গুলাবো, সিতাবো ভারতের উত্তর প্রদেশের ঐতিহ্যবাহী দুটি পাপেট চরিত্র। সিতাবো যেখানে পরিশ্রমী ও উদ্যমী সেখানে তার সতীন গুলাবো এর ঠিক বিপরীত। পাপেট শোতে লোকগীতির মাধ্যমে সূক্ষ্ম হাস্যরসের ছলে সমাজের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরা হত ।
জুহি চতুর্বেদী এমনই ছোট ছোট হাস্যরস তৈরি করে মানুষের কিছু অন্ধকার অংশ তুলে ধরে গল্প ফেঁদেছেন। আর সুজিত সিরকার সেটা পরিচালনা করেছেন। পিকু, ভিকি ডোনার ভালো লেগেছে? তবে গুলাবো সিতাবো দেখে নিতে পারেন।
পিকুর অমিতাভ যদি শাহেনশাহ’র থেকে ভালো হয় তবে গুলাবো সিতাবো’র অমিতাভ খারাপ লাগবে না।
‘ফাতেমা মহল’ শত বছরের পুরনো বাড়ির মালেকিন জীবনের শেষ দিনগুলো গুনছেন। স্বামী মির্জা, ঘর জামাই, টাকার কাঙাল, সেই বাড়ির দেখভাল করেন। অবসরে, সুযোগে ছিঁচকে চুরির শৌখিন তিনি। বাড়িতে আছেন আরও কিছু পুরনো ভাড়াটিয়া। বাঙ্কে ও তার পরিবার এমনই একটি পরিবার। মির্জা আর বাঙ্কের সম্পর্ক খারাপ। মির্জা চায় না বাঙ্কে ভাড়া ফাঁকি দিয়ে দিয়ে এখানে থাকুক। বাঙ্কের কথা এতো বছর ভাড়া দিয়ে এখানে থাকেছেন তাই তার একটা অধিকার আছে। তাছাড়া মির্জা কে? যে তাকে তাড়াবে? গল্প এগিয়ে চলবে। পুরনো বাড়িটা কুক্ষিগত করতে মাঠে নামে সমাজের ধূর্তরা । মূল থেকে ছিন্ন হওয়ার আগে শেষ লড়াইটা হোক না নীতিহীন, বিবেক বর্জিত। অধিকার, অনাধিকারের দ্বন্দ্বে।
এই অসম্ভব বাস্তব কাহিনী এগিয়ে গিয়ে যেতে যেতে আপনাকে আটকে রাখবে সিনেমায়, ছোট ছোট সব পাঞ্চ (ডায়লগ)। আমিতাভ, আয়ুষ্মান খুরানা ছাড়াও বিজয় রাজ, বিজেন্দ্র কালা রয়েছেন এখানে। এই দুটো লোক কাজ করেছেন কিন্তু মনে ধরেনি এমন কখনো হয়েছে কি ? বিজয় রাজতো সেই অভিনেতা, যার কাজ মনে থাকবে হয়ত সিনেমার নাম, মূল নায়ক, গান সব ভুলে যাবেন। মনে আছে কাউয়া বিরিয়ানি'র কথা?
এরই মাঝে দেখে নিবেন খুব সাধারন কিছু মানুষের দারিদ্রতা, লোভ, সহ অন্ধকার আরো কিছু বৈশিষ্ট । সমাজে যেগুলোর অস্তিত্ব অস্বীকার করতে পারবেন না। সময় করে দেখে নিতে পারেন সিনেমাটি। এমন সিনেমা ২/৪ বছরে একটা আসে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৩৯