কথা হল, ইসলাম ট্রান্সজেন্ডার সাপোর্ট করে না। সমকামিতা ও সাপোর্ট করে না। কঠোরভাবে নিষেধ করা আছে।
ইসলামে হিজড়াদের ব্যাপারে কি বলে ?
তেমন কিছুই বলে না। কারন, বলার কিছুই নাই। ওরা আর দশজন মানুষের মত করে বাঁচে মূল ইসলামে। এমনকি ইমামতি করার অনুমতিটাও আছে। শুধু একটাই শর্ত পুরুষ হিজড়া যেন মেয়েদের পোশাক, আবার মেয়ে হিজড়া যেন পুরুষদের পোশাক না পড়ে। কারন এতে বভ্রান্তির সুযোগ আছে। কোন পুরুষ মেয়ে সেজে মহিলাদের অন্দরমহল পর্যন্ত চলে যেতে পারে। এমন আরও অনেক সমস্যা তৈরি হতে পারে।
আমরা সব কিছুতে বড় ইসলাম খুঁজি। আচ্ছা, হিজড়াদের নিয়ে আমাদের সমাজে এই যে বিশাল এক মানবিক শূন্যতা শত শত বছর ধরে। এখানে ইসলাম খুঁজি না কেন? ‘হিজড়া সম্প্রদায়’ !!! ইসলামে এমন কোন সম্প্রদায় থাকার কথা? মুসলিম বিশ্বে এর স্থান আছে? কোরআন হাদিসে কোথাও এমন কোন সম্প্রদায়ের উল্ল্যেখ পেয়েছেন? ইসলাম অনুযায়ী তাদের অধিকার, সম্মান স্থাপনের জন্য কখনো কোন মোল্লা, মুসলমান আওয়াজ তুলেছেন?
এই যে, গত কয়দিনের ভাইরাল বিষয় ‘ট্রান্সজেন্ডার’ নিয়ে সামাজিক মাধ্যম গুলোতে যে পরিমান বা ব্যাপ্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে আমাদের ইসলামী সংস্কৃতির আলোকে। সেখানে দায়সাড়া এক লাইনের একটা ডিসক্লেইমার হয়ত দু-একজন দিয়েছেন হিজড়াদের নিয়ে। গাঁ বাঁচানোর জন্য । এতটুকুই।
কিন্তু দেখেন, সপ্তম শ্রেণির ঐ চ্যাপ্টারটা ছিল আগাগোড়া ‘হিজড়াদের’ অধিকার, সম্মান, মানবিক, ও সচেতনতা মূলক। অথচ মূল আলচ্য বিষয় বাদ দিয়ে একদল বড্ড বেশি মুসলমানের দল ব্যাস্ত হয়ে পড়ল যোজন যোজন দূরের একটা বিষয় ‘সমকামিতা’ কে ইসলাম দিয়ে ধুয়ে দিয়ে খাঁটি মুসলমানের খাতায় নাম লিখাতে।
আরে, বড্ড বেশি মুসলমানের দল। হিজড়া সম্প্রদায় এদেশে কেন? ৮০/৯০/১০০ ভাগ মুসলমানের দেশে এমন সম্প্রদায় থাকে কি করে? এরা তো আমাদের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়ার কথা। আজ প্রশ্ন উঠছে ইসলাম বিরোধী ট্রান্সজেন্ডারা হিজড়া সম্প্রদায়ের আড়ালে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে। ইসলাম ও সমাজ ধ্বংস করবে। তাহলে আগের ভুল আগে ঠিক করা উচিত। হিজড়া সম্প্রদায়কে এবার তো মানুষ ভাবো, যে অন্যায় তাদের সাথে সমাজ ও বড্ড বেশি মুসলিমরা করেছে তার ক্ষতিপূরণ কর, ক্ষমা চাও। এদের মূল ধারায় সম্মানের সাথে (কোন সুযোগ নয়, সমাজ তার নিজের স্বার্থে ফিরিয়ে নিচ্ছে এটা স্বীকার করে।) ফিরিয়ে আনুন। ইসলামী অধিকার তাদের জন্য প্রতিষ্ঠা করুন। তাহলে সম্প্রদায়ের আড়ালে আরেক সম্প্রদায় তৈরি হবে না। যে সম্প্রদায় মাত্র গজাচ্ছে একে বাঁধা দিবেন ? দিন। তার আগে পাপ মোচনের আমল দরকার খুব