আমার ছোট বাবার বয়স আজ ৩ বছর ৩ মাস ১৮ দিন। এই এত গুলোর দিনের আর্ধেকটা সময়ও ওর সাথে থাকার সৌভাগ্য আমার হয়নি। আমার জীবনের সব কিছুই যেন আমার নিয়ন্ত্রন থেকে বহু দূরে। হয়তো বেশীদিন এই পৃথিবীর আলো বাতাস দেখতে পাব না। হয়ত আর কখনোই আমার বাবার সব কিছু ঘিরে আমি থাকব না। এই পৃথিবীতে আমি ওর চাইতে আপন, ওর চাইতে ভালবাসিনী। ভাবতে ভালই লাগছে নিজের প্রতিনিধি ভালবাসা আমাকে শেখাতে পেরেছে। ও যখন আমার কাছে থাকে তখন পৃথিবীটা যেন কত সুন্দর। ও দূরে গেলেই অদ্ভূত এক বিষন্নতায় বুকটা ভরে ওঠে। আমার বাবাটা যখন আমার মত বয়স হবে তখন কি আমাকে মূল্য দিবে নাকি অন্য আর সব সম্পর্কের মত আমাকে মূল্যহীন এক অচল পয়সার মত ফেলে দেবে। আমার বাবাটা যখন আমাকে বাবা বলে ডাক দেয় বুকটা ভরে উঠে অজানা এক গর্বে। বাবা আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি। ফিরে এসো বাবা, তোমার বাবার কাছে।
সম্পর্ক অদ্ভূত এক মায়াজাল। অনেক আশা নিয়ে এই সমাজে প্রস্তুত এক যোদ্ধা হয়ে একজন সহযোদ্ধা বেছে নিয়েছিলাম। প্রথম প্রথম সান্নিধ্য অদ্ভূত ভাল লাগত। এ জন্য কিছু বোকামি করে ফেলেছিলাম, তাই সে আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাকে সরিয়ে নিজেই যুদ্ধক্ষেত্রের সমরাধিনায়ক হয়ে গেল। আমার ভাল লাগা, মন্দ লাগাতে তার কোন কিছুই আসতে যেত না। জানি সবাই হাসবে, তবু বলি স্ত্রীকে আমি ভয় পাই, এই জন্য যে সে সুযোগ পেলেই তার বাবার বাড়ীতে গিয়ে উঠবে, আর আমি আমার ছোট বাবাকে কাছ থেকে দেখার সুখ থেকে বঞ্চিত হব। সব কিছুতো আমার হাতে না। এই মেয়েরা কি মনে করে তার সব কিছু তার বাবার বাড়ীর মত সব জায়গায় পাবে। আজ তার মা তার জন্য খাটছে। তাকেও তো সেই ভাবে মায়ের মত সব মানিয়ে নিতে হবে। বাড়ীতে কাজের লোক কি আমি চাইলেই চলে আসবে। সারাদিন যারা একবাসাতে কাজ করে, মানে বান্ধা কাজের লোক এই সময়ে পাওয়া কি এতই সোজা। এই অজুহাতে বাপের বাড়ি চলে যেতে হবে। এমন কোন স্বামী স্ত্রী আছে যে তাদের মধ্যে জগড়া লাগে না। লাগলেই, বাবা মায়ের কাছে বিচার দিয়ে স্বামীকে ছোট করাটা কেমন। আর সেই বাবা মাই বা কেমন অপর পক্ষকে কোন সুযোগ না দিয়েই, সাথে সাথে নিজের মেয়ে জামাইকে ছোট করতে হবে। আর আমার মার কথা কি বলব, তিনি তো এই মেয়েকে আপন করে নিতে চান না। ফলাফল আমার বাবা আমার থেকে দূরে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:০১