢুকে খেয়ে নিলাম দুপুরের খাবার, মুরগীর গিলা কলিজি দিয়ে রাঁধা খিচুড়ি সাথে আমের আঁচার। আহ! মামা সেইরাম...
এরপর পূর্ণিমার রাতে আবার নেমে পড়লাম আমাদের ডেরা সংলগ্ন পুকুরে। যারা সাতার পারেনা তারা লাইফ জ্যাকেট পরে। সবাই মিলে পুকুরে ভেসে ভেসে দেখালাম পূর্ণিমার জোছনা। গোসল শেষে চলল বারবিকিউ নাইট, সাথে সুন্দর সুন্দর সব বাঙলা ফোঁক গান। মনা ভাইয়ের কল্যাণে মসলা দিয়ে মেয়নেট করে রাখা মুরগি নিয়ে আমরা বসে গেলাম আমাদের ডেরা উপজেলা পরিষদের ভবনের দোতলার খোলা ছাদে। উপরে পূর্ণিমার চাঁদ, একপাশে পুকুর আর আরেক পাশে রাতের আঁধারের বিস্তীর্ণ সবুজ ধান ক্ষেতের অবাক রূপ। এরই মাঝে চলে কয়লা গরম করে আগুন ধরানো, শিকে গাঁথা মুরগী ঝলসানো। ফার্মের মুরগী না পাওয়া যাওয়ায় দেশী মুরগী দিয়ে আমাদের বারবিকিউ করতে হয়। বারবিকিউ চিকেন সাথে সাগর ভাইএর তৈরি পরাটা আর ঘন ডাল। আর কি চাই, চেটেপুটে খাই। এরপর কিছুটা সময় সবার আজকের সারাদিনের ভ্রমণ নিয়ে অনুভূতি আদান-প্রদান সাথে খুনসুটি আর আড্ডা। রাতে তাবুতে ফিরে ক্লান্ত দেহ নিয়ে ঘুমের জগতে তলিয়ে গেলাম অদ্ভুত ভালো লাগা অনুভূতি নিয়ে। সকাল ঘুম থেকে উঠে শুনি দুই ভ্রমণ সাথী সারা রাত খোলা ছাদে শুয়ে শুয়ে আকাশ ভরা তারার জগতে বিচরণ করেছে। আর আমি কিনা ছিলাম ঘুমিয়ে। একটা মজা মিস হল। কি আর করা, সবাইতো আর সব কিছু পায় না।
পরদিন আবার একই পথে ভোলা ফিরে শেষ বিকেলের লঞ্চে ঢাকার পথ ধরলাম। লঞ্চ ছাড়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে শুরু হল বৃষ্টি। আকাশের ভয়াল মেঘমালার রূপ দেখে মুগ্ধ হলাম, একই সাথে হলাম ভীত। যাই হোক, ফেরার পথে সারা পথ ডেকে শুয়ে শুয়ে জোছনা বিলাস করতে করতে ফিরে এলাম প্রাণের শহর ঢাকায়। রেখে এলাম একরাশ আজীবন মনে রাখার মত স্মৃতি।
ইনফো সামারি
যাতায়াতঃ ঢাকার সদরঘাট থেকে ভোলার পাঁচ-ছয়টি লঞ্চ রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ঈদের মৌসুম ছাড়া প্রতিদিন দুটি লঞ্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়, একইভাবে ভোলা হতে দুটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। এই লঞ্চে চেপে ভোলা চলে আসেন, ভাড়া ২৫০-৩৫০ এর মধ্যে। এরপর ভোলা খেয়াঘাট লঞ্চ টার্মিনাল হতে জন প্রতি ৩০ টাকা ভাড়ায় ব্যাটারিচালিত রিকশায় চেপে চলে আসুন উকিলপাড়া বাস স্ট্যান্ড। উকিলপাড়া বাস স্ট্যান্ড হতে ডাইরেক্ট বাস রয়েছে চর ফ্যাশনের ভাড়া ১৩০ টাকা। চর ফ্যাশন থেকে হিউম্যান হলারে আপনাকে আসতে হবে কচ্ছপিয়া ঘাট। মানুষ কম হলে অটোরিকশা করে চলে আসতে পারেন। এতে হয়ত জনপ্রতি ভাড়া একটু বেশী পড়বে। হিউম্যান হলারে ১৪ জন যেতে পারবেন, ভাড়া ৬০০-৮০০ টাকা। কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে দিনে দুইবার ছোট্ট মোটর ভেহিকেল ট্রলার ছেড়ে যায় চর কুকরি-মুকরির উদ্দেশ্যে। জন প্রতি ভাড়া ৩০ টাকা। যতদূর জানতে পেরেছি দিনে দুবার বোট যাতায়াত করে। কচ্ছপিয়া ঘাটে পৌঁছে একটু খবর নিয়ে নিতে হবে, কেননা টইমিং
ভ্যারি করে। কুকরি-মুকরি হতে সকালবেলা একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে বের হয়ে পরেন। ভাড়া ৪০০০-৫০০০ টাকা নিবে। অবশ্যই এই নৌকার ইঞ্জিনের হর্স পাওয়ার ১৬ কিনা দেখে নেবেন, ৪ হর্স পাওয়ারেরও নৌকা আছে সেগুলো এভয়ড করুণ। আরও ভালো হয় মাছ ধরার ট্রলার নিতে পারলে, এতে সময় বাঁচবে, রিস্কও কম থাকে। তবে যাওয়ার আগে সমুদ্রের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে যাবেন।
রাতে থাকাঃ রাতে থাকার জন্য এখানে ভরসা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়, সাইক্লোন সেন্টার, দুটি এনজিওর অফিস দেখেছি। এছাড়া স্থানীয় লোকদের সাহায্য নিতে পারেন, সেক্ষেত্রে দল বড় হলে সমস্যা। দুচারজন হলে হয়ত ম্যানেজ করতে পাড়বেন। তবে আমার মতে দলে ১২-২০ এর মধ্যে থাকলে ভালো হবে।
খাবারঃ কুকরি-মুকরি বাজারে দু-তিনটা খাবারের হোটেল আছে। স্থানীয় হাতের রান্না। যে কেউ এখানে গিয়ে সাগরের হোটেলে খেতে পারেন, আমরা সেখানেই তিনদিন খেয়েছি। তার হাতের রাঁধা খিচুড়ির কথাতো আগেই বলেছি। পারলে বাজার হতে তাজা মাছ কিনে রাধতে দিন, দামে সস্তা সাতে টাটকা মাছ। এখানে ব্রয়লার মুরগী আর ডিম একটু অপ্রতুল ছিল, সবসময় কিনা তা জানতে পারি নাই, তবুও জানিয়ে রাখলাম। খাবার পানির জন্য চাপকল আছে, চাইলে মিনারেল ওয়াটার সাথে নিতে পারেন। ও হ্যাঁ, এখানকার বাজারের মিষ্টির দোকানের মিষ্টি চেখে দেখতে ভুলবেন না।
আপনি কি কি স্পট ভিজিট করতে চান তা লিস্ট করে নৌকার মাঝিকে জানিয়ে দিন, তারপর সে ভালো বলতে পারবে কোনটা আগে যাবেন, কোনটা পরে। কেননা সাগর পথে জোয়ার-ভাটার হিসেব করে চলতে হবে। আর হ্যাঁ, অবশ্যই সবার জন্য লাইফ জ্যাকেট নিয়ে নিবেন, কেননা সেইফটি ফার্স্ট।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:১৭