বেশি। খাল খুড়ে রেখেছেন ? এবার সেই খাল কুমিরকে আশ্রয় দিবেই। সমাজ হিজড়াদের দূর দূর করেছে, মুসলমান চুপ করে দেখেছে, আল্লাহ সব দেখেছেন হিসাব রেখেছেন। আজ সমাজ ট্রান্সজেন্ডারের খপ্পরে পড়েছে, মুসলমান ও সমাজ বাঁচাতে উঠে পরে লেগেছে, হিজড়া সম্প্রদায় ট্রান্সজেন্ডারদের আড়াল করে সাহায্য করলে খুব বড় কোন অন্যায় কি হবে? বিচারক সব দেখছেন তার বিচারে ভুল নেই।
তারপরও, যাদের “আমার শরীরটা ছেলেদের মতো হলেও আমি মনে মনে একজন মেয়ে।“ এই লাইনে সমস্যা হয়। তাদের বলি, এটা স্বাভাবিক মনে হওয়া। আমাদের চার পাশে এমন অনেক ছেলে আছে যাদের চলন-বলন, ভাব-ভঙ্গি মেয়েদের মত, আবার মেয়েদের কিছু ব্যাপার ছেলেদের মত। তাদের মনের ভিতর এমন ‘মনে হওয়া’ ব্যাপারটা আসা স্বাভাবিক। এটা বয়সের সাথে সাথে কেটেও যায়। এখন কথা হল তারা ট্রান্সজেন্ডার হবে কি না? এটা নির্ভর করে তাদের, শিক্ষা, সাহস, মূল্যবোধ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপর। আমাদের সমাজ ব্যাবস্থা এমনই নিষ্ঠুর। হিজড়াদের সমাজ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে আলাদা সম্প্রদায় করে দিয়েছে, ধর্মীয় মূল্যবোধ সমাজের নিষ্ঠুরতার বিপক্ষে আওয়াজ করে না। সেখানে তারাও (ট্রান্সজেন্ডার) আলাদা সমাজ করার মৌন সম্মতি পায়।
আর হিজড়ারা ট্রান্সজেন্ডার হবে কি না এই প্রশ্নটাই অবান্তর। যে সমাজ, ধর্ম তাদের সরিয়ে রেখেছে। কোন অধিকার দিচ্ছে না। তারা কোন কারনে সে সমাজের কথা শুনবে? আর ধর্মীয় অনুশাসন ? তাদের কাছে ধর্মের আলো কেউ নিয়ে গেছে? আমরা সমাজের মানুষরাই তো পাই না (সত্যিকার অর্থে)।
অনেকেই এই বিষয়ে অবগত। কিন্তু চ্যাপ্টার পড়ার সুযোগ হয় নি। আপনাদের জন্য নিচে বইটির পিডিএফ লিংক দিয়ে দিলাম । তার আগে আরও দুটি কথা -
*** ‘ট্রান্সজেন্ডার’ যে শব্দটা নিয়ে এতো আলোচনা সেটা ছিল ২০২৩ সালের পাঠ্য বইয়ে। ২০২৪ সালে সেটা সংশোধন করে তৃতীয় লিঙ্গ (থার্ডজেন্ডার) লেখা হয়েছে। যারা ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে কপচায় তারা আসলে ভুল সংশোধন হওয়ার পর ও ২০২৪ সালে এসে জেনেশুনে পানি ঘোলা করছেন।
*** আমি মনে মনে একজন মেয়ে। আমি মেয়েদের মতো ……… নিয়ে আপত্তি তারা আর একটু পড়লেই পেয়ে যাবে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে ……… আমরা নারী বা পুরুষ নই, আমরা হলাম তৃতীয় লিঙ্গ (থার্ডজেন্ডার) (২০২৪ এর বইয়ে)। কিন্তু তারা এটা কখনো বলে না । কারন তখন আবার কপচানোর জায়গা কমে যায়।
জাতীয় শিক্ষাষাক্রম ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ
জাতীয় শিক্ষাষাক্রম ২০৪ শিক্ষাবর্ষ
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৮